নেত্রকোনার মদনে স্কুলের অর্থ ব্যয় করে শেখ মজিব ও নিজ ভাইয়ের নামে ম্যুরাল নির্মাণ
![](https://ournewsbd.net/wp-content/uploads/2025/02/IMG_20250211_175010-900x450.jpg)
![](https://ournewsbd.net/wp-content/uploads/2025/02/475351977_1256003665483861_2959209934144112011_n.jpg)
নেত্রকোনার মদনে আওয়ামী মহিলা লীগ নেত্রী আয়েশা আক্তার নিজ ক্ষমতার দাফট দেখিয়ে বিদ্যালয়ের হতবিলের অর্থ ব্যয় করে শেখ মজিবুর রহমান ও তাঁর বড় ভাই লে, কর্নেল শাহজাহান উদ্দিন ভূঁইয়ার ম্যুরাল তৈরি করার অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার নায়েকপুর ইউনিয়নের নোয়গাও আফতাব হোসেন একাডেমিতে এমন ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, আয়েশা আক্তার আওয়ামী লীগ পরিবারের সন্তান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রলীগ নেত্রী, সৈনিক লীগের প্রতিষ্ঠাতা সহ-সভাপতি লে, কর্নেল শাহজাহান উদ্দিন ভূঁইয়ার ছোটবোন। তিনি নেত্রকোনা জেলা পরিষদের সংরক্ষিত আসনের সদস্য ছিলেন।
এর আগে তিনি বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য, নেত্রকোনা জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সদস্য, উপজেলা শাখার মহিলা বিষয়ক সম্পাদক, উপজেলা শাখার মহিলা পরিষদ সদস্য, কেন্দ্রীয় কমিটির সহমহিলা বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন।
কেন্দ্রীয় আওয়ামী মহিলা লীগ নেত্রী আয়েশা আক্তার নোয়গাও আফতাব হোসেন একাডেমিতে ২০০৫ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করে অবসরে যান। এর পরেই তিনি বিদ্যালয়টির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ছাত্র আন্দোলনে সরকার পতনের পরে তাঁর পদটি চলে যায়।
তবে অভিযোগ রয়েছে, আয়েশা আক্তার নিজ ক্ষমতা বলে প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি হন। তাঁর বড় ভাই লেপ্টন কর্নেল প্রতিষ্ঠনটির প্রতিষ্ঠাতা থাকায় তিনি এলাকার কাউকে পরোয়ানা করতেন না। উনার পছন্দ অনুযায়ী ম্যানেজিং কমিটির অন্য সদস্য নিতেন। তাঁর কাজে সমর্থন না থাকলে ওই সদস্যকে নিষক্রিয় করে রাখা হত বলেও একাধিক অভিযোগ রয়েছে।
প্রতিষ্ঠান ক্ষেত্রে শেখ মজিবুর রহমান ও বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতার ম্যুরাল বিদ্যালযের অর্থ ব্যয় করতে হবে এমন কোন প্রজ্ঞাপন সরকার জারি না করলেও এ আওয়ামী লীগ নেত্রী প্রতিষ্ঠানের সামনের অংশে কয়েক লাখ টাকা ব্যয় করে নিজ ক্ষমতা বলে এ সব ম্যুরাল স্থাপন করেন। যা বিদ্যালয়টি আর্থিক ভাবে ক্ষতি গ্রস্ত হয়েছে। শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর ছাত্রজনতা এ দুটি ম্যুরালের কিছু অংশ ভেঙে দেয়।
এ নিয়ে এলাকার কয়েকজন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আয়েশা আক্তার মহিলা লীগ কেন্ত্রীয় নেত্রী ও বিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠাতার বোন থাকায় তার দাফটে কেউ মুখ খোলতে পারত না। তিনি একক ক্ষমতা বলে সকল কাজ নিজেই প্রধান শিক্ষককে দিয়ে করাতেন। তার কমিটিতে কেউ কাজটি করতে অসম্মতি জানালে তাকে কাজ থেকে নিষক্রিয় করে হলেও তার কাজ সমাধান করতেন।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের সাবেক ও বর্তমান কয়েক জন শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বিদ্যালয়ের সভাপতি যেহেতু এমন বিষযে সিন্ধান্ত নিয়েছিলেন তাই আমরা কিছুই প্রতিবাদ করতে পারিনি। এই দুটি ম্যুরাল করতে প্রতিষ্ঠানের অনেক টাকা ব্যয় করা হয়েছে। যা প্রতিষ্ঠানের অনেক উন্নয়ন মূলক কাজ করা যেত।
বিদ্যালযের প্রধান শিক্ষক গোলাম রব্বানী বলেন, ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক এ দুটি ম্যুারাল নির্মাণ করা হয়। প্রতিষ্ঠান ক্ষেত্রে কোন সরকারি নীতিমালা কিংবা প্রজ্ঞাপন ছিল কি না প্রশ্লের জবাবে তিনি আরও বলেন, এ বিষয়ে সরকারি কোন নীতিমালা ও প্রজ্ঞাপন ছিল না। আপনারাই শুধু এ দুটি ম্যুারাল তৈরি করলেন টাকার উৎস কোথায় থেকে পেলেন ? বিদ্যালয়ের আয় থেকেই এ সব করা হয়েছে। এতে কত টাকা ব্যয় হয়েছে জানতে চাইলে তিনি সুদুত্তর দেননি।
বিদ্যলয়টির সাবেক প্রধান শিক্ষক, সভাপতি মহিলা লীগ কেন্ত্রীয় নেত্রী আয়েশা আক্তার বলেন, ম্যানেজিং কমিটির সিন্ধান্ত মোতাবেক এ দুটি ম্যুারাল তৈরি করা হয়েছিল। বিদ্যালয়ের টাকা ব্যয় করেই করা হয়। আপনার কথা অনুযায়ী কাজ না করলে দলীয় প্রভাব কাটিয়ে এ সব করেছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, আমাকে বরং ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা বিভিন্ন সময় দাফট দেখিয়েছে। আমি মহিলা মানুষ আমারত দাফট দেখানোর প্রশ্নই উঠে না।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শফিকুল বারী জানান, প্রতিষ্ঠানে ম্যুারাল তৈরি করার সরকারি কোন নীতিমালা কোন প্রজ্ঞাপন ছিল না। উনারা কিভাবে এ সব তৈরি করেছে তাও আমার জানা নেই। তবে বিদ্যালয়ের উৎস থেকে যদি করে তাকে যদি এ ব্যাপাওে কোন অভিযোগ পাওয়া যায় তাহলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার অহনা জিন্নাত বলেন, বিদ্যালয়ে ম্যুারাল তৈরি করতে হবে আমার জানা মতে কোন নীতিমালা নেই। তবে তারা কিভাবে তৈরি করেছে তাদের কাজে জিজ্ঞাসা করুন। তারাই ভাল বলতে পারবে।
![](https://ournewsbd.net/wp-content/uploads/2024/12/469719549_122234398946008134_2936380767280646127_n.jpg)
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন