পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় বোরখা পরে ড্যান্স সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনার ঝড়

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার শালবাহান দ্বি-মূখী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার সাংস্কৃতি অনুষ্ঠানে মেয়েদেরকে বোরখা পরে রিমিক্স হিন্দি গান বাজিয়ে ড্যান্স করায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠেছে। এদিকে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বোরখা নয় ভূতের ড্রেস বলে দাবি করছেন।

মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের বিভিন্ন আইডিসহ গ্রুপে ওই বিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে মেয়েদেরকে ইসলামী পোশাক বোরখা পরিহিত একটি ৪২ সেকেন্ডের ভিডিও প্রকাশ পেলে মুহুর্তে ভাইরাল হয়।

এরপর ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত আনার দায়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক কমেন্ট বক্সে ওই বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের শাস্তির ব্যবস্থা চেয়ে বিভিন্ন জন বিভিন্ন আঙ্গিকে বিচারের দাবি জানিয়েছেন। অনেকে আবার এই পোশাককে খ্রিষ্টীয় চার্চ নানদের পোশাক বলে অভিহিত করেছেন। কেউবা বোরখার সাথে সমতুল্য করছেননা।

জানা যায়, ওই বিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা হিসেবে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি ক্রীড়া প্রতিযোগিতা পরের দিন ১৭ ফেব্রুয়ারি পুরস্কার বিতরণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে এস.এস.সি পরীক্ষার্থী ২০২৫ এর কয়েকজন শিক্ষার্থী এই ড্যান্সে অংশগ্রহন করেন।

এ বিষয়ে শালবাহান দ্বি-মূখী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু জাফর বলেন, গত ১৬ ফেব্রুয়ারি ও ১৭ ফেব্রুয়ারি বিদ্যালয়ে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ছিল এবং ১৭ তারিখ পুরস্কার বিতরণী ও সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ছিল। পুরস্কার বিতরণী একটু দেরীতে শেষ হওয়ায় বিকালে শুরু করে সন্ধ্যায় শেষ হয়ে যায়।

শেষের দিকে ২ থেকে ৩ মিনিট ছিল এ অবস্থায় এস.এস.সি পরীক্ষার্থী ২০২৫ যারা তাদের একটা অভিনয় যেটা তারা তাদের আমাকে বলছে স্যার এটি ভূতের অভিনয়। অভিনয় পারফরমেন্স করবে। এখানে সেই অভিনয়টাকে কেন্দ্র করে আসলে ফেসবুক বা যোগাযোগ মাধ্যমে যে কথা গুলো হয়েছে সেগুলো তাদের (শিক্ষার্থীদের) অনুভূতিতে আঘাত লাগছে।

সামাজিক মাধ্যমে যে বোরখা শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে এটি শিক্ষার্থীদের নিজেদের বানানো পোশাক, বোরখা না শিক্ষার্থীগণ বলছেন। ফেসবুকে যে বোরখা লেখা হয়েছে শিক্ষার্থীদের কথার প্রেক্ষিতে সেটি বোরখা নয় অভিনয়ের পোশাক ছিল।

পরিশেষে তিনি প্রতিষ্ঠান চালানোর দায়ে এই দায়ভার কিছুটা তার ঘাড়ে এসে পড়ে যাওয়ায় এবং এটি অনাকাঙ্খিত অপ্রত্যাশিত যেটি কোনো ভাবেই তিনি চায়নি। এরপরেও তিনি অত্র বিদ্যালয়ের স্বার্থে সকলের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেন এবং ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখার আহবান জানান।

‘অনেকেই এই পোশাককে খ্রিষ্টীয় ধর্মযাজক নানদের পোশাক বলে মন্তব্য করছেন সাংবাদিকের এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, একটা বাচ্চা কোনটা খ্রিষ্টীয় ধর্মের কোনটা যাজকদের সেটা কিন্তু তারা বলতে পারবেনা। আমাকে জাস্ট যখন বলছে এটি ভূতের পোশাক ভূতের অভিনয় তখনই ধরে নিয়েছি এটা ভূতের অভিনয় করতেছে এটুকিই। তাদেরকে (শিক্ষার্থীদের) আমরা প্রতিষ্ঠান থেকে বলা হয়নি তোমরা এই পোশাক গুলো পরো ওরাও আমাদের কাছে আসেনি কোনো সময়।’

এ ব্যাপারে জানার জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফজলে রাব্বিকে মুঠোফোনে কল করলে কলটি রিসিভ না হওয়ায় কথা বলার সুযোগ হয়নি।