নেত্রকোনার মদনে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে কৃষকলীগ আহবায়ক ছদ্দু মিয়ার বক্তব্য নিয়ে ক্ষোভ

নেত্রকোনার মদন উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপজেলা কৃষকলীগের বর্তমান আহবায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা ছদ্দু মিয়ার বক্তব্যকে ঘিরে বিএনপি পন্থী মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে তিন শতাধিক বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ফ্যাসিস্ট সরকারের দলীয় পদবি থাকার পরও কিভাবে সংর্বধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন এ নিয়ে উপজেলার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক পেইজে চলছে তুমুল আলোচনা সমালোচনা ঝড়।
কৃষকলীগ নেতা ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকারের আমলে বিত্তশালী থাকার পরও দুস্থ’ মুক্তিযোদ্ধাদের বঞ্চিত করে বীর নিবাস পান, আওয়ামী লীগ প্যানেলের মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার ছিলেন,ইউনিয়ন পর্যায়ে খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির ডিলারসহ বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা নিয়েছেন। আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকার পতনের পর তার নামে একটি রাজনৈতিক মামলায় হয়। এ মামলায় ২৩ দিন কারাগার ভোগও করেন।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে কৃষকলীগ নেতা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, মদনে রাজনীতি নিয়ে বেশি সক্রিয় ছিলাম না। আমার অপরাধ একটাই আমার নামে খাদ্যবান্ধন কর্মসূচির লাইসেন্স ছিল। আমার লাইসেন্সটি কিভাবে নেয়া যায় এর জন্য আমার নামে একটি মামলা দায়ের করে। আমাকে পলাতক দেখিয়ে আমার লাইসেন্সটি নিয়ে নেয়। এ মামলায় আমাকে ২৩ দিন কারাগারে থাকতে হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধারা কোন অপরাধ করে নাই।
এ দিকে বিএনপি পস্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা সাবেক উপজেলা কমান্ডার মুতিউর রহমান বলেন, মুক্তিযোদ্ধা ছদ্দু মিয়ার বক্তব্য নিয়েই অনেক আলোচনা সমালোচনা হচ্ছে। আমি সাথে সাথেই প্রতিবাদ করেছি। ছদ্দু মিয়া তার বক্তব্যের শুরুতে শেখ মুজিবুর রহমানের নাম দিয়ে শুরু করেছে। সে বর্তমানে উপজেলা কৃষকলীগের আহবায়ক। ফ্যাসিস্ট সরকারের সময় অনেক সুযোগ সুবিধা নিয়েছে।
মুক্তিযোদ্ধাদের সভা সেমিনারে আমাদের তারা কোন মূল্যায়ন করেনি। আর দ্বিতীয়বার যেন এসব না হয় এ বিষয় নিয়ে আমি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলব।
উপজেলা বিএনপির সভাপতি নূরুল আলম তালুকদার বলেন, আমার অসুস্থার কারণে আমি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যেতে পারিনি। তবে কৃষকলীগের আহবায়ক ছদ্দু মিয়া ৫ আগষ্টের আগের প্রত্যেকটি ঘটনায় লাটিসোঁটা নিয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মারপিটে অংশ নেন এবং দলীয় কর্মকান্ডে জড়িত ছিলেন, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা পলাতকের পর ছদ্দু মিয়াও পলাতক ছিলেন।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উনি যে বক্তব্য দিয়েছেন আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপজেলা যুবউন্নয়ন কর্মকর্তা আব্দুল আহাদের সঞ্চলনায় ইউএনও অহনা জিন্নাতের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম আকন্দ, ওসি নাঈম মোহাম্মদ নাহিদ হাসান, সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মুতিউর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা আজহারুল ইসলাম হিরো, বীর মুক্তিযোদ্ধা আরশুজ্জামান খান, শাহাজান উদ্দিন ভূঁইয়া, উপজেলা কৃষকলীগ আহবায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা ছদ্দু মিয়া প্রমূখ।
ইউএনও অহনা জিন্নাতের মোবাইল ফোনে বার বার ফোন করলে রিসিভ না করায় বক্তব্য দেয়া সম্ভব হয়নি।

এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন