পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় নির্মিত হয়নি যাত্রী ছাউনি, প্রকল্পের টাকা ছয়-নয়

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার ভজনপুর ইউনিয়নে ভজনপুর বাসট্যান্ডে যাত্রী ছাউনি নির্মাণের কথা লেখা থাকলেও নির্মাণ করা হয়নি যাত্রী ছাউনি। ইউনিয় পরিষদ কর্তৃক পরিকল্পিতভাবে ব্রিটিশ যাত্রী ছাউনি লোক দেখানো সংস্কার করে বরাদ্দের ১লাখ ১৫ হাজার টাকা ছয়-নয় করা হয়েছে। যে যাত্রী ছাউনিতে নেই কোনো যাত্রী। অকেজো যাত্রী ছাউনিটি বাঁশের বেড়া দিয়ে ঘেরিয়ে রাখা হয়েছে।
সরে জমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ভজনপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বাসস্ট্যান্ডে যাত্রী ছাউনি নির্মাণের নামে বরাদ্দ নেওয়া প্রকল্পের টাকা ভজনপুর বাজারের ভিতরে অবস্থিত পুরোনো যাত্রী ছাউনি লোক দেখানো সংস্কার করেন। ছাত্রী ছাউনীর চারপাশে রয়েছে ব্যবসার দোকানপাট। একসময় যাত্রী ছাউনিটি ভাড়ায় ব্যবসা চালানোর পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানা গেছে।
স্থানীয় লোকজন ও বাপ দাদাদের কাছ থেকে জানা যায়, ১৯৭১ সালে যুদ্ধের আগে ও পরে বাজারের ভিতর রাস্তা দিয়ে যখন বাস চলাচল করতো তখন ওই যাত্রী ছাউনিটি নির্মাণ করা হয়। পরবর্তীতে একাত্তরের যুদ্ধের পর বর্তমান মহাসড়ক নির্মাণ করা হলে ওই যাত্রী ছাউনিটি অকেজো হয়ে পড়ে এবং ব্যবসার কাজে ব্যবহার হয়।
এরপর সড়ক ও জনপদ বিভাগ পঞ্চগড় মহাসড়কের পাশে একটি বাসস্ট্যান্ড বা বাস স্টপেজ নির্ধারণ করেন। সড়ক ও জনপদের এই বাস স্টপেজ ভজনপুর বাসস্ট্যান্ড নামে পরিচিত হয়ে আসছে। এদিকে সড়ক ও জনপদের ভজনপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে ব্রিটিশ বাসস্ট্যান্ডটি প্রায় তিনশত ফুট বাজারের দক্ষিণ দিকে ভিতরে। যেখানে পানের ব্যবসা প্রতিষ্টান ছিল।
এমডি নাজিমুল ইসলাম (ইংরেজি) নামে একজন সোশ্যাল মিডিয়া তার ফেসবুকে ওয়ালে গত ৬ অক্টোবর লিখেন, ভজনপুরে যাত্রী ছাউনী খুবই প্রয়োজন অনেকক্ষন দাঁড়িয়ে থাকার পর রৌদ্রের মধ্যে বেঞ্চে বসে পরলাম। টিন শেডের হলেও একটা যাত্রী ছাউনী দরকার। এর কারণে মানুষ অনেক ভোগান্তিতে পড়তেছে।
একজন অসুস্থ মানুষের অবস্থা অনেক খারাপ হয়ে যায়। এরপর তিনি গত ১০ অক্টোবর লিখেন, গত ০৭/১০/২০২৫ তারিখে আমি একটা পোষ্ট করে ছিলাম আমি শুধু চেয়েছিলাম ভজনপুর বাসষ্ট্যান্ড থেকে অনেক ছাত্রছাত্রী অনেক মানুষ দূর দূরান্তে যাতায়াত করে বিশেষ করে অনেক অসুস্থ রোগী বৃদ্ধ বয়সের মানুষ রংপুরে চিকিৎসার জন্য যায়।
এখান থেকেই অনেক মানুষ বাসে করে চলাচল করে তাই আমার মনে হয় এখানে একটা যাত্রী ছাউনী হলে ভালো হতো কিন্তু আমি জানতাম না যে ইতিপূর্বে এখানে যাত্রী ছাউনী জন্য বরাদ্দ ছিল। জানলে এই পোস্টটি আমি করতাম না। আমি কার ও ক্ষতি হোক এটা আমি কখনোই চাইনি। আমি আন্তরিক ভাবে দুঃখিত। তবে যেটাই হোক ভজনপুরে শুধুমাত্র টিন শেডের হলেও বর্ষা মৌসুমে প্রচন্দ রৌদ্রে ছাউনী প্রয়োজন। আমাকে ভুল ভাববেন না।
এমডি নাজিমুল ইসলামের এই পোস্টের কমেন্টে ফেসবুক রেটিজেনরা বিভিন্নজন ভিন্নরুপে মন্তব্য তুলে ধরেন। তবে অনেকেই মহাসড়কের পাশে অবস্থিত সড়ক ও জনপদের বাস স্টপেজকেই বাসস্ট্যান্ড হিসেবে চিনেন। ভজনপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ভজনপুর বাসস্ট্যান্ডে যাত্রী ছাউনি নির্মাণ দেখিয়ে মনগড়াভাবে পুরোনো বাসস্ট্যান্ডের যাত্রী ছাউনি সংস্কারের নামে প্রকল্পের টাকা ছয়-নয় করেছেন।
জানা যায়, ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর) কর্মসূচির আওতায় উপজেলাওয়ারী তৃতীয় কিস্তিতে ভজনপুর বাসস্ট্যান্ড যাত্রী ছাউনি নির্মাণ প্রকল্পে ১লাখ ১৫ হাজার টাকা বরাদ্দের অনুমোদন দেয় জেলা প্রশাসক পঞ্চগড় এর পক্ষে জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা(ভারপ্রাপ্ত) মো. আরফি হাসান চৌধুরী। পরে তেঁতুলিয়া উপজেলা থেকেই কাজটির বাস্তবায়ন দেখানো হয়।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মাইদুল ইসলাম শাহ বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ ভিতরের বাসস্ট্যান্ডকে দেখানো হয়েছে। যখন প্রকল্পটি দেওয়া হয়েছিল ওইটি ফাঁকা ছিল ওইটা সংস্কার করা দেখাইছে। আমিও শুনলাম দুই তিন দিন আগে ওখানে ঘেরা দিছে। আমি চেয়ারম্যানকে দুই তিন বার ফোন দিলাম উনার ফোনে গেলনা। তিনি চেষ্টা করবেন চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলার। যেন ঘেরা দেওয়া না হয়।
এ ব্যাপারে জানার জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার আফরোজ শাহীন খসরুকে মুঠোফোনে কল করা হলে কলটি রিসিভ না হওয়ায় যোগযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন













