নোয়াখালীতে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় আতিথেয়তায় মুগ্ধ শিক্ষার্থীরা

প্রতিবারের ন্যায় এবারেও গুচ্ছভুক্ত ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত শিক্ষার্থীদের জন্য এক হৃদয়স্পর্শী অভ্যর্থনার চিত্র দেখা গেছে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি)।
বিভিন্ন ক্লাব ও এলাকা ভিত্তিক স্টুডেন্ট এসোসিয়েশন এবং রাজনৈতিক সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবীরা পরীক্ষার্থীদের স্বাচ্ছন্দ্য নিশ্চিত করতে যেভাবে কাজ করেছে, তা প্রশংসা কুড়িয়েছে পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের কাছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সংগঠন যেমন নোবিপ্রবি বিএনসিসি,রোভার স্কাউট গ্রুপ, রেড ক্রিসেন্ট ইউনিট, বিভিন্ন এলাকা ভিত্তিক স্টুডেন্ট এসোসিয়েশন বিশেষ করে ফেনী, সূবর্নচর, লক্ষ্মীপুর স্টুডেট এসোসিয়েশনের কার্যক্রম ছিল চোখে পড়ার মতো এছাড়াও রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর (ছাত্রশিবির, ছাত্রদল,ইছাআ বাংলাদেশ) নেতা, কর্মীরা সকাল থেকেই পরীক্ষার্থীদের সহযোগীতায় মাঠে সক্রিয় ছিল।
সরেজমিনে দেখা যায় স্বেচ্ছাসেবীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক, একাডেমিক ভবন ও সোনাপুর এলাকার সামনে অবস্থান নিয়ে পরীক্ষার্থীদের গাইডলাইন দেওয়া,খাবার, পানি বিতরণ করা, পরীক্ষার ভবন খুঁজে পেতে সহায়তা, বিশ্রামের জায়গা দেখিয়ে দেওয়া এবং প্রয়োজনীয় পানীয় ও খাদ্যসামগ্রী সরবরাহে নিরলস ভাবে কাজ করেছে। এছাড়াও পরীক্ষার্থীদের ব্যাগ প্রয়োজনীয় মূল্যবান জিনিসপত্র রাখার জন্য সংগঠন গুলোর লকার ব্যবস্থা ছিলো যা ভর্তিচ্ছু পরীক্ষার্থীদের প্রশংসা কুড়িয়েছে।
এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষে হতে সকাল থেকে বাস সুবিধা দেওয়া হয়েছে। মাইজদি শহর থেকে ভর্তি পরীক্ষার্থীদের নিয়ে ক্যাম্পাসমুখী বাস সুবিধা দেওয়া হয়েছে। ভর্তি পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর ক্যাম্পাস থেকে বাস যথারীতি পরীক্ষার্থীদের নিয়ে শহরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে গেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংগঠনগুলোর পাশাপাশি স্থানীয় প্রশাসন ও নিরাপত্তা বাহিনীও সার্বিক নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা বজায় রাখতে কার্যকর ভূমিকা রেখেছে। গুচ্ছ পরীক্ষা উপলক্ষে ক্যাম্পাসে পরিচ্ছন্ন পরিবেশ ও সুশৃঙ্খল আয়োজন ছিল চোখে পড়ার মতো।
প্রবেশপত্রে উল্লিখিত সময়ের অনেক আগেই শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা ক্যাম্পাসে উপস্থিত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আতিথেয়তা ও সহায়তামূলক পরিবেশে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। একজন অভিভাবক বলেন, “ছেলে-মেয়েদের প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের এই আন্তরিক আচরণ সত্যিই প্রশংসনীয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যেভাবে সাহায্য করেছে, তা আমাদের মন ছুঁয়ে গেছে।”
কুমিল্লা থেকে আসা পরীক্ষার্থী আফরোজ বলেন, “প্রথমে একটু ভয়ে ছিলাম নতুন জায়গা নিয়ে, কিন্তু এখানে এসে ভাইয়া-আপুরা যেভাবে সাহায্য করেছেন, তা কখনো ভুলবো না।”
চট্রগ্রাম থেকে আগত রাকিবুল হাসান বলেন, “ভবনের পথ খুঁজে পাচ্ছিলাম না, তখন এসোসিয়েশনের একজন ভাইয়া এগিয়ে এসে নিজে আমাকে ভবন পর্যন্ত নিয়ে যান। খুবই কৃতজ্ঞ।”
সিলেটের শিক্ষার্থী তাহমিনা আক্তার বলেন, “বিভিন্ন সংগঠনের ভাইয়া আপুরা পানির বোতল আর খাবার দিয়েছিলেন। পরীক্ষার আগে এমন সহানুভূতি অনেক সাহস জুগিয়েছে।”
শুধু শিক্ষার্থীরা নয়, অভিভাবকরাও ছিলেন সমান মুগ্ধ। একজন অভিভাবক বলেন, “ছেলে-মেয়েদের প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের এই আন্তরিকতা দেখে চোখ ভরে গেছে।”
নোবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ড.মুহাম্মদ ইসমাইল বলেন-“আমাদের শিক্ষার্থীদের আন্তরিকতা ও দায়িত্বশীলতা বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা বাড়িয়েছে। এই মানবিক সহযোগিতা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।” এছাড়া বিভিন্ন সংগঠনের শিক্ষার্থীসহ নোয়াখালীবাসীর আন্তরিকতা ও সহযোগীতার জন্য সবার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।

এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন