নেত্রকোনার দুর্গাপুরে ভুট্টাচাষ অধীক লাভে খুশি কৃষক

নেত্রকোনা জেলার সীমান্তবর্তী দুর্গাপুর উপজেলার গাঁওকান্দিয়া ইউনিয়ন। যেখানে অনেক জমিতেই ধান চাষ করে লসের মুখে পড়তে হয় কৃষকদের। তবে উৎপাদন খরচ কম লাভ বেশী হওয়ায় ভুট্টা চাষে ঝুঁকছেনতারা, ছেড়ে দিয়েছেন ধান চাষ।

গত মঙ্গলবার দুপুরে সরেজমিনে গেলে এমনটিই জানান সেখানকার কৃষকগন। গাঁওকান্দিয়া ইউনিয়নের উত্তর শংকরপুর গ্রামের কৃষক আবুল কাশেম গত তিন বছর আগেও বোরো ধান আবাদ করতেন কিন্তু ধানের ফলন ভালো না হওয়ায় ও উৎপাদন খরচ বেশি হওয়ায় লোকসান গুনতে হতো তার। তাই তিনি ধান ছেড়ে ভুট্টা চাষে ঝুঁকেছেন।

তিনি বলেন, আমি ৯০ কাটা জমিতে ভুট্টা চাষ করেছি। ভুট্টায় খরচও কম। ভুট্টা আবাদ করে ফলন বেশি হয় এবং বিক্রি করে লাভও পাওয়া যায় বেশি। এ ফসলে লোকসানের ঝুঁকি কম। আমাদের এই ভুট্টার চাহিদাও আছে অনেক। আগামীতে আরও বেশি করার পরিকল্পনা রয়েছে আমার।

একই গ্রামের আরেক কৃষক মোঃ শামীম মিয়া বোরো ধান চাষ ছেড়ে দিয়েছেন কয়েক বছর আগেই। তারপর থেকেই ভুট্টা চাষ করে লাভবান হওয়ার কথা জানালেন তিনি। শামীম মিয়া বলেন, আমি ধান চাষ ছেড়ে দিয়েছি। ভুট্টা চাষ করে ভালোই ফলন পাচ্ছি।

গাঁওকান্দিয়া ইউনিয়নের দায়িত্বে থাকা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবুল কালাম বলেন, অনেকেই বড় পরিসরে ভুট্টা চাষাবাদ করেন তাদের আমরা বীজ দিয়ে সহযোগিতা করতে পারি না কিন্তু ভালো ফলন পেতে সার্বক্ষণিক নানা পরামর্শ দিয়ে থাকি পাশাপাশি সার্বক্ষনিক কৃষকদের পাশে থাকি।

এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসার নিপা বিশ্বাস প্রতিবেদককে বলেন, ধান চাষে সেচের বিষয়টি জড়িত বেশি, প্রচুর সেচ দিতে হয়। ভুট্টার ক্ষেত্রে তুলনামূলক কম সেচে ও কম খরচে ভালো ফলন পাওয়া যায়। তাই কৃষকেরা ভুট্টা চাষেই বেশি আগ্রহি হচ্ছেন।

তিনি আরও বলেন, ধান ছেড়ে যারা ভুট্টা চাষে গিয়েছেন তাদের জন্য সামগ্রিক উৎপাদনে কোনোরকম পরিবর্তন হবে না। কারণ ভুট্টার চাহিদা রয়েছে, বাজার মূল্য ভালো থাকায় কৃষকেরা লাভবান হচ্ছেন। চলতি মৌসুমে দুর্গাপুর উপজেলায় ভুট্টার আবাদ হয়েছে অন্তত: ২৩ হেক্টর জমিতে।

গো খাদ্যসহ নানা বিষয়ে চাহিদা রয়েছে এই ভুট্টার। তাছাড়াও ধান চাষে সেচের জটিলতা থাকায় ভুট্টা চাষে কম সেচের প্রয়োজন ও বাজার মূল্য ভালো পেয়ে লাভবান হওয়ার কারণেই এই ভুট্টা চাষে ঝুঁকছেন কৃষকেরা।