নেত্রকোনার মদনে ১১ সেতুর সংস্কার না হাওয়ায় দুর্ভোগে লক্ষাধিক মানুষ
![](https://ournewsbd.net/wp-content/uploads/2022/12/IMG-20221219-WA0024.jpg)
![](https://ournewsbd.net/wp-content/uploads/2025/02/475351977_1256003665483861_2959209934144112011_n.jpg)
নেত্রকোনার মদনে ৬ কিলোমিটার সড়কে সেতু আছে ১১টি। তবে সেতুগুলোতে নেই সংযোগ সড়ক। চারটি সেতুতে তিন-চার বছর ধরে সেতু পারাপারে স্থানীয় লোকজনের ভরসা বাঁশের সাঁকো। সাঁকোগুলোও ঝুঁকিপূর্ণ। আর এক যুগের বেশি সময় ধরে ১১টি সেতু দিয়েই গাড়ি চলাচল করতে পারে না।
এ দৃশ্য নেত্রকোনার মদন উপজেলার মদন-ফতেপুর সড়কের। বারবার বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানো হচ্ছে। আর কর্তৃপক্ষ শুধু আশ্বাস দিয়ে যাচ্ছে। প্রতিকার মিলছে না। সরেজমিন ঘুরে স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, একসময় প্রতিদিন মদনের তিয়শ্রী, ফতেপুর ও নায়েকপুর ইউনিয়নের ২০টি গ্রামের হাজারো মানুষ উপজেলা সদরে আসা-যাওয়া করত মদন-ফতেপুর সড়ক দিয়ে। কিন্তু এক যুগের বেশি সময় ধরে সড়কটি বেহাল থাকায় গ্রামের লোকজন এ পথে যাতায়াত বন্ধ করে দিয়েছে। তারা অনেক পথ ঘুরে উপজেলা সদরে যাতায়াত করে। বাগজান, বৈঠাখালী, ভবানীপুর, তিয়শ্রী, ফেকনী, মাধুপুর গ্রামের লোকজন প্রতিদিন দুর্ভোগের মধ্য দিয়েই সড়কটি দিয়ে যাতায়াত করে।
সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) নেত্রকোনা জেলা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ১৯৯৫-৯৬ অর্থবছরে প্রায় ৭০ লাখ টাকা ব্যয়ে মদন-ফতেপুর সড়কের বয়রাহালা নদী, ডালী নদীর ওপরসহ বিভিন্ন স্থানে ১১টি সেতু নির্মাণ করা হয়। সেতু নির্মাণের পর এক যুগ আগে পৌর এলাকা অংশে দুই কিলোমিটার সড়ক পাকা করা হয়। এই দুই কিলোমিটার সড়কও এখন বেহাল। বর্তমানে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে রয়েছেন স্থানীয় কৃষকরা। তাঁরা তিন-চারটি হাওরের হাজারো মেট্রিক টন ধান ঘরে তুলতে ব্যবহার করছেন মদন-ফতেপুর সড়ক। কিন্তু সেতুতে সংযোগ সড়ক না থাকায় ক্ষেতে ধান কাটার ও মাড়াইয়ের মেশিন নিয়ে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। যানবাহনে করে ধান নিয়ে ঘরে ফেরা যাচ্ছে না। মাথায় করে ধান নিয়ে ফেরা কষ্টকর ও ঝুঁকিপূর্ণ। সেতু থাকা সত্ত্বেও হালচাষ করতে গরু বা মেশিন ক্ষেতে নিয়ে যেতে নদীতে নৌকা ব্যবহার করতে হয়। দুর্ভোগ পোহানোর পাশাপাশি অতিরিক্ত টাকা খরচ করতে হচ্ছে কৃষকদের।
ফেকনী গ্রামের দুই কলেজ শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ ও সাগর জানান, তাঁদের দুই গ্রামের লোকজন একমাত্র মদন-ফতেপুর দিয়ে যাতায়াত করে। বিকল্প রাস্তা না থাকায় শিক্ষার্থীসহ সব পেশার লোকজন কষ্ট করে চলাচল করছে। এই গ্রামে কোনো গাড়ি পর্যন্ত আসতে পারে না। যাদের মোটরসাইকেল বা অটোরিকশা আছে, তারা পৌর সদরে ভাড়া দিয়ে গাড়ি রাখে। হেঁটে চলাচলের জন্য প্রতিবছর গ্রাম থেকে টাকা তুলে রাস্তা মেরামত করে গ্রামবাসী। জনপ্রতিনিধি বা সরকারের কোনো দপ্তর এই বিষয়ে খোঁজ রাখে না। তিয়শ্রী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মুজিবুর রহমান বলেন, ‘মদন-ফতেপুর সড়কে আমার ইউনিয়নের বয়রাহালা নদী এবং ডালী নদীর ওপরসহ কয়েকটি সেতু রয়েছে। সংযোগ সড়ক না থাকায় সেতুগুলো দিয়ে মানুষ চলাচল করতে পারে না। সেতু দিয়ে চলাচলের পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
মদন উপজেলা প্রকৌশলী মো. গোলাম কিবরিয়া পিয়াল বলেন, ‘মদন-ফতেপুর রাস্তাটি সংস্কারের জন্য ডিপিপিতে প্রস্তাব দিয়ে রেখেছি। প্রকল্পটি পাস হলেই কাজ শুরু করা হবে। নেত্রকোনার এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুর রহিম শেখর বলেন, ‘রাস্তাটি হাওরাঞ্চলে হওয়ায় প্রতিবছর বর্ষার পানিতে সেতুর কাছ থেকে মাটি সরে যায়। সংস্কারের জন্য যে প্রকল্পের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, সেই অনুযায়ী বরাদ্দ পেলে রাস্তাটি সচল করা সম্ভব হবে।
![](https://ournewsbd.net/wp-content/uploads/2024/12/469719549_122234398946008134_2936380767280646127_n.jpg)
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন