পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধায় র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট শুরু
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় চীনের ওমিক্রন সাব-ভ্যারিয়েন্ট বিএফ-৭ এর সংক্রমণ ঠেকাতে দেশের একমাত্র চতুর্দেশীয় (বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল ও ভূটান) বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর চেকপোস্টে করোনা শনাক্তের র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট শুরু হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) সকাল থেকে বন্দরটির ইমিগ্রেশনে ভারত-নেপাল-ভুটান থেকে আসা যাত্রীদের করোনার টেস্ট কার্যক্রম শুরু হয়।
বুধবার সকালে (৪ জানুয়ারি) সরেজমিনে বাংলাবান্ধা চেকপোস্টের হেলথ স্ক্যানিং বুথে দেখা যায়, ভারত, নেপাল ও ভুটান থেকে আসা যাত্রীদের র্যাপিড এন্টিজেন টেস্ট করানো হচ্ছে। তবে বন্দরের ইমিগ্রেশন ও কাস্টমসের তল্লাশি কেন্দ্রের মধ্যে ও ইমিগ্রেশন এলাকায় বেশিরভাগ মানুষের মুখে মাস্ক পরতে দেখা যায়নি। তবে কয়েকজন পাসপোর্ট যাত্রীদের মাস্ক পরে আসতে দেখা গেছে।
স্থলবন্দর সূত্র জানায়, চীনে করোনার নতুন ওমিক্রন ধরণের বিএফ-৭ উপধরণের কারণে বেশ কয়েকটি দেশে এর সংক্রমণ ঘটেছে। প্রতিবেশি দেশগুলোতে এ ধরণের পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ায় দেশের অন্যান্য স্থলবন্দরের মতো চতুর্দেশী বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। যেহেতু এ বন্দরে ভারত, নেপাল ও ভুটানের সাথে বাণিজ্য ও ইমিগ্রেশন রয়েছে, সেহেতু সেসব দেশের পণ্যবাহী গাড়ির চালক ও হেল্পারদের করোনা পরীক্ষা করতে র্যাপিড এন্টিজেন টেস্ট চালু করা হয়েছে। এক্ষেত্রে সন্দেহজনক কোনো রোগী শনাক্ত হলে তাকে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনে রাখাসহ নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকার আইসিডিডিআরে পাঠানো হবে।
তেঁতুলিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ল্যাড বিধান কৃষ্ণ সামন্ত জানান, গতকাল (৩ জানুয়ারি) প্রথম দিনে ৪৭ যাত্রীর র্যাপিড অ্যান্টিজেন করোনা টেস্ট করা হয়েছে। আজ (৪ জানুয়ারি) দুপুর ১টা পর্যন্ত ২০ যাত্রীর টেস্ট করা হয়েছে। তবে এদের মধ্যে কেউই করোনা পজিটিভ ছিলেন না।
নেপাল ও ভারত থেকে আসা পাসপোর্টধারী যাত্রী অভয় কুমার সাহামি ও পলেজ কুমার রাম জানান, ভারত থেকে আসলাম। সেখানে কোনো করোনা টেস্ট করাতে দেখিনি। বাংলাবান্ধায় এসে করোনা টেস্ট করানো হলো। তবে এটা ভালো দিক। নিজেও নিশ্চিত হতে পারছি অপরকেও সচেতন করা যাচ্ছে।
বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের ব্যবসায়ীরা জানান, করোনার নতুন ওমিক্রন ধরনের ভেরিয়েন্ট বিএফ-৭ এর জন্য ভারত, নেপাল হতে আগত যাত্রীদের বাংলাবান্ধা ইমিগ্রেশনে নতুন করে টেস্ট শুরু হয়েছে। আমরা যারা ব্যবসায়ী রয়েছি তারাও এ বিষয় মাস্ক পরিধানসহ অন্যান্য বিষয়ে সর্তক আছি।
বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর লিমিটেডের ম্যানেজার আবুল কালাম আজাদ বলেন, করোনার অমিক্রনের নতুন ধরন বিএফ-৭ উপধরনের দেখা দিয়েছে। এ নিয়ে গত ৩০ ডিসেম্বর সমš^য় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় ওমিক্রণের নতুন ধরণ মোকাবেলায় বন্দরে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। মাইকিং, লিফলেট বিতরণ ও ব্যানারের মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। এ জন্য বন্দরের কর্মকর্তা, কর্মচারী, শ্রমিক ও বিভিন্ন পণ্যবাহী ট্রাকের চালক ও হেলপারদের মাস্ক ব্যবহার করতে হলা হচ্ছে।
বাংলাবান্ধা ইমিগ্রেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো.নজরুল ইসলাম বলেন, সম্প্রতি চীনে অমিক্রনের সাব-ভ্যারিয়েন্ট বিএফ-৭ এর সংক্রমণ দেখা দেওয়ায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট শুরু করা হয়েছে। এই ভাইরাস যেন বাংলাদেশে প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য ভারত থেকে আগত যাত্রীদের করোনা টেস্ট করনো হচ্ছে।
জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোঃ রফিকুল হাসান বলেন, সম্প্রতি চীনে ওমিক্রনের সাব-ভ্যারিয়েন্ট বিএফ-৭ এর সংক্রমণ দেখা দেওয়ায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে র্যাপিড এন্টিজেন টেস্ট শুরু করা হয়েছে। এই ভাইরাস যেন বাংলাদেশে প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য ভারত, নেপাল ও ভুটান থেকে আগত সন্দেহজনক যাত্রীদের ব্যাপারে হেলথ স্ক্রিনিং জোরদার করা হয়েছে।
যারা ভারত, নেপাল ও ভুটান থেকে বাংলাবান্ধা ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করবেন তাদেরকে করোনা টেস্ট করা হবে। এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবেন বলে জানানো হয়েছে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন