নীরবতা ভেঙে ক্ষমা চাইলেন জাকারবার্গ
ফেসবুক ব্যবহারকারীদের তথ্য বেহাত হয়েছে শুনেও চুপ ছিলেন মার্ক জাকারবার্গ। চারদিক থেকে জাকারবার্গের সমালোচনা হচ্ছিল। অনেকেই প্রশ্ন তুলছিলেন—চুপ কেন জাকারবার্গ? অবশেষে নীরবতা ভেঙেছেন তিনি। ভুল স্বীকার করেছেন। মেনেই নিয়েছেন যে রাজনৈতিক পরামর্শক এক প্রতিষ্ঠানের কাছে কোটি কোটি ফেসবুক ব্যবহারকারীর তথ্য চলে গেছে। আর সবকিছুর জন্য ক্ষমা চেয়েছেন তিনি।
এক বিবৃতিতে জাকারবার্গ বলেছেন, ‘বিশ্বাস ভঙ্গ’ করার ঘটনা ঘটেছে।
কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা নামের একটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এক রাজনৈতিক গ্রাহকের পক্ষে অনৈতিকভাবে ফেসবুক ব্যবহারকারীর তথ্য ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগ উঠেছে, কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা নামের একটি প্রতিষ্ঠানের অ্যাপ ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছিল ফেসবুক। ওই অ্যাপের মাধ্যমেই কোটি কোটি ফেসবুক ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করে কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা। সেই তথ্য পরে ব্যবহার করা হয় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারের কাজে। এ কাজের সঙ্গে জড়িত এক অধ্যাপক সম্প্রতি মুখ খোলায় প্রকাশ্যে এসেছে সবকিছু। এখন পুরো বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) বিভিন্ন দেশের রাজনীতিবিদেরা।
গত সোমবার ফেসবুকের তথ্য বেহাত হওয়ার খবর ছড়ালে শেয়ারের দাম ৬ দশমিক ৭৭ শতাংশ পড়ে যায়। এতে কোম্পানির ৩ হাজার ৬০০ কোটি মার্কিন ডলার দাম কমে যাওয়ায় বিনিয়োগকারীরা দুশ্চিন্তায় পড়েন। ফেসবুকে জাকারবার্গের শেয়ার ১৬ শতাংশ। ব্যক্তিগতভাবে তাঁর সম্পদ ৫৫০ কোটি মার্কিন ডলার কমে ৬ হাজার ৯০০ কোটি মার্কিন ডলারে নেমে আসে।
সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জাকারবার্গ বলেছেন, এ ঘটনার জন্য তিনি ‘সত্যিই দুঃখিত’। ‘দুর্বৃত্তপনায় যুক্ত অ্যাপ্লিকেশনগুলো’র বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন তিনি।
ফেসবুকের সাম্প্রতিক এ ‘কেলেঙ্কারি’ সম্পর্কে জবাবদিহি করার জন্য কংগ্রেসে শুনানিতে যেতে হবে জাকারবার্গকে।
কংগ্রেসের শুনানিতে অংশ নেওয়া প্রসঙ্গে জাকারবার্গ বলেছেন, সঠিক কিছু করা গেলে কংগ্রেসে সামনে সানন্দেই পরীক্ষা দেবেন তিনি।
ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে জাকারবার্গ প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন যে এখন থেকে ফেসবুকের তথ্য সংগ্রহ কোনো অ্যাপের জন্য কঠিন কাজ হবে।
জাকারবার্গ বলেছেন, ‘আপনাদের তথ্য সুরক্ষা করার দায়িত্ব আমাদের। আমরা যদি তা না পারি, তবে আমাদের সেবা দেওয়ার কোনো অধিকার থাকবে না।’
জাকারবার্গ বলেছেন, এখন তাঁর প্রতিষ্ঠান ফেসবুকের তথ্যে ঢোকার সুযোগ আছে—এমন সব অ্যাপ নিয়ে তদন্ত করবে। কোনো অ্যাপের কার্যক্রম সন্দেহ হলে পুরো ফরেনসিক পরীক্ষা হবে। অডিটে রাজি না হলে সব অ্যাপ বাতিল করা হবে। ভবিষ্যতে অ্যাপ নির্মাতাদের তথ্যের অপব্যবহার রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোনো অ্যাপে সাইন ইন করার সময় নাম, ছবি আর ই-মেইল অ্যাড্রেসের বাইরে আর কিছু দেওয়া হবে না। কারও কাছ থেকে তথ্য নিতে হলে তাঁর অনুমতি নেওয়ার বাধ্যবাধকতা চালু হবে। এ ভুল থেকে শিক্ষা নেওয়ার কথাও বলেছেন জাকারবার্গ।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন