নৌকায় ভোট চাওয়ায় ভাইকে মেরে ফেলল ভাই!

উপজেলা নির্বাচনের প্রচারণাকে কেন্দ্র করে চেয়ারম্যান প্রার্থী ছোট ভাই বিপ্লব কুমার সরকারের ঘুষিতে বড় ভাই তপন কুমার সরকারের (৭০) মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

রোববার রাত ৮টার দিকে নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার বাহাগিলি ইউনিয়নের ডাঙ্গারহাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। মৃত তপন কুমার উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আগামী ১০ মার্চ প্রথমধাপে উপজেলা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হবে কিশোরগঞ্জ উপজেলায়। এখানে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ছয়জন।

এদের মধ্যে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী জাকির হোসেন বাবুলের পক্ষে প্রচারণায় নামেন তপন কুমার সরকার। তপন কুমার সরকারের ছোট ভাই উপজেলা গাড়াগ্রাম ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সভাপতি বিপ্লব কুমার সরকার মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন।

বাহাগিলি ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আতাউর রহমান দুলু বলেন, তপন কুমার সরকারসহ আমরা বাহাগিলি ইউনিয়নের ডাঙ্গারহাট এলাকায় নৌকার পক্ষে মাইক্রোবাসে প্রচারণা চালাচ্ছিলাম।

এ সময় মোটরসাইকেল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী বিপ্লব কুমার সরকার তার সমর্থকদের নিয়ে এসে আমাদের মাইক্রোবাস প্রতিরোধ করেন। সেই সঙ্গে তপন কুমারকে মাইক্রোবাস থেকে নামিয়ে ভাইয়ের পক্ষে কেন প্রচারণা করছেন না বলে তর্কে লিপ্ত হন। পাশাপাশি নৌকায় কেন ভোট চান তা জানতে চান।

বিষয়টি নিয়ে দুই ভাইয়ের মধ্যে চরম উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এ সময় ছোট ভাই বিপ্লব বড় ভাইকে কিলঘুষি মারলে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। আমরা আহত তপন কুমার সরকারকে দ্রুত উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগে কর্মরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ছোট ভাইয়ের আঘাতে বড় ভাইয়ের অকালে মৃত্যু হলো। এর জন্য দায়ী বিপ্লব।

এ ব্যাপারে বিপ্লব কুমার সরকারের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার অসুস্থ বড় ভাইকে নৌকা প্রতীকের লোকজন জোরপূর্বক বাড়ি থেকে প্রচারণার জন্য নিয়ে যায়। বড় ভাই এমনিতে হৃদরোগসহ ডায়াবেটিসে ভুগছিলেন। আমার ধারণা বড় ভাই মাইক্রোবাসে অসুস্থ হয়ে মারা যান। অথচ আমার প্রতিপক্ষরা এটিকে পুঁজি করে ফায়দা নেয়ার অপচেষ্টা করছেন।

এ বিষয়ে উপজেলা হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সুজা শরিফ জেমস বলেন, আমরা রোগীকে মৃত অবস্থায় পেয়েছি। তার চিকিৎসার কোনো সুযোগ ছিল না। তবে তার শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি।

এদিকে, এ ঘটনার খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে হাসপাতালে ছুটে আসেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, থানা পুলিশসহ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা।

কিশোরগঞ্জ থানা পুলিশের ওসি হারুন আর রশিদ বলেন, মরদেহে আঘাতের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। বিষয়টি আমরা সরেজমিনে তদন্ত করে দেখেছি। সোমবার তার মরদেহের ময়নাতদন্ত করা হবে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।