পঞ্চগড়ে সংবাদ প্রকাশ করায় সাংবাদিকের উপর ইউপি সদস্যের হামলা
সৃষ্টি টেলিভিশন , দৈনিক মানবাধিকার সংবাদ ভাবনা পত্রিকার পঞ্চগড় জেলা প্রতিনিধি, সাংবাদিক উমর ফারুকের উপর সন্ত্রাসী হামলায় ৫ ঘন্টা অবরুদ্ধ করে রাখে ইউপি সদস্য তরিকুল ইসলাম ।
পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার কাজল দিঘি কালিয়াগঞ্জ ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য তরিকুল ইসলাম কৃষকের কথা বলে ১০ বস্তা সার এনে দোকানে নিজেই বিক্রি করার সময় হাতেনাতে ধরা পড়েন জনগণের কাছে ।
এ সময় সাংবাদিক উমর ফারুক জনগণের কাছ থেকে অভিযোগ নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করায় গত ( ৫ জানুয়ারি ) ২০২৩ সন্ধ্যায় উপজেলার কাজল দিঘী কালিয়াগঞ্জ ইউনিয়নের উৎকুরা বাজার নামক স্থানে তার চেম্বারে সাংবাদিক উমর ফারুকের উপর হামলা চালিয়ে ৫ ঘন্টা অবরুদ্ধ করে দীর্ঘ সময় ধরে নির্যাতন চালায় ইউপি সদস্য তরিকুল ইসলাম ও তার বাহিনীরা। তরিকুল ইসলাম ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য। এ সময় আহত অবস্থায় সাংবাদিক উমর ফারুককে উদ্ধার করেন পঞ্চগড় রিপোর্টার্স ক্লাবের সভাপতি , সেলিম সোহাগ, সাধারণ সম্পাদক , সাইদুজ্জামান রেজা , দৈনিক লাহোকন্ঠ পত্রিকার পঞ্চগড় জেলা প্রতিনিধি তোতা মিয়া, দৈনিক ইনকিলাব পত্রিকার পঞ্চগড় জেলা প্রতিনিধি সম্রাট হুসাইন উদ্ধার করে স্থানীয় চিকিৎসক দ্বারা প্রাথমিক চিকিৎসা করান এবং পরের দিন পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নেন ।
এ বিষয়ে উমর ফারুক নিজে বাদী হয়ে বোদা থানা ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগে বলা হয় গত ৩০ নভেম্বর ২০২২ তারিখে সরকারি সার নিয়ে স্থানীয় অভিযোগকারীদের বক্তব্যে সম্বলিত সঠিক তথ্য প্রমাণ উপস্থাপন করে সৃষ্টি টিভি , দৈনিক মানবাধিকার সংবাদ ও দৈনিক প্রথম সংবাদ পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ করেছিলেন , সংবাদ প্রকাশের পর থেকে ইউপি সদস্য তরিকুল ইসলাম সংবাদ কর্মীর বাসায় এসে বিভিন্ন মাধ্যমে বিভিন্ন প্রকার লোভ লালসা দেখায় এবং লোভ লালসা প্রত্যাখ্যান করার কারণে , সাংবাদিক উমর ফারুককে বাসায় এসে প্রাণে মারার হুমকি দেয় এবং মোবাইল ফোনেও বিভিন্ন প্রকার হুমকি দিতে থাকে ইউপি সদস্য তরিকুল ।
অভিযোগে আরও বলা হয়েছে , ৫ জানুয়ারি ২০২৩ তারিখে অনুমান সন্ধ্যা ছয়টা ৩০ মিনিটে রাব্বি নামে তার এক বন্ধুকে নিয়ে বাসা থেকে কালিয়াগঞ্জ বাজার যাওয়ার সময় উৎকুরা নামক বাজারে উপর দিয়ে যাওয়ার সময় ইউপি সদস্য তরিকুল ইসলাম মোটরসাইকেলের সামনে এসে দাঁড়ায় এবং শার্টের কলার ধরে চর থাপ্পর মারতে মারতে তার উৎকুরা বাজারে বসার চেম্বারে নিয়ে যায় এবং কিছুক্ষণ পরেই কাজল দিঘী কালিয়াগঞ্জ ইউনিয়নের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা রিফাত কবির এসে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে । এবং বলেন তোকে নিউজ করতে মানা করেছিলাম তারপর নিউজ কেন করলি । তরিকুল ইসলাম জানায় যে তোর প্রকাশিত সংবাদ এর কারণে উপজেলা অফিসে বিষয়টি ধামাচাপা দিতে আমার ৪০ হাজার টাকা খরচ হয়ে গেছে সেটা আমাকে এক্ষুনি ফেরত দিতে হবে, টাকা না দিলে তোকে ল্যাংটা করে বাজারে ঘুরানো হবে এবং তরিকুল ইসলামের কথামত তার ২ ভাই শরিফুল ইসলাম এবং একরামুল হককে বলেন যে এখনই ১০০ টাকার মূল্যের দুটি স্ট্যাম্প নিয়ে আসো আমার হাওলাতনামা লিখিয়া নিতে হবে।
এ সময় সাংবাদিক উমর ফারুকের মোটরসাইকেলের চাবি , দুটি এন্ড্রয়েড মোবাইল ফোন ,এবং ব্যবহৃত ক্যামেরা কেড়ে নেয় , এবং তরিকুল ইসলাম একটি এন্ড্রয়েড মোবাইল ফোন এবং ক্যামেরা মাটিতে আসার মেরে ভেঙ্গে ফেলে এবং তার ভাই বাঁশের লাঠি দিয়ে মোটরসাইকেলের হেডলাইট ও কভারগুলো ভেঙ্গে দেয় । এতে কম করে হলেও প্রায় ৮০ হাজার টাকা ক্ষতি সাধন হয়েছে । এর থেকেও একটি জঘন্য কাজ করেন তরিকুল ইসলাম তিনি ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা রিফাতকে হুকুম করে বলেন ফারুকের ছবি ব্যবহার করে ওর ফেসবুক আইডিতে লেখ যে ৩০ নভেম্বর কাজল দিঘী কালিয়াগঞ্জ ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য তরিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে ১০ বস্তা সারের কথা বলে যে নিউজটি প্রকাশ করেছিলাম তা সত্য নয় । আসলে এটা প্রনোদনা সার নয় , এটি ডিলারের সার এই নিউজটি করে যাতে তার সুনাম ক্ষুন্ন হয় উনাকে ভুল বুঝবেন না উনি সততার সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন , আমি মোঃ উমর ফারুক এজন্য দেশবাসীর কাছে আমি ক্ষমাপ্রার্থী আপনারা দোয়া করবেন যাতে বাকি জীবনে আর কোন ভুল ও মিথ্যা নিউজ না করি , এই পোস্টটি উমর ফারুকের ফেসবুক আইডি তরিকুল ইসলামের কথামতো কৃষির বিএস রিফাত করায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে , এখনো তরিকুল ইসলাম বিভিন্ন facebook গ্রুপে এবং নিজের আইডিতে এই পোস্টটি করতেছে এবং উমর ফারুকের সম্মানহানির কারণ হচ্ছে ।
এখন এমন অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে যে ফারুকের আত্মহত্যার ছাড়া আর কোন পথ খোলা নেই । এ সময় তার ভাই শরিফুল ইসলাম দুটি ১০০ টাকা মূল্যের স্ট্যাম্প এনে জোরপূর্বক সই করে নেয় । উমর ফারুক এ সময় বলেন আমার কাছ থেকে দুটি ফাঁকা স্ট্যামে সই করে নিয়েছে , তরিকুল ইসলাম এই দুটি স্ট্যাম্প ব্যবহার করে আমাকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে । তারা আমাকে সন্ধ্যা ৬: ৩০ থেকে রাত ১১ টা পর্যন্ত জোরপূর্বক ইউপি সদস্য তরিকুলের চেম্বারে আটক রেখে দীর্ঘ সময় ধরে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেন এ সময় পঞ্চগড় থেকে কয়েকজন সাংবাদিককে দেখামাত্রই উৎকুরা বাজারের পাশে প্রাইমারি স্কুল মাঠে রেখে পালিয়ে যায় ।
এ সময় সাংবাদিকরা আমাকে উদ্ধার করে প্রাথমিকভাবে স্থানীয় চিকিৎসা করান । পরের দিন আমার শারীরিক অবস্থা অবনতি হলে পঞ্চগড় সদর হাসপাতালে চিকিৎসা ভর্তি হই । এ বিষয়ে বোদা থানার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সুজয় কুমার রায় জানান, এ বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন