নির্বাচনী মাঠ সাজাতে আ.লীগ নেতাদের সফর শুরু
কয়েকদিন আগেই দলের প্রতিটি স্তরে সাংগঠনিক তথ্য নেয়ার জন্য কেন্দ্র থেকে সারা দেশে শীর্ষ নেতাদের সফর করার নির্দেশ দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। এই সফরে দলটির তৃণমূলের প্রকৃত সাংগঠনিক চিত্র জানতে চেষ্টা করবেন ঢাকা কেন্দ্রীয় নেতারা। এসময়ে তৃণমূলে অভ্যন্তরীণ কোন্দল মেটানো, সমঝোতা, ভুল বুঝাবুঝির অবসান ও সরকারের ইমেজ প্রচারের দিক-নির্দেশনা দিবেন নেতারা। দলটির বিভিন্ন পর্যায়ের সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সূত্র জানিয়েছে, এই সফরে তৃণমূলের কোনো সমস্যা কেন্দ্রীয় নেতারা সমাধান না করতে পারলে, তা ঢাকায় ফিরে কেন্দ্রকে জানাবেন। প্রয়োজনে দলীয় প্রধান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জানাবেন। সেক্ষেত্রে তিনিই সিদ্ধান্ত নিবেন। এজন্য আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে জেলা ভাগ করে দেয়া হয়েছে নেতাদের। দলীয় প্রধানের বিশেষ নির্দেশনা নিয়ে তারা শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি) থেকেই নেমে পড়বেন।
ইতিমধ্যে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা বিভিন্ন জেলার সঙ্গে যোগাযোগ করে তারিখ নির্ধারণ করে ফেলেছেন।
কেন্দ্রীয় নেতাদের সমন্বয়ে গঠিত ১৫টি টিম ৬৪ জেলায় সফর শুরু করবেন। সূত্র জানিয়েছে, দলীয় প্রধানের ‘বিশেষ নির্দেশনা’ তৃণমূল নেতাকর্মীদের কাছে পৌঁছে দেবেন সফরকারী টিম। এ টিম তৃণমূলে সরকারের উন্নয়ন বার্তা পৌঁছে দেবেন। জনগণের কাছে কিভাবে তা উপস্থাপন করা হবে, সেই বিষয়ে স্পষ্ট নির্দেশনা দিয়ে আসবেন তারা।
এই বছরের শেষেই হতে পারে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন। ওই সময়ে নির্বাচনী প্রচারে ব্যস্ত থাকবে সবাই। এর আগেই দলকে সাজিয়ে নিতেই এই সফর। নির্বাচনকে সামনে রেখে দলকে সুসংগঠিত করাই হবে এ সফরের মূল উদ্দেশ্যে।
গত নির্বাচনের চেয়ে আগামী নির্বাচনী পরিবেশ অনেকটাই চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তৃণমূলে এমন প্রচারণাও চলছে, দল হারলে ভয়ঙ্কর পরিবেশ তৈরি হবে। এজন্য কোনো নেতা-কর্মী যেনো ভয় না পান, সে ব্যাপারেও নির্দেশনা দিবেন কেন্দ্রীয় নেতারা।
দলের একাধিক নেতা জানিয়েছেন, সফরের সময় সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরার পাশাপাশি বিএনপি জোটের নেতিবাচক দিক তুলে ধরবেন কেন্দ্রীয় নেতারা। একই সঙ্গে তৃণমূল নেতাকর্মীদের বিভিন্ন সমস্যা শোনা এবং তা সমাধানে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবেন কেন্দ্রীয় নেতারা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে দলের বেশ কয়েকজন নেতা জানান, আগামী নির্বাচনে জয়ী হতে পারেন এমন প্রার্থীদের বিষয়ে সফরকারী টিমকে খোঁজ-খবর নিতে বলেছেন দলীয় প্রধান। একই সঙ্গে বর্তমান কোন কোন সংসদ সদস্যের সঙ্গে তৃণমূল নেতাকর্মীদের দূরত্ব রয়েছে, তাও খুঁজে বের করতে বলেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি।
নির্বাচনে জয়ী হতে পারে এমন প্রার্থীদের কারা নানাভাবে হয়রানির চেষ্টা করছে, কোথায় কোথায় নেতাকর্মীদের মাঝে বিরোধ রয়েছে যা আগামী নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী পরাজয়ের কারণ হতে পারে-এমন বেশ কিছু বিষয় খুঁজে বের করার নির্দেশনা রয়েছে সফরকারী কেন্দ্রীয় নেতাদের প্রতি।
আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্যদের সমন্বয়ে গঠিত এ টিমসমূহ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত সংগঠনিক জেলা, মহানগর, উপজেলা, থানা পর্যায়ে সফরে যাবেন এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগ আয়োজিত বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নেবেন।
গঠিত টিমসমূহের সমন্বয়কারী দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতারা স্থানীয় পর্যায়ের আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে সফরের দিনক্ষণ ও কর্মসূচি নির্ধারণ করবেন। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ নেতাদের দেশব্যাপী এ সাংগঠনিক সফরকে সফল করার লক্ষ্যে সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন