নেপালে ঋতুকালীন কুঁড়েঘরে সন্তানসহ মায়ের মৃত্যু
ঋতুকালীন কুঁড়েঘরে নির্বাসনে থাকতে গিয়ে দুই সন্তানমহ প্রাণ হারিয়েছেন এক নেপালি মা। তীব্র ঠাণ্ডা আবহাওয়ায় নিজেকে এবং সন্তানদের একটু উষ্ণতা দিতে আগুন জ্বালিয়েছিলেন তিনি। সেই আগুনের ধোঁয়াতেই শ্বাসকষ্টে তিনজনে প্রাণ হারিয়েছেন বলে ধারণা সেখানকার কর্মকর্তাদের।
ঋতুকালীন মেয়েদের বাড়ির বাইরে রাখার পদ্ধতি ‘ছাওপাদি’ নেপালে নিষিদ্ধ কিন্তু গ্রামীণ এলাকায় এখনও সেটা পালন করা হয়ে থাকে।
কুঁড়েঘরে পাঠানো মেয়েদের প্রাণ হারানোর মতো এই ধরনের দু:খজনক ঘটনা এই প্রথম নয়। ২০১৭ সালে এই ধরনের আচরণকে অপরাধ হিসেবেও ঘোষণা করা হয় নেপালে। এর আগেও দমবন্ধ হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন অনেকে এবং এক তরুণী প্রাণ হারায় সাপের কামড়ে।
হিন্দুধর্মের প্রাচীন রীতি অনুযায়ী, যেসব নারীদের ঋতু চলছে এবং যারা সন্তান জন্ম দিয়েছে তারা অপবিত্র এবং খারাপ ভাগ্য বয়ে আনে তারা। তাই তাদের কুঁড়েঘরে বা গোয়ালঘরে রাখা হয়।
এসময় তারা কোনো পোষাপ্রাণী বা পুরুষদের ছুঁতে পারবে না। কিছু খাবার ধরতে পারবে না এবং বাড়ির ভেতরে বাথরুম ও অন্যান্য ধোয়ার সুবিধাও ভোগ করতে পারবে না। তাদের গ্রাম থেকেও অনেক দূরে হেঁটে চলে যেতে হয়।
ভয়াবহ ঠাণ্ডা বা অপরাধীর আক্রমণের ভয় থাকলেও মেয়েদের বাইরে ঠেলে দেওয়া হয় এবং শিক্ষার্থীরা স্কুলে যেতে পারে না।
মা ও সন্তানের মৃত্যুর এই দুর্ঘটনা ঘটেছে নেপালের পশ্চিমাংশের বাজুরা জেলায়। জেলার প্রধান প্রশাসক ছেতারাজ বড়াল বলেন, ময়না তদন্ত হয়েছে তারপরও এখন মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
ওই কুঁড়েঘরে থাকা কম্বলও খানিকটা পোড়া দেখা গেছে আর মৃত মায়ের পায়ের কিছুটা অংশ পুড়ে ছিলো। শিশুদের একজনের বয়স ১২ এবং আরেকজনের ৯।
নেপালি আইন অনুযায়ী, যারাই কোনো নারীকে এই রীতি পালনে বাধ্য করবে তারা তিন মাসের কারাদণ্ড এবং ২৭ মার্কিন ডলারের জরিমানার সাজা ভোগ করবে।
অ্যাক্টিভিস্টরা আরো কঠোরভাবে সেই আইন প্রয়োগের আহ্বান জানিয়েছে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন