সর্বভৌমত্বের উত্তরের সীমান্ত পাঁচ জেলায় রেকর্ড পরিমাণ চা উৎপাদন বেড়েছে জানান পঞ্চগড় আঞ্চলিক চা বোর্ড। চলতি মৌসুম ২২-২৩ অর্থ বছরে বিগত বছর গুলোকে ছাড়িয়ে রেকর্ড পরিমাণ চা উৎপাদন বেড়ে দাড়িয়েছে ৩২ লক্ষ ১৯ হাজার ২২৬ কেজি।

বর্তমান অর্থ বছরে যার পরিমাণ ধরা হয়েছে ১ কোটি ৭৭ লক্ষ ৫৯ হাজার কেজি যার বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় ২৭০ কোটি টাকা। গত অর্থ বছরে ২০২১ সালে উৎপাদন হয়েছিল ১ কোটি ৪৫ লক্ষ ৪০ হাজার কেজি চা। শুধু উত্তরাঞ্চলে সমতলের চা বাগান ও ক্ষুদ্র চা চাষ থেকে এ রেকর্ড পরিমাণ চা উৎপাদন হয়েছে। যা সাফল্যের ধারাবাহিকতার এক অন্যতম মাইলফলক।
পঞ্চগড় আঞ্চলিক কার্যালয় চা বোর্ড সূত্রে জানা যায়, উত্তরাঞ্চলে পাঁচ জেলায় সমতলের চা বাগান ও ক্ষুদ্র চা চাষ থেকে এখন পর্যন্ত ৯ টি নিবন্ধিত ও ২১ টি অনিবন্ধিত বড় চা বাগান (২৫ একরের বেশি ) বাগান রয়েছে।

এ ছাড়াও ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র চা বাগান আরও রয়েছে প্রায় ৮ হাজার ৩ শত ৫৫টি এ নিয়ে উত্তরের পাঁচ জেলা গুলোতে ১২ হাজার ৭৯ একর সমতল ভূমিতে চা চাষ হচ্ছে এবং এই সব চা বাগান গুলোতে বেকার কর্মসংস্থান সৃস্টি হয়েছে প্রায় ৭২০০ চা শ্রমিক।

এদিকে পাঁচ জেলার মধ্যে পঞ্চগড় ও ঠাকুরগাও জেলায় এ পর্যন্ত ৪৮ টি চা প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা লাইসেন্স নিয়েছে। এর মধ্যে ২৫টি চা কারখানা উৎপাদন চলমান রয়েছে। এই সব কারখানা প্রান্তিক চা চাষিদের কাজ থেকে সবুজ কাচাঁ চা পাতা সংগ্রহ করে চা উৎপাদন করছে। উৎপাদন কৃত চা নিলাম বাজারে চট্রগ্রাম ও শ্রীমঙ্গলে বিক্রির জন্য পঞ্চগড়ের কারখানা মালিকদের প্রায় সময় লোকশান গুনতে হয় বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কারখানার মালিকগণ। মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর ঘোষণা মতে পঞ্চগড়ে অকশন বোর্ড চালুর প্রক্রিয়াধীন অবস্থায় রয়েছে জানিয়েছে পঞ্চগড় আঞ্চলিক চা বোর্ড।

বর্তমানে এই জেলা গুলোতে সমতল ও ক্ষুদ্র চা বাগানের ছাটাই,সার প্রয়োগ ও পরিচর্চা চলছে। মার্চ ও নভেম্বর মাস থেকে চা উৎপাদনের মূল সময় ধরা হয়।

পঞ্চগড় আঞ্চলিক কার্যালয় চা বোর্ড উন্নয়ন কর্মকর্তা মোঃ আমির হোসেন বলেন , সমতল ভূমিতে চা চাষের জন্য পঞ্চগড় ও এর পার্শ্ববর্তী জেলাগুলো অতন্ত সম্ভাবনাময়। ক্রমেই উত্তরাঞ্চলে চা চাষ ও উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে।

চা চাষ সম্প্রসারণের জন্য চাষিদের বিভিন্ন সহায়তার মাধ্যমে উৎসাহিত করা হচ্ছে এবং মাঝে মাঝেই চাষিদের নিয়ে বিভিন্ন এলাকায় কর্মশালা করা হচ্ছে। চাষিদের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সমাধানের জন্য ‘দুটি পাতা একটি কুঁড়ি’ নামে একটি মোবাইল অ্যাপস চালু করা হয়েছে।

চা গবেষণার জন্য এ আঞ্চলিক কার্যালয়ে একটি টি ল্যাবরেটরি স্থাপন করা হয়েছে। যেখানে চা চাষিদের বিভিন্ন সমস্যা সমাধান, চায়ের রোগবালাই ও পোকা দমনে বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।