পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় কৃষি অফিসের অনিয়মের সংবাদ প্রকাশ করায় সাংবাদিককে লাঞ্ছিত

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলা কৃষি অফিসের অনিয়মের সংবাদ প্রকাশের জেরে রনি মিয়াজী নামে এক গণমাধ্যম কর্মীকে হুমকি ও লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে।
বুধবার (২৩ এপ্রিল) দুপুরে জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলা পরিষদ চত্বরের কৃষি অফিস সংলগ্ন পাকা সড়কে এ ঘটনাটি ঘটে
জানা গেছে, রনি মিয়াজী যমুনা টেলিভিশনের পঞ্চগড় প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত।
জানা যায়, গত কিছু দিন আগে তেঁতুলিয়া উপজেলা কৃষি অফিসের অনিয়মের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করেন সাংবাদিক রনি মিয়াজীসহ কয়েকজন সাংবাদিক।
পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য সাংবাদিক রনি মিয়াজী তেঁতুলিয়া উপজেলা পরিষদ চত্বরে গেলে এসময় উপজেলা কৃষি অফিসের উপ-সহকারী মির্জা শাহরিয়ার রাজীব সাংবাদিক রনি মিয়াজীর মোটর সাইকেল গতিরোধ করেন এবং কৃষি অফিসসহ তার বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশের কারনে ক্ষিপ্ত হয়ে তার মোটর সাইকেল থেকে সড়কে দাড়ান।
এসময় তিনি ওই সাংবাদিক অসামঞ্জস্য কথাবার্তা ও লাঞ্ছিতের চেষ্টা করেন। এদিকে তার কিছুক্ষণ পর কৃষি অফিসের উপ-সহকারী ইলিয়াস ফারুক, মোসাদ্দেকুর রহমান, উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা আব্দুল মোতালেব, অফিস সহাকারী-কাম-কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক মশিউর রহমান।
পরবর্তীতে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা জীবন ইসলামসহ অন্য উপসহকারীসহ কৃষি অফিসের লোকজন সাংবাদিক রনি মিয়াজীকে ঘিরে ফেলেন। পরে বিভিন্ন কথাবার্তা, উল্টোপাল্টা প্রশ্ন ও লাঞ্ছিত করেন।
এসময় উপসহকারী ইলিয়াস ফারুক ও মশিউর রহমান মুঠোফোনে ভিডিও ধারণ করতে থাকেন এবং কৃষকের দেয়া বক্তব্য ডিলিট করতে আক্রমনাত্মক কর্তবার্তা ও হুমকি দেন উপসহকারী ফারুক। এদিকে স্থানীয় সাংবাদিক ও স্থানীয়দের লোকজনের উপস্থিতি পেলে সাথে সাথে কথার মোড় ঘুড়িয়ে নেন কৃষি অফিসের লোকজন।
পরে ঘটনাস্থল থেকেই বিষয়টি জেলা কৃষি অফিসের ডিডিকে মুঠোফোনে অবগত করেন সাংবাদিক রনি মিয়াজী। এছাড়াও মৌখিক ভাবে সাথে সাথে তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিসে গিয়ে তিনি স্ব-শরীরে উপস্থিত হয়ে বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে মৌখিক ভাবে অভিযোগসহ তেঁতুলিয়া মডেলা থানায় অবগত করেন।
এদিকে একজন গনমাধ্যমকর্মীকে আটকিয়ে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন জেলা ও উপজেলার স্থানীয় গনমাধ্যমকর্মীরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
এর আগেও সংবাদ প্রকাশের জেরে রনি মিয়াজীর বিরুদ্ধে তেঁতুলিয়া কৃষি অফিসার তামান্না ফেরদৌস ডিসি বরাবরে একটি মিথ্যা অভিযোগও দাখিল করেন।
এ বিষয়ে সাংবাদিক রনি মিয়াজী জানান, আমি পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য তেতুলিয়া উপজেলা পরিষদের চত্বরে গেলে উপজেলা চত্বরের কৃষি অফিসি সংলগ্ন পাকা সড়কে হঠাৎ উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা রাজিব মোটর সাইকেল যোগে এসে আমার মোটর সাইকেল গতিরোধ করেন।
এসময় তিনি কৃষি অফিস ও তার বিরুদ্ধে নিউজ করায় তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে বিভিন্ন কথাবার্তা বলেন। পরে কৃষি অফিসের অন্য লোকজন এসে আমাকে ঘিরে ধরেন এবং বিভিন্ন উল্টাপাল্টা কথা বলে ভিডিও করা শুরু করেন।
পরে কৃষি অফিসের ইলিয়াস ফারুক নামে এক লোক আমাকে আমার ক্যামেরায় থাকা ভিডিও ধারন করা বক্তব্য ডিলিট করতে হুমকি দেন। এসময় আমার সহকর্মী ও স্থানীয় লোকজনের উপস্থিতি হতে না হতেই তারা সুর পাল্টান। আমি সাথে ডিডি, ইউএনও ও থানায় মৌখিক ভাবে বিষয়টি অবগতি করেছি।
কৃষি অফিস তাদের অনিয়ম ঢাকতেই এবং আমি তাদের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করায় তারা আমার বিরুদ্ধে এমন কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছেন।
এ ব্যাপারে পঞ্চগড় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. আব্দুল মতিন বলেন, এ বিষয়ে রনি মিয়াজী ও অফিস থেকে হোয়াটসঅ্যাপে ভিডিও পাঠিয়েছেন এবং রনি মিয়াজী মুঠোফোনে অবগত করেছেন।
বিষয়টি অনাকাক্সিক্ষতভাবে ঘটেছে। সাংবাদিক যেকোনো তথ্য নিতে পারবেন এতে অনুমতি লাগবে এমন কোনো নির্দেশনা নেই এবং সংবাদকর্মীদের কাজে বাধা দেয়ারও নির্দেশনা বলা হয়নি। কিছু দিন ধরেই রনি মিয়াজীর সঙ্গে অফিসের মিল হচ্ছেনা কেন, বিষয়টি বুঝে উঠতে পারছেন না তিনি এমনটি জানিয়ছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার তামান্না ফেরদৌসকে মুঠোফোনে কল করা হলে কলটি রিসিভ না হওয়ায় যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন


















