নির্বাচনে নওয়াজের দলকে চাপে রাখছে সেনাবাহিনী
২৫ জুলাই, পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনের মাত্র কয়েক সপ্তাহ বাকি। নির্বাচনকে সামনে রেখে চলছে আজীবনের জন্য অযোগ্য ঘোষিত সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের পক্ষে-বিপক্ষে আন্দোলন।
এ নির্বাচনে এরই মধ্যে হস্তক্ষেপের অভিযোগ উঠেছে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে। ভোটের মাঠে নওয়াজ শরিফের দল পিএমএল-এনকে চাপে রাখার কৌশল নিয়েছে সেনাবাহিনী। এছাড়া সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে কঠোরভাবে গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে।
‘ভাড়াটে বা পাতি’ নেতাদের দিয়ে পাকিস্তান শাসনের পরিকল্পনা রয়েছে সেনাবাহিনীর। বিবিসির সোমবারের এক প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে। নির্বাচনের আগে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও অবাধ সাংবাদিকতাকে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী। এর অংশ হিসেবে চাপে পড়েছে দেশটির সবচেয়ে পুরনো ও স্বনামধন্য পত্রিকা ডন। পত্রিকাটির সরবরাহ আটকে দেয়া হয়েছে দেশের বহু স্থানে।
সেনাবাহিনীর রিয়েল এস্টেট কোম্পানি ডিফেন্স হাউজিং অথরিটি (ডিএইচএ) নিয়ন্ত্রিত বিশাল এলাকাগুলোয় বন্ধ রয়েছে পত্রিকাটির সার্কুলেশন। এছাড়া বেসামরিক জনগণের বসবাস আছে এমন সেনাঘাঁটি এলাকায়ও ডন পত্রিকার প্রবেশ নিষেধ। শুধু ডন এ পরিস্থিতিতে নেই। মার্চে পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় টিভি চ্যানেল জিও সেনা নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোয় ব্যাপকভাবে ক্যাবল অপারেটরদের ব্লকের শিকার হয়।
দুটো সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে এই আচরণ নওয়াজ শরীফ ও শক্তিশালী সেনাবাহিনীর মধ্যে বর্ধিষ্ণু স্নায়ুযুদ্ধকেই জাগিয়ে তুলছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার সমালোচনা করে নওয়াজ শরিফের দেয়া বক্তব্য প্রচারের শাস্তি হিসেবেই সেনাবাহিনী এ কাজটি করছে। পাকিস্তানি সেনাবাহিনী তার ব্যবসা সাম্রাজ্য দু’দিক থেকে আক্রমণের শিকার হতে দেখে গণমাধ্যমকে কড়াকড়িভাবে নিয়ন্ত্রণের সব চেষ্টা চালাচ্ছে।
একদিকে আজীবনের জন্য অযোগ্য ঘোষণার পর থেকে নওয়াজ শরিফ অনেক বেশি বিদ্রোহী হয়ে উঠেছেন। দুর্নীতির অভিযোগ সত্ত্বেও তার জনপ্রিয়তা কমার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না, যেটা সেনাবাহিনীর অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল। নওয়াজকে থামানো না গেলে সামনের নির্বাচন অংশ নিয়ে আবার তিনি ক্ষমতায় আসতে পারেন- এমন ভাবনা অস্বাভাবিক নয়। মূলত নিজেদের ব্যবসায় সাম্রাজ্য সুরক্ষার জন্য নওয়াজের দলকে আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না দেশটির সেনাবাহিনী। আর এ কারণেই তেহরিক-ই-ইনসাফ প্রধান ইমরান খানের মতো ভাড়াটে বা পাতি নেতাদের ক্ষমতায় এনে পাকিস্তান শাসন তাদের লক্ষ্য।
এদিকে সোমবার পাকিস্তানের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সাবেক প্রধান বিচারপতি নাসিরুল মুল্কের নাম ঘোষণা করেন বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী শাহিদ খাকান আব্বাসি। প্রধানমন্ত্রী শাহিদ খাকান আব্বাসির নেতৃত্বাধীন সরকারের মেয়াদ শেষ হবে আগামী ৩১ মে। একই দিন শেষ হবে জাতীয় পার্লামেন্টের মেয়াদও। মেয়াদ শেষ হলেই ক্ষমতা চলে যাবে অন্তর্বর্তী সরকারের হাতে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন