নড়াইল হাসপাতালের ১০ চিকিৎসক ও প্যাথলজিস্টের শোকজপত্র প্রত্যাহার
নড়াইল -২ আসনের সংসদ সদস্য জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক নড়াইল এক্সপ্রেস মাশরাফির শনিবার ১৮ ডিসেম্বর সকালে নড়াইল আধুনিক সদর হাসপাতালে ঝটিকা সফরের পর দেরী করে আসায় ৮জন চিকিৎসক ও ২জন মেডিকেল প্যাথলজিস্টকে করা শোকজপত্র প্রত্যাহার করা হয়েছে।
এমপির নির্দেশে সোমবার এ শোকজ প্রত্যাহার করা হয়েছে।
এদিকে সংসদ সদস্য মাশরাফি হাসপাতালে যাওয়ার পর তাঁর কাছে ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ১৫ মাসের এক শিশু রোগির দাদী হাসপাতালের বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ করায় ওই মহিলাকে রোববার হাসপাতালের আউটসোর্সিং-এর এক কর্মচারি মারধর করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, শুক্রবার ১৬ ডিসেম্বর সদরের বাঁশগ্রামের মিনারুল মোল্যার ১৫ মাসের শিশু কন্যা রুকাইয়া ডায়রিয়া জনিত রোগে সদর হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ভর্তি হয়। শনিবার নড়াইল-২ আসনের এমপি মাশরাফি বিন মুর্তজা সকাল সাড়ে ৮টার দিকে সদর হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে রোগিদের কাছে গেলে তখন রুকাইয়ার দাদিসহ অনেকেই হাসপাতালেরর বিভিন্ন অনিয়মের চিত্র তুলে ধরেন। এ কারনে রোববার দুপুরে রুকাইয়ার দাদীকে আয়া পরভীন খানম মারধর করে। এ ঘটনার পর রুকাইয়ার দাদী তহমিনা বেগম অভিযোগে জানান, দুপুর বেলায় এক আয়া আসলে বলি এই কয়ডা ভাত দে, তখন ও চেচায়ে কয় তোর নাম নাম নেই ভাত দেওয়া যাবে না। যারা খাবার না নিয়ে দুপুরের আগেই বাড়ি চলে গেছে তাদের একজনের খাবার দিলি কি অবেনে। তহন আয়া কয় যেমন কুকুর তেমন মুগুর না দিলে ঠিক হবেনানে। আমি কই আমি কুকুরের কি করিছি। তহন আমারে চুলের মুঠি ধরে স্যান্ডেল দিয়ে মারিছে। শনিবার মাশরাফি হাসপাতালে আসলে অভিযোগ করিছিলাম হাসপাতালে ময়লা থাকে, ডাক্তাররা ঠিক মতো দেখতিছে না, সেবা দিচ্ছে না, খাবার দেয় না, এইসব কথা বলিছিলাম সেইজন্য ভাত চাওয়ার সময় প্রতিশোধ নিছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, রবিবার দুপুরে ৬ বেডের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে রোগি ভর্তি ছিল ২৪জন। সেখানে ১১জনকে দুপুরের খাবার দেওয়া হয়। তার মধ্যে রুকাইয়ার পরিবারের কারও নাম ছিল না।
নড়াইল আধুনিক সদর হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডাঃ আসাদ উজ-জামান মুন্সী বলেন, চিকিৎসক-কর্মচারীদের সকাল ৮টায় হাসপাতালে আসার কথা থাকলেও শনিবার সকাল ৯টার পরে আসায় ৮জন চিকিৎসক ও ২জন মেডিক্যাল প্যাথলজিষ্টকে শোকজ করা হলেও এমপি মাশরাফি বিন মুর্তজা রোববার বিকেলে হাসপাতালে এসে এসব চিকিৎসক ও প্যাথলজিস্টদের শোকজপত্র প্রত্যাহারের কথা বলায় সোমবার শোকজ প্রত্যাহার করা হয়েছে। এমপি মহোদয় হাসপাতালে চিকিৎসক-কর্মকর্তা-কর্মচারি সবাইকে সঠিক সময়ে হাসপাতালে গমন এবং রোগিদের প্যাথলজিক্যাল, ঔষধ সেবা নিশ্চিতসহ সার্বিক বিষয়ে দিক নির্দেশনা দিয়েছেন।
এদিকে শুক্রবার শিশু ওয়ার্ডে ১৭জনের খাবার মাত্র ৩জনকে দেওয়ায় খাবারের দায়িত্বে থাকা রাজু শেখের শোকজ বহাল রয়েছে এবং এর সাথে জড়িত আউটসোর্সিং-এর ১কর্মচারিকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এক আয়া কর্তৃক রোগির আত্মীয়কে মারধরের বিষয়ে বলেন এ ঘটনার তদন্ত করতে হাসপাতালের আরএমও ডা. মশিউর রহমান বাবুকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি কোনো ফলাফল এখনও আমাকে দেননি। পরে এ বিষয়ে আরএমওকে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ২৫ এপ্রিল মাশরাফি বিন মর্তুজা সদর হাসপাতালে আকস্মিক পরিদর্শনে কর্তব্যরত চিকিৎসকদের হাজিরা খাতায় স্বাক্ষরসহ বিভিন্ন অনিয়ম দেখে কয়েক চিকিৎসককে শোকজ এবং বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। বর্তমানে নড়াইল সদর হাসপাতালে ৩৯জন চিকিৎসকের পদ থাকলেও আছেন ২৯ জন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন