নেত্রকোনার মদনে কোটা সংস্কার আন্দোলনে রণক্ষেত্র; আহত অর্ধশত

চলমান কোটা সংস্কারের আন্দোলনে রণক্ষেত্র হয়েছে মদন উপজেলা। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও পুলিশের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে আহত হয়েছে অন্তত অর্ধশতাধিক। পুলিশের দুইটি গাড়ি ভাংচুর করে মালপত্র নদীতে ভাসিয়ে দেন বিক্ষোদ্ধ আন্দোলনকারীরা।

বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) সাড়ে ১১ টার দিকে শহীদ আব্দুল কদ্দুছ মগড়া সেতুতে প্রায় ঘন্টাব্যাপি এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

গুলিবিদ্ধ ৭ জন শিক্ষার্থীর অবস্থা আশঙ্কাজনক থাকায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। সংঘর্ষে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোঃ শাহ আলম মিয়া, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (খালিয়াজুরী সার্কেল) রবিউল ইসলাম, ওসি উজ্জল কান্তি সরকার, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হান্নান তালুকদার শামীমসহ উভয় পক্ষের অর্ধশতাধিক আহত হয়েছেন।

স্থানীয় লোকজন, পুলিশ ও শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, চলমান কোটা সংস্কারের আন্দোলনে বৃহস্পতিবার কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি দেন মেধাবী শিক্ষার্থীরা। সেই কর্মসূচির সমর্থন জানিয়ে মদন উপজেলার সাধারণ শিক্ষার্থীরা সকাল ১০ টা থেকে মদন সরকারী কলেজ মোড়ে জড়ো হতে থাকে। একই সাথে পুলিশও সেই স্থানে অবস্থান নেন। ১১ টার দিকে আন্দোলকারী শিক্ষার্থীরা একটি মিছিল নিয়ে উপজেলা পরিষদের দিকে আসতে থাকে। পরে পুলিশ ডাক বাংলো মোড়ে বেরিকেট দেন। পুলিশের বেরিকেট ভেঙেই শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে পাবলিক হলের দিকে রওনা হয়। একই সময় আন্দোলনের বিরুদ্ধে একটি প্রতিবাদ মিছিল বের করে আওয়ামীলীগের অঙ্গসহযোগী সংগঠন ও বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ। দুইটি মিছিল উপজেলা খাদ্য গুদামের সামনে মুখোমুখি হলে প্রশাসন মিছিল দুইকে ছত্রভঙ্গ করে আলাদা করে দেন। পরে শিক্ষার্থীরা শহীদ আব্দুল কদ্দুছ মগড়া সেতুর পূর্ব পাড়ে অবস্থান নেয়। রাস্তায় গাছ রেখে অবরোধ করলে পুরো পৌরসভায় অচল হয়ে পড়ে। প্রায় ঘন্টাব্যাপী অবরোধের পর পুলিশের সাথে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ হয়। এ সময় শিক্ষার্থীরা পুলিশের দুইটি গাড়ি ভাংচুর করলে পুলিশ ফাঁকা গুলি রাবার বুলেট ছুড়েন। পুলিশ একটি দোকানে আশ্রয় নিলে সেখানেও শিক্ষার্থীরা হামলা করে। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, মুক্তিযোদ্ধা ও সন্তান কমান্ডের সদস্যরা লাঠি সোঠা নিয়ে আন্দোলনকারীদের মুখোমুখি হয়। পরে আন্দোলনকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। এলাকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।

মদন থানার ওসি উজ্জল কান্তি সরকার জানান, এ ঘটনায় আমিসহ ১৩ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে। আমাদের দুটি গাড়ি ব্যাপক ভাংচুর করেছে আন্দোলনকারীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন রাখতে অতিরিক্তি পুলিশ, র‌্যাব,বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।