নৌকার ঘাটে নিরব চাঁদাবাজি, না দিলে হুমকি!
নেত্রকোনার মদনে বর্ণি নদীর সড়কের এক পাশে পানি উঠে যাওয়ায় ইঞ্জিনচালিত নৌকা ঘাটের নামে নিরব চাঁদা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে ইউপি সদস্য বকুল মিয়াসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে। নিয়মিত চাঁদা পরিশোধ না করলে দেয়া
হয় হুমকি ধামকি। মদন- তাড়াইল সড়ক বর্ণি নদী সংলগ্ন এলাকায় এমন ঘটনা ঘটছে।
জানা যায়, মদন- তাড়াইল রাস্তায় বর্ণি নদীতে সেতু নির্মাণ হওয়ায় নেত্রকোনা ও কিশোরগঞ্জ দুই জেলার মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন বাস্তবায়ন হয়। তবে গত কয়েক দিনে ঠানা ভারি বৃষ্টিপাতে ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় যাতায়াতের এক মাত্র সড়ক পথের রাস্তাটি বন্ধ হয়ে যায়। বিকল্প হিসেবে নদীটি পারাপারের জন্য ইঞ্জিনচালিত নৌকা বেঁচে নিতে হয় যাত্রীদের। তবে এ সুযোগটি কিছু অসাধু চক্র বেঁচে নেয়। নিজেদের ট্রলার ঘাটের জমির মালিক দাবি করে ২৫/৩০ টি ইঞ্জিনচালিক নৌকা থেকে দৈনিক নিচ্ছে ৪শ থেকে ৫শ টাকা। টাকা না দিয়ে প্রতিবাদ করলে শুনতে হয় তাদেও গালাগালি এক প্রকার হুমকি ধামকি। আর এ সব চক্রের সাথে জড়ির পশ্চিম ফতেপুর গ্রামের ইউপি সদস্য বকুল মিয়া,প্রভাবশালী হিরণ মুন্সি, দুলাল ও বাবলু।
বর্ণি নদীর ইঞ্জিনচালিক নৌকায় চাঁদাবাজি বিষয়টি নিয়ে শনিবার সকালে সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান সামিউল হায়দার সফি
চাঁদা নেয়া ও হুমকি ধামকি যাচাই বাছাই করতে ঘটনাস্থলে যান এবং সত্যতা খোঁজে পেয়ে ইউএনওসহ স্থানীয় সাংবাদিকদের নিকট একটি ভিডিও বার্তা পাঠান। বার্তাটিতে শোনা যায়, মেম্বার বকুলসহ আরও কয়েকজন ইঞ্জিনচালিক নৌকা থেকে দৈনিক চঁদা উত্তোলণ করছে। চাঁদা দেয়ার কারনে ২০ টাকার পরিবর্তে ৩০ টাকা আদায় করছে যাত্রীদের নিটক থেকে নৌকার মালিকরা। এমন বার্তার প্রেক্ষিতে শনিবার বিকালে সরজমিনে ঘাট এলাকায় গেলে যাত্রীদের নিকট থেকে নেয়া হচ্ছে অতিরিক্ত ভাড়া আর নৌকার মালিকদের কাছ থেকে এলাকার এক শ্রেণির প্রভাবশালী ব্যাক্তিরা হাতিয়েনিচ্ছে প্রতিদিন ৪ থেকে ৫শ টাকা। এতে যাত্রী সাধারণগণ নানাভাবে হয়রানির স্বীকার হচ্ছে।
নৌকার মালিক কবির,ভিক্ষুক মিয়া,সাদ্দাম মিয়া,আকুল মিয়া জানান, ইউপি সদস্য বকুল,দুলাল,হিরণ মুন্সি,বাবলু এই চারজনের নেতৃত্বে ঘাট থেকে প্রতিদিন চাঁদা উত্তোলন করা হচ্ছে। কেহ প্রতিবাদ করলে তার উপর চলে অমানশিক নির্যাতন। আমরা টাকা না দিলে কোন নৌকা ঘাটে লাগাতে দেবে না। তাই নিরুপায় হয়ে জীবিকা নির্বাহের তাগিদে আমরা প্রতি নৌকার মালিক প্রতিদিন ৪শ থেকে ৫শ টাকা তাদের দিচ্ছি। আমরা এর প্রতিকার চাই।
এ ব্যাপারে চাদাঁ আদায়কারী মেম্বার বকুল বলেন, আমি তাদের নিকট থেকে কোন টাকা নিচ্ছি না। তারা বরং প্রতি যাত্রীদের নিকট থেকে ৫০ টাকা করে নিচ্ছে। আমি চাই এই ঘাট উন্মুক্ত থাক। প্রতি যাত্রী ১০ টাকা করে ভাড়া দেউক। আরেক চাদাঁ আদায়কারী দুলাল মিয়া বলেন, আমার জমিতে নৌকা ভিড়ালে আমাকে টাকা দিতে হবে।
ইউপি চেয়ারম্যান সামিউল হাযদার সফি জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আমি বর্ণি নদীর ঘাটে যাই। নৌকার মালিকদের সাথে কথা বলে জানতে পারি চাদাঁবাজির সাথে আমার মেম্বার বকুলসহ আরও কয়েকজন জড়িত। বিষয়টি ইউএনও স্যারকে অবগত করেছি। তবে মেম্বার হউক যে কেউ হউক এ ঘটনায় যারা জড়িত তাদের
বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার জোড় দাবি জানাচ্ছি। আমি কোন সময় এ সব আশ্রয় দেই নাই,আর দেব না।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ( ইউএনও) মো: শাহ আলম মিয়া জানান, নতুন পানি হঠাৎ করে বৃদ্ধি পাওয়ায় একদল ট্রলার ঘাট থেকে চাঁদা আদায় করছে এমন সংবাদ পেয়েছি। সরজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন