নেত্রকোনার দুর্গাপুরে ওসি মাহমুদুল হাসান এর সহযোগিতায় ধর্ষণ নাটক মঞ্চায়িত দাবি ভুক্তভোগির

নেত্রকোনার দুর্গাপুরে উনিশ বছর বয়সী এক তরুণীকে আবাসিক হোটেলে ধর্ষণ করার মামলায় কারাগারে যাওয়া সদ্য বহিস্কৃত উপজেলা ছাত্র দলের যুগ্ম আহবায়ক ফয়সাল আহমেদ দুর্জয়ের মুক্তির দাবীতে সংবাদ সম্মেলন করেছে তার পরিবার।
ভূক্তভোগি দাবি করে বলেছেন অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহমুদুল হাসান এর সহযোগিতায় এবং উৎকোচ এর বিরিময়ে ধর্ষণ নামক নাটক মঞ্চায়িত হয়েছে। নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ নেতা ও প্রকৃত ধর্ষণকারি মুন্না’কে রক্ষাকরে ছাত্রদল নেতা ফয়সাল আহাম্মদ দুর্জয়’কে মিথ্যা ধর্ষণ মামলায় ফাঁসানো হয়েছে।
২৮ ও ২৯ এপ্রিল বাদী মুন্নার সাথে বিরিশিরি রিসোর্ট নামের আবাসিক হোটেলে রাত্রীযাপন করে প্রমি আক্তার।
বৃহস্পতিবার (১ মে) সন্ধ্যায় দুর্গাপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে ছেলেকে নির্দোষ দাবী করেন মা খাদিজা আক্তার। তিনি জানান, ছাত্রদলের ফয়সাল আহমেদ দুর্জয়ের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা সাজানো ও পরিকল্পিত। মামলার বাদী ওই তরুণী ও যুবক মুন্না নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের কর্মী ও প্রকৃত ধর্ষনকারী মুন্না। ওই তরুণী দেহ ব্যবসায়ী। তাই এ মামলা প্রত্যাহার, রহস্য উদঘাট, ন্যায় বিচার ও ছেলের মুক্তির দাবী করেন তিনি।
তিনি বলেন, ছেলে দুর্জয় জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাথে জড়িত থেকে রাজনৈতিক কর্মকান্ড পরিচালনা করে আসছে। কিছুদিন ধরে তাকে বিভিন্নভাবে মান-সম্মান নষ্ট করার জন্য কতিপয় ব্যক্তি বন্ধু দাবী করে মেলামেশা করে আসছিলো যা আমার ছেলে বুঝে উঠতে পারেনি।
সম্প্রতি ধর্ষণ কার্যক্রমের যে নাটক সাজিয়ে মামলায় জড়িয়ে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে তা সম্পুর্ন মিথ্যা, সাজানো ও পরিকল্পিত। আমি এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই।
খাদিজা আক্তার আরও বলেন, মূলত যে নারী দুর্জয়ের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে, সে প্রকৃতপক্ষে একজন দুশ্চরিত্রা মেয়ে। সে একজন কলগার্ল।
সে খবরও আমারা জেনেছি। তার অসামাজিক এবং কুকর্মের ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম (ফেসবুকে) প্রকাশ হয়েছে।
দুর্গাপুর থানার ওসি’কে দোষারোপ করে খাদিজা আক্তার বলেন, মামলার বাদীর জবানবন্দি অনুযায়ী এফআইআরে গত ২৮ ও ২৯ এপ্রিল তারিখে মুন্নার সাথে রিসোর্টে অবস্থান করে আসছিল ওই মেয়ে।
স্থানীয় লোকজন তা টের পেয়ে গেলে ওসি মাহমুদুল হাসান রিসোর্টে গিয়ে তাদেরকে থানায় নিয়ে আসেন এবং প্রকৃত ঘটনা আড়াল করে উৎকোচের বিনিময়ে ছাত্রলীগ কর্মী মুন্না’কে বাঁচানোর জন্য আমার ছেলেকে ধর্ষনের মামলায় ফাঁসিয়ে দেয়। প্রকৃত ধর্ষণকারী মুন্না’কে দুর্গাপুর থানার একটি পুরাতন মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়।
উৎকোচের বিনিময়ে ওসি এই ধর্ষণের নাটকটি সাজিয়ে দেয়। সেজন্যই ছাত্রলীগ কর্মী ও প্রকৃত ধর্ষণকারী মুন্না’কে রক্ষা করে ছাত্রদল নেতা দুর্জয়’কে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে উঠানো অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহমুদুল হাসান প্রতিবেদককে মোবাইল ফোনে বলেন, ঘটনাটি ঘটেছে প্রকাশ্য দিবালোকে। আমরা আইনের ভিতরে থেকে যা ঘটনা ঘটেছে সে বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নিয়েছি।
অভিযুক্ত আসামির বিরুদ্ধে ভিকটিম বাদী হয়ে যে মামলা দিয়েছে আমরা নিয়মতান্ত্রিকভাবে সে মামলা রুজু করে আদালতে প্রেরণ করেছি, ভুক্তভোগী পরিবার বা বিবাদী পক্ষ তাদের আধিকার আছে সংবাদ সম্মেলন করে তারা তাদের অভিমত প্রকাশ করছে। মামলাটি তদন্তাধীন, তদন্ত হয়ে প্রকৃত ঘটনা এই তদন্তের মাধ্যমে বের হয়ে আসবে।
মামলার বরাতে জানা গেছে, নেত্রকোনা শহরের বাসিন্দা ওই তরুণী। তাঁর সঙ্গে কলমাকান্দা উপজেলার বাসিন্দা মুন্না নামের এক যুবকের সাথে বিয়ে পাকাপাকি হয়। তাঁরা গত ২৮ এপ্রিল দুর্গাপুরে ঘুরতে এসে বিরিশিরি রিসোর্ট নামের একটি আবাসিক হোটেলে উঠে। সেখানেই রাত্রিযাপন করে।
পরদিন ২৯ এপ্রিল দুপুরের দিকে ওই হোটেলে থেকে বের হয়ে বাহিরে যান ওই যুবক। তাঁর হবু স্ত্রী ওই হোটেলে অবস্থান করছিলেন। এ-সময় দুর্জয় ওই হোটেলের কক্ষে ডুকে ওই তরুণীকে জোর করে ধর্ষণ করে।
এ ঘটনায় পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে উদ্ধারসহ ফয়সাল আহমদকে আটক করে। পরদিন ৩০ এপ্রিল তাদের জেলা আদালতে প্রেরণ করা হলে তার জামিন না মঞ্জুর হয়।

এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন