নেতাকে মারধরের জেরে লিচু বাগান সাবাড় করলো ছাত্রলীগ
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ছাত্রলীগের আট নেতাকর্মীকে স্থানীদের মারধরের ঘটনায় প্রকাশ্যে ইজারাকৃত বাগানের প্রায় সবগুলো গাছের লিচু সাবাড় করেছে ছাত্রলীগ।
বৃহস্পতিবার বিকেলে ক্যাম্পাসের রোকেয়া হলের পেছনের গোদাগাড়ী বাগানে ২০ থেকে ৩০ জন নেতাকর্মী বস্তা বোঝাই করে লিচু পেড়ে নিয়ে যায়।
ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক মনির, শহীদ হবিুবর রহমান হলের ছাত্রলীগ কর্মী এবং আইন ও ভূমি প্রশাসন বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মিনহাজ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের কর্মী মমিনুলসহ বেশ কয়েকজনকে লিচু পাড়তে দেখা যায়।
পরে তাদের সঙ্গে কথা বলতে গেলে মনির গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। সম্প্রতি ফোকলোর বিভাগ থেকে মাস্টার্স শেষ করেছেন জানিয়ে মনির বলেন, আমরা ক্যাম্পাসের সাধারণ শিক্ষার্থী, তাই লিচু পাড়ছি।
উপস্থিত অন্যরাও নিজেদেরকে সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে পরিচয় দেন। তবে তাদের রাজনৈতিক পরিচয় ছাত্রলীগের একাধিক সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
ক্যাম্পাস সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি প্রকল্পের কাছ থেকে এ বছর টেন্ডারের মাধ্যমে নগরীর ভদ্রা এলাকার আব্দুল্লাহ ইবনে মনোয়ার প্রায় এক লাখ ৫২ হাজার টাকায় ওই বাগানটি ইজারা নেন। তিনি বাগানটি পাহারা দেয়ার জন্য প্রহরী নিযুক্ত করেন।
ছাত্রলীগের সঙ্গে মারধরের ঘটনায় তাদের নামে মতিহার থানায় মামলা হয়। পরে তারা বাগানে আসা বন্ধ করে দেন। এই সুযোগে বৃহস্পতিবার বিকেলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মী বাগান থেকে লিচু নামানো শুরু করেন। এ সময় কয়েকজন লিচুসহ ডাল কেটে ফেলেন।
ইজারাদার আব্দুল্লাহ ইবনে মনোয়ার বলেন, ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে লিচু পাড়াকে কেন্দ্র করে আমাদের ঝামেলা হয়েছিল। এরপর থেকে আর ওদিকে যাইনি। তবে এভাবে বাগান সাবাড় করার ব্যাপারে আমি প্রশাসনের শরণাপন্ন হবো এবং প্রয়োজনে আইনের আশ্রয় নেব।
রাবি ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া বলেন, ওই ঘটনার পর থেকে বাগান ইজারা নেয়া সংশ্লিষ্টরা পলাতক রয়েছেন। এই সুযোগে ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীরা হয়তো কিছু লিচু পেড়েছেন।
গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে মনিরের দুর্ব্যবহারের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, আমাকে এ বিষয়ে এখনও কেউ জানায়নি। পরে এক সাংবাদিকদের মাধ্যমে ঘটনাটি জানতে পেরেছি। এ ব্যাপারে আমার কিছু করার নেই। কৃষি প্রকল্প লিজ দিয়েছে কিনা তারাই ভাল বলতে পারবেন। কৃষি প্রকল্প থেকেও আমাকে কিছু জানানো হয়নি। গত মঙ্গলবার (৭ মে) রাত সাড়ে ৯টার দিকে ছাত্রলীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান কানন ও উপ-আন্তর্জাতিক সম্পাদক মেহেদি হাসানসহ ছাত্রলীগের আট নেতাকর্মী রোকেয়া হলের পিছনে গোদাগাড়ী বাগানে লিচু পাড়তে যান। বাগানটি পাহারার দায়িত্বে থাকা বেশ কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা তাদেরকে বাধা দেন। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। এতে স্থানীয়রা ক্ষিপ্ত হয়ে তাদেরকে লাঠি-বাঁশ দিয়েএলোপাথাড়ি মারধর করেন। এতে কাননের দুটি হাতই ভেঙে যায় এবং মেহেদির এক পা গুরুতর জখম হয়।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন