নেত্রকোনার মদনের বালালী বাঘমারা উচ্চ বিদ্যালয় নিয়োগ বাণিজ্যের পাঁয়তারা করার অভিযোগ
নেত্রকোনার মদন উপজেলার বালালী বাঘমারা উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির মেয়াদ শেষ পর্যায়ে দুটি পদে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে নিয়োগ দেয়ার পাঁয়তারা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ শাহ আলম মিয়া মৎস কর্মকর্তা কামরুল হাসানকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, মদন উপজেলার ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান “বালালী বাঘমারা উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির মেয়াদ শেষ হবে ২৫ মে ২০২৪। এরই প্রেক্ষিতে নতুন ম্যানেজিং কমিটি গঠনের লক্ষে তফসিল ঘোষণা করে ১৭ এপ্রিল। ৫ মে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এদিকে বিদ্যালয়ের কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর ও আয়া দুটি পদে নিয়োগ দেয়ার জন্য ম্যানেজিং কমিটি প্রধান শিক্ষকের যোগসাজশে সুকৌশলে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে নিয়োগ প্রক্রিয়া বাস্তবায়ন করার পাঁয়তারা করছেন।
প্রথমে ২ এপ্রিল তাড়াহুড়া করে কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর শিক্ষাগত যোগ্যতা গোপন করে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে পূনরায় ১৭ এপ্রিল সংশোধনী বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। এতে ১৫ দিনের স্থলে ১০ দিনের সময় দেয়া হয়। যা নিয়ে এলাকায় টাকার বিনিময়ে নিয়োগ দেয়ার ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে লোক মুখে। নিয়োগ বাণিজ্য নিয়ে প্রধান শিক্ষকের টাকা লেনদেনের ফোনালাপের বিষয়টি বিভিন্ন স্থানে প্রচার হচ্ছে । এমন একটি ফোনালাপ আমাদের নিকট সংরক্ষিত আছে।
এ ব্যাপারে আয়া পদে প্রার্থীর স্বামী বিপুল মিয়া নিয়োগ বাণিজ্যের টাকার ভাগভাটোয়ারা নিয়ে প্রধান শিক্ষকের ফোনালাপের একটি ক্যাসেট সংযুক্ত করে একটি অভিযোগ দায়ের করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরে। এরই প্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন।
প্রধান শিক্ষক ওয়াহিদুজ্জামান তালুকদার জানান, অভিযোগকারী বিপুল মিয়ার শ্বাশুড়ি বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির নারী সদস্য। তার শ্বাশুড়ির মিটিংয়ে স্বাক্ষর নেয়ায় নিয়োগের স্বাক্ষর নিয়েছি বলে আমাকে ফোন করে। আমি তাকে নিয়মকানুন বুঝিয়ে দিয়েছি। এখনো নিয়োগের কোনো কিছুই হয়নি। জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি ও ডিজির প্রতিনিধির উপস্থিতে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। টাকা লেনদেনের মাধ্যমে নিয়োগ দেয়ার কোন সুযোগ নেই।
বিদ্যালটির সভাপতি মোঃ রফিকুল হক স্বপন জানান, টাকার বিনিময়ে নিয়োগ দেয়ার কোন প্রশ্নই আসে না। আমি চাই আমার শেষ পর্যায়ে কোন বদনাম যেন না আসে। সেই লক্ষে সুষ্ঠু নির্বাচন ও স্বচ্ছ নিয়োগ দিতে চাই। এর জন্য যথাযথ ব্যবস্থা হয়েছে।
মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শফিকুল বারী জানান, নিয়োগ বাণিজ্যের বিষয়ে একটি অভিযোগ তদন্ত করতে রোববার নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় থেকে একটি চিঠি পেয়েছি। এতে মৎস্য কর্মকর্তা কামরুল হাসানকে প্রধান করে আমি ও একাডেকিম সুপার ভাইজারকে সদস্য করে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। অচিরেই তদন্ত শুরু করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ শাহ আলম মিয়া জানান, বালালী বাঘমারা উচ্চ বিদ্যালয়ে দুটি পদে নিয়োগে অনিয়মের ব্যাপারে একটি অভিযোগ পেয়েছি। এ ব্যাপারে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রতিদেন পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন