নড়াইলের কমরেড হেমন্ত সরকার ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার অকৃতদার
কমরেড হেমন্ত সরকার ছিলেন কৃষক আন্দোলনের আলোক বর্তিকা। জমিদারদের লাঠিয়াল হওয়া সত্বেও তেভাগা আন্দোলনকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে জমিদারদের বিরুদ্ধে লাঠি ধরতে তিনি দ্বিধা করেননি। মুক্তিযুদ্ধ ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার অকৃতদার এই নেতাকে এ প্রজন্মের সামনে তুলে ধরতে হবে। তিনি জনগণতান্ত্রিক বিপ্লবের মাধ্যমে শোষণহীন সমাজ ব্যবস্থা কায়েমের স্বপ্ন দেখতেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি নীতিচ্যুত হননি।
সোমবার ছিল হেমন্ত সরকারের ২২তম মৃত্যুার্ষিকী। বিকেল ৩টায় নড়াইল সদর উপজেলার বড়েন্দার গ্রামে তার সমাধি চত্বরে অনুষ্ঠিত এক স্মরণ সভায় বাংলাদেশের ওর্য়াকার্স পার্টির পলিট ব্যুরোর সদস্য কমরেড মুস্তফা লুৎফুল্লাহ এমপি প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
এর আগে দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে তার সমাধিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন।
ওর্য়াকার্স পার্টি ও হেমন্ত সরকার স্মৃতিরক্ষা যুব কমিটি এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
কমরেড নির্মল গোলদারের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান বক্তা ছিলেন জেলা ওর্য়াকার্স পার্টির সভাপতি কমরেড নজরুল ইসলাম।
বক্তব্য দেন জেলা ওর্য়াকার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আমিরুল ইসলাম, অধ্যাপক মলয় কআন্তি নন্দী, শাহাজান মৃধা, নারদ বালা, শচীন্দ্রনাথ অধিকারী, স্বপ্না সেন, সৌরভ গোলদার প্রমুখ।
কমরেড হেমন্ত সরকার ১৯১০ সালে নড়াইল সদর উপজেলার বড়েন্দআর গ্রামে কৃষক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। দারিদ্রের কারণে তিনি প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত ছিলেন। প্রথম জীবনে তিনি নড়াইলের প্রতাপশালী জমিদারদের লাঠিয়াল হিসেবে কাজ করতেন। পরে উপমহাদেশের প্রখ্যাত কমিউনিষ্ট নেতা কমরেড অমল সেনের সংস্পর্শে এসে মার্কসবাদের দীক্ষা নেন এবং সব ছেড়ে কমিউনিষ্ট আন্দোলনে নিজেকে উৎসর্গ করেন। চল্লিশ দশকে তিনি তেভাগা আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। সাংগঠনিক দক্ষতা ও যোগ্যতার বলে তিসি প্রথমে পূর্ব পাকিস্তান কমিউনিষ্ট পার্টি (এম এল) ও পরবর্তীতে স্বাধীনতার পরে বাংলাদেশের বিপ্লবী কমিউনিষ্ট পার্টি (এম এল) এর যশোর জেলা ও কেন্দ্রীয় কমিটির গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন।
অকৃতদার এই নেতা ৮৮ বছরের জীবনকালের মধ্যে ৬০ বছরই জেলখানায় ও আত্মগোপনে কাটিয়েছেন। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তিনি কখনো আদর্শের সাথে আপোষ করেননি। ১৯৯৮ সালের ২৮ ডিসেম্বর ভোরে আত্মগোপনে থাকাকালীণ নড়াইলের এক বাড়িতে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন