নেত্রকোনার মদনে উচ্চ বিদ্যালয়ের ল্যাব থেকে ল্যাপটপ উধাও, থানায় ডায়েরী
নেত্রকোনার মদনে একটি বিদ্যালয়ের শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব থেকে ল্যপটব উধাও হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ব্যাপারে কম্পিউটার শিক্ষক ও অফিস সহায়ককে দায়িত্বে অবহেলা করায় শোকজ করেছেন বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক । এ নিয়ে প্রধান শিক্ষক মদন থানায় একটি সাধারণ ডায়রী করেছেন। উপজেলার বালালী বাঘমারা উচ্চ বিদ্যালয়ের এমন ঘটনা ঘটে।
বিদ্যালয় ও থানা সূত্রে জানা যায়, প্রধান শিক্ষক ওয়াহিদুজ্জামান তালুকদার,শিক্ষকবৃন্দ ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যগণ ১১ আগষ্ট শেখ রাসেল ডিজিটাল কম্পিউটার ল্যাব পরিদর্শনে যান। পরিদর্শনে ল্যাপটব গুলো গণনা করলে ১৭টির মধ্যে ১৬টি ল্যাপটব পাওয়া যায়। তাৎক্ষণিক কম্পিউটার শিক্ষক মনির হোসেন ও অফিস সহায়ক শরীফ মিয়ার নিকট ল্যাবের চাবি থাকায় প্রধান শিক্ষক বিষয়টি তাদের নিকট জানতে চায়। শিক্ষক মনির হোসেন ও শরীফ মিয়ার নিকট থেকে সদুত্তর না পেয়ে কর্তব্যে অবহেলা উল্লেখ করে প্রধান শিক্ষক ওয়াহিদুজ্জান ২৪ আগষ্ট তাদের দু’জনকে শোকজ করে। পরে ওই দিন মদন থানায় একটি সাধারণ ডায়রী করেন।
বিদ্যালয়টির অফিস সহায়ক শেখ মুহাম্মদ শরিফ জানায়, যেদিন থেকে ল্যাপটবটি পাওয়া যাচ্চে না, সে দিন থেকেই স্যার আমাকে ফাসাঁনোর জন্য আমাকে ওই রুমের চাবি দেয়ার চেষ্টা করতেছেন। আমার নিকট কোন সময়েই এই রুমের কোন চাবি ছিল না। স্যার আমাকে একটি কারণ দর্শানো নোটিশ দিয়েছেন আমি এর সঠিক জবাব দিয়েছি।
কম্পিউটার শিক্ষক মনির হোসেন জানান, ল্যাব রুমের চাবি একমাত্র আমার নিকট ছিল। পরে স্যার অফিস সহায়ক শরিফকেও একটি চাবি দিয়েছে। তাই আমি স্যারকে বলে ছিলাম দুই জনের নিকট যেহেতু চাবি তাই যেকোন সময় যেকোন দূর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই আমার চাবিটি নিয়ে নেন।কিন্তু স্যার আমার চাবিটি নেননি। পরে এমন ঘটনা ঘটেছে। এ নিয়ে স্যার আমাকে ও অফিস সহায়ক শরিফকে শোকজ করেছে এবং থানায় নাকি জিডি করেছে।
বিদ্যালয়টির ম্যানেজিং কমিটির সদস্য মোঃ আমিরুল হাসান খোকন তালুকদার জানান, আমরা জুন মাসের ৫ তারিখে দায়িত্ব পেয়েছি। এর পর থেকেই ল্যাবে কয়েকটি ল্যাপটব রয়েছে প্রধান শিক্ষকের নিকট জানতে চাইলেই বিষয়টি তিনি এড়িয়ে যান। এর পর থেকেই কয়েক বার বলার পরেও তিনি কোন গুরুত্ব দেননি। অবশেষে আগষ্ট মাসের ১১ তারিখ ম্যানেজিং কমিটির সদস্যবৃন্দ,অভিভাবক সদস্য ও শিক্ষক বৃন্দদের নিয়ে ল্যাবটি পরিদর্শনে যাই। ল্যাবে ১৭টি ল্যাপটব এর মধ্যে ১৬টি পাই। একটি কম পাওয়া যায়। এ সময় উপস্থিত সকলের স্বাক্ষর নেয়া হয়। আর একটি ল্যাপটব কোথায় রয়েছে এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষকের নিকট জানতে চাইলে তিনি কোন সদুত্তর দেননি ,উনাকে মামলা করার জন্য বলা হলে নিজের দায় এড়ানোর জন্য আমাদেরকে অবগত না করে মদন থানায় একটি সাধারণ ডায়রী করেন এবং কম্পিউটার শিক্ষক এবং অফিস সহায়ককে শোকজ করেন। আমরা মনে করি প্রধান শিক্ষকেই ওই ল্যাপটবটি সড়িয়েছেন। আমরা চাই সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দায়ী ব্যাক্তিকে খোঁজে বের করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হউক।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষক জানান,এর আগেও বিদ্যালয়ের কক্ষ থেকে একটি কম্পিউটার হারানো গিয়েছিল। বেশ কিছুদিন পর একজনের বাড়ি থেকে কম্পিউটারটি উদ্ধার হয়। এখনো শোনলাম একটি কম্পিউটার হারিয়েছে থানায় স্যার জিডি করেছেন। এভাবেই কি স্যার দায়িত্ব এড়াতে চান ?
বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক ওয়াহিদুজ্জামান তালুকদার বলেন, বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য,শিক্ষক বৃন্দদের নিয়ে ল্যাব পরিদর্শনে যাই। গণনা করে দেখা যায় ১৭ টি ল্যাপটব এর মধ্যে ১৬টি রয়েছে। ওই রুমের চাবি কম্পিউটার শিক্ষক মনির এবং অফিস সহায়ক শরিফের নিটক থাকায় ১টি ল্যাপটব কোথায় আছে জানতে চাই। তাদের সদুত্তর না পেয়ে দায়িত্বে অবহেলার কারণে দুজনকেই শোকজ করি। পরে তাদের নাম উল্লেখ করে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও মদন থানায় একটি সাধারণ ডায়রী করেছি। তদন্তের পর প্রয়োজনে মামলা করা হবে।
মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শফিকুল বারী জানান, এমন ঘটনা যে বিদ্যালযে ঘটেছে তা আমাকে প্রধান শিক্ষক অবগত করেনি। প্রধান শিক্ষককে ফোন করা হলেও রিসিভ করেনি। একাডেকিম সুপার ভাইজারকে বলেছি বিষয়টি খোঁজ নেয়ার জন্য। আমার মনে হয় বিদ্যালযের যে কেহ এমন কাজ করেছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও বিদ্যালয়ের সভাপতি মো: শাহ আলম মিয়া জানান, এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক একটি সাধারণ ডায়রী করেছেন। মাধ্যমিক অফিসারকে তদন্ত করার জন্য বলেছি।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন