পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় মক্কার ডাঙ্গী কবরস্থানে ভাঙচুর ও গাছ কাটার অভিযোগ
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলায় আক্রোশমূলকভাবে ও কবরস্থান জবর দখর করার উদ্দেশ্যে কবরস্থানের কবর ভাঙচুর ও গাছ কেটে সয়লাব করার লিখিত অভিযোগ উঠেছে। এতে ঘাস নষ্ট হওয়ার কিটনাশক দ্বারা প্রায় শতাধিক কবরের ফুটকির গাছ মেরে ফেলেছেন আমির হামজা গংরা।
এ ঘটনায় ৮ জনের নাম উল্লেখ করে কালদাসপাড়া জামে মসজিদের পক্ষে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর অভিযোগ করেছেন সাংবাদিক মুহম্মদ তরিকুল ইসলাম। এদিকে এ ঘটনায় ক্ষোভ বিরাজ করছে অত্র কালদাসপাড়া গ্রামের মধ্যে।
ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার ৫নং বুড়াবুড়ি ইউনিয়নের কালদাসপাড়া গ্রামের মক্কার ডাঙ্গী নামক কবরস্থানে। এ ঘটনায় শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর ২০২১) মামলা দায়েরের ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ওই কবরস্থানের পশ্চিম পার্শ্বে আমির হামজাগংরা কবরস্থানের প্রায় দেড় একর জমির কবর ভেঙে সমান করে আবাদে রয়েছেন। আরোও জানা যায়, ড্রেজার মেশিন চলাকালীন তাঁরা ভেঙে যাওয়া কবরস্থানে ড্রেজার মেশিন চালানো ব্যক্তির কাছ থেকে কমিশন নিয়ে আঙুল ফুলে কলা গাছে পরিণত হয়েছেন।
অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বুড়াবুড়ি ইউপির কালদাসপাড়া গ্রামটি কাটাপাড়া মৌজার জে.এল নং ২২ এর মালিকাধীন এসএ ১০৩ নং দাগের ৬ একর ৭৪ শতক জমির মধ্যে প্রায় ৫একর জমি যুগ যুগ ধরে কবরস্থান হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে। বর্তমানে এই কবরস্থানে হাজার হাজার মানুষ সমাহিত রয়েছে। দীর্ঘদিনের ব্যবহৃত এই কবরস্থানটি কালদাসপাড়া বালাবাড়ি (ডাঙ্গী) গ্রামের মৃত আবু বক্কর সিদ্দীকের ছেলে আমির হামজা (৪২) একই গ্রামের মৃত মনিরুজ্জামানের ছেলে আব্দুল গণি (৪৫), মানিক (৫০), কালাম (৪৭), মানিকের ছেলে রফিকুল(৩০) ও হাবিব(২৮), কালামের ছেলে হেলাল(২৭), আব্দুল গণির ছেলে মাজেদুল(২৮) গত ৯ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) সকাল আনুমানিক ১১টায় সবার অগোচরে আক্রোশমূলক ও অন্যায়ভাবে কবরস্থানে অনধিকার প্রবেশ করে দলবদ্ধ হয়ে কবরের উপর বেড়ে উঠা ফুটকির গাছগাছালি এবং বড় আকৃতির গাছ কেটে সয়লাব করে ফেলেন এবং কবরগুলো হালচাষ গাড়ি দ্বারা ভেঙে নিশ্চিহ্ন করেন। এছাড়াও ঘাস নষ্ট হওয়ার কীটনাশক দ্বারা কবরের গাছপালার ব্যাপক ক্ষতিসাধন করেছেন।
অভিযোগকারী সাংবাদিক তরিকুল ইসলাম বলেন, আমি ঘটনারদিন পঞ্চগড় কোর্টে অবস্থান করলে গ্রামের মৃত সফিরুলের ছেলে মতিরুল ইসলাম মুঠোফোনে জানান উল্লেখিত ব্যক্তিগণ কবরস্থানের গাছ ও কবর ভেঙে গুড়িঁয়ে দিয়েছেন। পরের দিন (১০ ডিসেম্বর) জুম্ম নামাযের পর তিনিসহ জামাতের আরো কয়েকজন দেখতে গেলে ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত হোন এবং প্রমাণ সরুপ ভিডিও ফুটেজ সহ ছবি তোলে রাখেন। আরোও বলেন, সেদিনই তিনি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট বিষয়টি অবহিত করলে ইউএনও মহোদয় একটি লিখিত অভিযোগ করতে বলেন। অতঃপর ১২ ডিসেম্বর তিনি ৮জনকে বিবাদী করে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন।
কালদাসপাড়া জামে মসজিদ কমিটিসহ গ্রামের অন্যান্য লোকজন ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, তাঁরা বাপ-দাদাদের পর যুগ যুগ ধরে এই কবরস্থান ব্যবহার করে আসছেন। এই কবরস্থানটি কয়েক বছর আগে পাঁচ গ্রামের মানুষ ব্যবহার করতেন। এখন মসজিদ বিভক্ত হওয়ার সঙ্গে কবরস্থানও আলাদা হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। তারই সুযোগসন্ধানে এই ভূমিদস্যুরা ইসলাম ধর্মের বিধান সম্পর্কে জ্ঞাত থাকার পরেও কবরস্থানের কবর ভেঙে দিয়েছেন এবং অমনা অমনি কবরের উপর বেড়ে উঠা ফুটকি ও বড় ধরণের ঝিংলীর গাছ গুলো কেটে কালদাসপাড়া গ্রামের সকল মানুষকে ব্যতিত করেছেন। তাঁরা বলেন, আমির হামজারা দুনিয়াবি আইনসহ ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত এনেছেন। তাদের এই কার্যকলাপে গ্রামবাসি দ্রুত বিচারের দাবি তুলেছেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সোহাগ চন্দ্র সাহা বলেন, তিনি লিখিত অভিযোগটি নজরে নিয়ে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করতে চেয়েছেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন