মানুষের কল্যাণই সর্বাগ্রে
নির্বাচন কমিশনের পক্ষে যে ক’টি আসনে ইভিএম সম্ভব, মেনে নেব : সম্প্রচার মন্ত্রী
মন্দাপীড়িত বিশ্বে মানুষের কল্যাণই সর্বাগ্রে এবং সে কারণে ইভিএম প্রকল্পে ১ মিলিয়ন ডলার ব্যয় না করে নির্বাচন কমিশনের পক্ষে যতগুলো আসনে ইভিএম করা সম্ভব, আমরা সেটা মেনে নেবো’ বলেছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহ্মুদ।
রাজশাহীতে রোববার আওয়ামীলীগ সভাপতি শেখ হাসিনার জনসভার প্রস্তুতি উপলক্ষে সেখানে মহানগর আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে শনিবার (২৮ জানুয়ারী) দুপুরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ইভিএম নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।
ড. হাছান বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন ডিজিটাল হয়েছে। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রযুক্তির সাথে তাল মিলিয়ে চলছি। আমরা অবশ্যই চাই ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন-ইভিএমের যে আধুনিক প্রযুক্তি এখন বিশ্বে ব্যবহার হয়, যেখানে কারচুপি বা অন্য কোনো সুযোগ নেই, সেটি ব্যবহার করতে এবং দেশে খালেদা জিয়ার সময় যে শ্লোগান ছিল ‘দশটা হোন্ডা, বিশটা গুন্ডা, নির্বাচন ঠান্ডা’, এগুলো বন্ধ করার জন্য আমরা ইভিএম চেয়েছি।’
‘নির্বাচন কমিশন ইভিএম পদ্ধতির জন্য পৌনে নয় হাজার কোটি টাকা অর্থাৎ প্রায় এক মিলিয়ন ডলারের একটি প্রকল্প প্রস্তাব করেছে, যেহেতু ইভিএমগুলো কিনতে হবে, কিন্তু এই বিশ্বমন্দা অর্থনীতির প্রেক্ষাপটে এই প্রকল্প পাশ করে ইভিএম কেনা সমীচীন নয় কারণ এই সময়ে আমাদের কাছে মানুষের অন্যান্য কল্যাণ অগ্রাধিকার’ উল্লেখ করেন তিনি।
তাই আমরা চাইলেও বাস্তবতার প্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশন যদি সব আসনে ইভিএমে ভোট করতে না পারে, যে কয়টি আসনে করতে পারুক, আমরা সেটা মেনে নেবো’ বলেন হাছান। জিততে পারবে না জেনেই নির্বাচন নিয়ে বিএনপির তালবাহানা।
নির্বাচনকালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে বিএনপি অনড় -এ প্রশ্নে মন্ত্রী হাছান বলেন, ‘বিশ্বের অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশ যেমন ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কন্টিনেন্টাল ইউরোপের দেশগুলোর মতোই আমাদের দেশে সংবিধান অনুযায়ী বর্তমান সরকার দেশ পরিচালনার দায়িত্বে থাকা অবস্থায় স্বাধীন নির্বাচন কমিশনের অধীনে জাতীয় নির্বাচন হবে। জিততে পারবে না জেনেই বিএনপি নির্বাচন নিয়ে তালবাহানা করে।’
উদাহরণ দিয়ে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন ‘বিএনপি ডান-বাম-অতি ডান-অতি বাম সবদলকে সাথে নিয়ে ২০০৮ সালের নির্বাচন ও তারপর উপনির্বাচন মিলে ত্রিশটির মতো আসন পেয়েছিল। ২০১৪ সালে নির্বাচন ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ব্যাহত করতে বিএনপি পাঁচশ’র বেশি ভোটকেন্দ্র স্কুল ও সেখানকার শিক্ষার্থীদের বইখাতা পুড়িয়ে দিয়েছে, কয়েকজন নির্বাচন কর্মকর্তাকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। ২০১৮ সালের নির্বাচনেও সংশয়ে থেকে শেষ পর্যন্ত সবরকম জোট করে ছয়টি আসন পেয়েছে।’
‘সহজেই বোঝা যায়, নির্বাচনে জেতার কোনো আশা তাদের নেই আর সে কারণেই তাদের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অলীক স্বপ্ন, এতো তালবাহানা’ বলেন ড. হাছান।
বিএনপি নেতাদের ‘রাজশাহীতে আওয়ামী লীগের জনসভায় তেমন লোক হবে না’ এমন মন্তব্যের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘যেসব নেতারা রাজশাহীতে লোক হবে না বলছেন, তাদের এসে দেখে যাওয়ার আমন্ত্রণ জানাচ্ছি, তারা চাইলে প্রয়োজনে হেলিকপ্টার দিয়ে তাদের আনার ব্যবস্থা করা হবে।’
রোববারের জনসভায় ১৪ দলের নেতারা যোগ দিতে পারবেন কি না এ প্রশ্নে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘জনসভাটি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের, ১৪ দলীয় জোটের নয়। তবে আমাদের জোটের শরীকরা, তারা আমন্ত্রিত, তারা এলে আমরা খুশি হবো।’
আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের মধ্যে প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রাজশাহী সিটি মেয়র এএইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন, সংসদ সদস্য মো: আয়েন উদ্দিন, দলের কেন্দ্রীয় সদস্য বেগম আকতার জাহান, রাজশাহী মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার, জেলা শাখার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অনিল সরকার, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওয়াদুদ দারা প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন