‘নৌকাতে ভোট দিলে আসবি, না দিলে রিসোর্টে বউ নিয়ে ঘুরে বেড়াবি’

নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলার চার ইউনিয়নে পাঁচ কেন্দ্রে ভোট স্থগিত রাখা কেন্দ্রগুলোতে পুনরায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি। এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ঘোষনগর ইউনিয়নের ঘোষনগর মোল্লাপাড়ার নুর ইসলামের ছেলে ছাত্রলীগ নেতা নাঈম ইসলাম দূর্জয়ের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সাধারণ ভোটার ও স্বতন্ত্রপ্রার্থীদের হুমকি দিয়ে একটি পোস্ট দিয়েছেন।

নাঈম ইসলাম দূর্জয় তার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে লিখেছেন ‘আগামী ৭ তারিখে ভোট হবে শুধুমাত্র নৌকা মার্কার জন্য। নৌকা ছাড়া ঘোড়া মার্কার বা স্বতন্ত্র প্রার্থী যদি কোন বাপের বেটা থাকে তাহলে কেন্দ্রে এসে দেখো। হ্যা আবার বলছি শুধু নৌকা মার্কারই ভোট হবে। নৌকাতে ভোট নিবো, নৌকাতে ভোট দিলে আসবি, না দিলে রিসোর্টে বউ নিয়ে ঘুরে বেরাবি আর বাপের বেটা হলে কেন্দ্রে আইসা দেখিস।’

তার এমন পোস্ট দেখে এলাকার ভোটারদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন সাধারণ ভোটারা বলছেন, একে মামলা হবার কারণে পুলিশের ভয়ে এলাকায় কেউ থাকতে পারছে না। আবার হঠাৎ করে এভাবে ফেসবুক এ ধরনের পোস্ট। তাহলে আমরা সাধারণ ভোটাররা কিভাবে ভোট দিতে যাবো। আমাদের নিরাপত্তাকে দিবে।

এ বিষয়ে পোস্টদাতা ছাত্রলীগ নেতা নাঈম ইসলাম দূর্জয় বলেন, ‘হ্যাঁ আমি পোস্ট করেছি। আপনি কি করবেন যান করেন। নৌকার বিপক্ষে যারা আছে তারা দেশদ্রোহী। নৌকার বিপক্ষে যারা ভোট দিবে তাদের কেন্দ্রে আসার দরকার নাই। সেজন্য আগামী ৭ তারিখে শুধু নৌকাতেই ভোট দেওয়া হবে।

নৌকার বিপক্ষে কাজ করা ব্যক্তিদের দেশদ্রোহী হিসেবে কোন প্রমাণ বা আদালত তাদের কি দেশদ্রোহী হিসেবে শনাক্ত করেছে এমন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘আপনি এসব বিষয়ে এত মাথা না ঘামিয়ে চুপ থাকেন’। এ কথার পরেই ফোন কেটে দেন নাঈম ইসলাম।

ঘোষনগর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান বলেন, নাঈম ইসলাম দূর্জয় ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। সে ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সদস্য। তবে আগামীতে হয়তো তার রাজনীতির কর্মপরিধির কারনে ভালো পজিশনে আসতেও পারে। আর তার ফেসবুকে পোস্টের বিষয়ে আমার তেমন কিছু জানা নেই। এমন পোস্ট যদি দিয়ে থাকে তবে তিনি ঠিক করেনি।

এ বিষয়ে পত্নীতলা উপজেলা নির্বাচন অফিসার জাহিদুর রহমান বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। যদি কেউ এই ধরনের পোস্ট করে থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

গত ৫ জানুয়ারি ইউনিয়র পরিষদ নির্বাচনে সরকারি কাজে বাঁধা, পুলিশের গাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর এবং ব্যালট বাক্স ছিনতাইয়ের ঘটনায় মামলা হয়। মামলায় ঘোষনগর ইউনিয়নের স্বতন্ত্রপার্থী ফারজানা পারভীনসহ ৮জনের উলে­খ করে অজ্ঞাত আরো দুই হাজার ব্যক্তির নামে মামলা করা হয়। নির্বাচনের দিন উপজেলার ঘোষনগর ইউনিয়ন এর পাশাপাশি কৃষ্ণপুর, পত্নীতলা সদর ও আকবরপুর ইউপিতেও ভোটের দিন সহিংসতা হয়। এসব ঘটনায়ও মামলা হয়েছে।

এদিন পপত্নীতলার ১১ ইউপিতে ভোট হয়েছে। তবে সহিংসতার জেরে ওই চার ইউপির ফলাফল স্থগিত করে নির্বাচন কমিশন। আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি স্থগিত হওয়া চার ইউপি ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।