পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় হোটেল ভাঙচুর, টাকা লুটপাট

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার বুড়াবুড়ি ইউনিয়নের শিলাইকুঠি বাজারে গাঁজার বিষয়কে কেন্দ্র করে ‘মাসফিয়া জান্নাত মাইশা হোটেল’ ভাঙচুর ও অর্থ লুটপাট করা হয়েছে অভিযোগ উঠেছে। রোববার (২৩ জুন) দিবাগত রাত সাড়ে ৮টায় উপজেলার বুড়াবুড়ি ইউনিয়নের শিলাইকুঠি বাজারে এ ঘটনা ঘটে।

মাসফিয়া জান্নাত মাইশা হোটেলের মালিক মনজু ইসলাম ওই ইউনিয়নের রাজুগছ গ্রামের দুলালের ছেলে ফরিদ, শিলাইকুঠি গ্রামের মৃত গফার উদ্দিনের ছেলে বাচ্চাম উদ্দিন, বাচ্চাম উদ্দিনেরর ছেলে আল আমিন, আকালু মোহাম্মদের ছেলে রব্বানী ও আব্দুর রউফ, তোফাজুলের ছেলে সোহেল ও আনিছ এবং বৈদ্য বদিউজ্জামানের ছেলে মনিরসহ আরও ৫/৭জন তার হোটেলে এই ঘটনা ঘটিয়েছে প্রাথমিকভাবে পুলিশকে অভিযোগ করেন।

জানা যায়, গত শুক্রবার (২১ জুন) হোটেল মালিক মনজুর মেচিয়ারের গাঁজা সেবনের বিষয়ে ওই ইউনিয়নের শিলাইকুঠি গ্রামের আমিরুল ইসলামের ছেলে আরিফুলের সঙ্গে বিরোধ হয়ে আসছিল। পরে বিষয়টি নিয়ে দুই ধফায় সালিশ বসা হয়েছিল। উভয়ের মধ্যে সালিশ সম্পূর্ণ না হতেই উক্ত ঘটনাকে কেন্দ্র করে এই ঘটনাটি ঘটে।

হোটেল মালিক মনজু অভিযোগ করে জানান, গত শুক্রবার (২১ জুন) ঘটনার ওই দিন রাতেই স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তির মাধ্যমে আপোষ মিমাংসা করার চেষ্টা করেন। অভিযুক্তরা আমাদের বিচার না মেনে দোকান ভাঙচুর করার হুমকি দেন। তাই তিনি শনিবার (২২ জুন) অভিযুক্তরাসহ আরও কিশোর গ্যাংদের ভয়ে হোটেল বন্ধ করে রাখেন। শনিবার রাতেও বিচার মিমাংসা করার চেষ্টা করেন মনজু। কিন্তু তাঁরা মিমাংসাকে তোয়াক্কা না কের ওই দিন রাতেও হোটেল ভাঙচুর করার হুমকি দেয়। পরের দিন রোববার (২২ জুন) আগের মতোই হোটেল খুলে ব্যবসা বাণিজ্য চালিয়ে আসতে থাকলে রাত ৯ টার সময়ে কয়েক জন কিশোর গ্যাং তার হোটেলের পিছনে ও সাইটে তাকে ফাঁসানোর জন্য ওৎ পেতে থাকে। তিনি বিষয়টি বুঝতে পেরে সর্তক হোন। মিনিট কয়েকের মধ্যেই কয়েক জন তার হোটেলের ভিতর ঢুকে পড়েন। তিনি দোকান থেকে বের হতে বললে, তার উপর চড়াও হয়ে উঠেন। এক পর্যায় হোটেলের সমস্ত মালামাল মাটিতে ফেলে দেয় অভিযুক্তরা। লাঠিসোঁটা দিয়ে দোকান ভাঙচুর করে। এতে তার লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়। তিনি বলেন, ক্যাশে থাকা সারাদিনের বেচাকেনার ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা নিয়ে যায় অভিযুক্ত রব্বানী এবং তার পকেট থেকে ৫০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায় অভিযুক্ত আল আমিন।

মনজু আরোও জানান, ওরা আসছিল তাকে ফাঁসাতে হোটেলে গাঁজা ঢুকিয়ে দিতে। অভিযুক্তরা ইতিপুর্বে তার কাছে চাঁদা চাইতে গেলে চাঁদা না দেওয়ায় তারই জের ধরে এই ঘটনা ঘটান বলেও জানান তিনি।

আল আমিনের বাবা বাচ্চাম উদ্দিন মনজুর হোটেলে যাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, তার ছেলেকে মারধর করা হচ্ছে তাৎক্ষণিক মনজুর হোটেলে গেছেন। তবে তার ছেলে কারো সাথে মারপিট ও কোনো দোকানপাট ভাঙচুর করেননি জানান তিনি।

বাজারে অবস্থিত স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দোকান ভাঙচুর তাদের চোখের সামনে হয়েছে। একটা ব্যবসা বাণিজ্যের উপর হামলা চালা একটা ন্যাক্কার জনক ঘটনা। এই ঘটনায় সুষ্ঠ বিচারের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

৪নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য নুর জামান বলেন, দোকান ভাঙচুরের ঘটনাটি তার সামনে ঘটেছে এবং অভিযুক্ত ব্যক্তিরাই এ অমানবিক ঘটনায় জড়িত বলে তিনি নিশ্চিত করেছেন। তিনি একজন ইউপি সদস্য হয়ে এ ঘটনায় সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন।

ঘটনাস্থলে আসা তেঁতুলিয়া মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মানিক চন্দ্র ও উপপরিদর্শক (এসআই) ফিরোজ বলেন, সরেজমিনে গেছেন এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ দেওয়া হলে অভিযোগের ভিত্তিতে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ বিষয়ে জানতে রাতেই তেঁতুলিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুজয় কুমার রায়কে মুঠোফোনে কল করা হলে কলটি রিসিভ হয়নি।