নিলে নেন, না নিলে না নেন
পাবনার ঈশ্বরদীতে বেশ কিছু দিন ধরে সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে ভোজ্যতেল। কিন্তু কিছু অসাধু ব্যবসায়ী কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে ইচ্ছেমতো দামে সয়াবিন ও পাম অয়েল বিক্রি করছে। সরকারের বিভিন্ন সংস্থা অভিযান চালিয়েও ভোজ্যতেলের বাজার নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছে না। ব্যবসায়ীরা বলছেন- ‘যে দামে কিনেন, সেভাবেই বিক্রি করেন; একদাম: নিলে নেন, না নিলে না নেন।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রূপচাঁদা, পুষ্টি, তীর, বসুন্ধরা, ফ্রেশসহ অন্যান্য ব্রান্ডের বোতলজাত সয়াবিন তেলের সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছেন পরিবেশকেরা। ফলে বাজারে তেলের কৃত্রিম সংকট দেখা দেয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়াও সয়াবিন তেলের বোতলের গায়ের মূল্য যা লেখা আছে সেই দামেই ডিলারদের কাছে থেকে তেল কিনতে হচ্ছে এমন অভিযোগ ব্যবসায়ীদের। এ ক্ষেত্রে কোনো কমিশন না পাওয়ার কথা জানান ব্যবসায়ীরা। ফলে তারা বাধ্য হয়ে অতিরিক্ত দামে তেল বিক্রি করছেন।
সরেজমিনে ঈশ্বরদী বাজারে গিয়ে দেখা যায়, প্রতি ৫ লিটার সয়াবিন তেলের বোতলের গায়ে লেখা মূল্য ৭৯৫ টাকা থাকলেও তা ৮১০ টাকা থেকে ৮৩০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও প্রতি কেজি খোলা সয়াবিন তেল ১৭০ টাকায় বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। অতিরিক্ত দাম রাখায় দোকানীদের সঙ্গে ক্রেতাদের বাগবিতন্ডায় জড়াতেও দেখা গেছে।
সোহেল রানা, মামুন, ফিরোজ নামের ক্রেতারা জানান, ফ্রেশ ব্রান্ডের এক লিটার সয়াবিন তেলের বোতল কিনতে হলো ১৮০ টাকায় অথচ গায়ের মূল্য ১৬৫ টাকা।
ঈশ্বরদী বাজারে পাইকারী ভোজ্যতেল বিক্রেতা নাম প্রকাশ না করা শর্তে বলেন, আমরা পরিবেশকদের থেকে ভোজ্যতেল কিনে বিক্রি করি। বলা হয়- ‘বিশ্ববাজারে তেলের দাম বেশি, এর প্রভাবে বাংলাদেশে দাম বাড়ছে।’ কিন্তু এখন পর্যাপ্ত তেলের মজুদ আছে। আমরা যেভাবে কিনি, সেভাবেই বিক্রি করি। ক্রেতাদের সাথে কথা না বাড়িয়ে বলি, ‘একদাম: নিলে নেন, না নিলে না নেন।’ যার প্রয়োজন কিনছে, যার প্রয়োজন নেই সে চলে যাচ্ছে।
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পবনা জেলার ভোজ্যতেল বিপণনকারী একটি কোম্পানীর বিক্রয়কর্মী বলেছেন, বিশ্ববাজারে সয়াবিন ও পাম অয়েলের দাম বেড়েছে। তাই বিশ্ববাজারের দামের সঙ্গে মিলিয়ে দেশে যদি যৌক্তিক দাম নির্ধারণ করা না হয়, তাহলে সরবরাহে ঘাটতি তৈরি হতে পারে।
এ ব্যাপারে ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার পিএম ইমরুল কায়েসের বক্তব্য জানতে তার মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর পাবনার সহকারী পরিচালক জহিরুল ইসলাম বলেন, সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে অতিরিক্ত দামে সয়াবিন, পাম অয়েল বিক্রি ও মূল্যতালিকা প্রদর্শন না করাদের জরিমানা করা হচ্ছে। পাশাপাশি অতিরিক্ত দাম রাখায় তাৎক্ষণিক ক্রেতাদের ফেরতের ব্যবস্থা করা হয়। পবিত্র মাহে রমজান মাস সামনে রেখে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের বাজার মূল্য নিয়ন্ত্রণে এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন