পটুয়াখালির কলাপাড়ায় জেলে কার্ডের চাল পাচ্ছে মেম্বরের ভাড়াটিয়া

মসজিদ ছুয়ে ভোট দেয়ার প্রতিশ্রæতি দিলেই পাওয়া যাবে সরকারি চালের স্লিপ। আর জাটকা ধরা বন্ধে জেলেরদের মধ্যে নিয়মানুযায়ী ৮০ কেজি করে (ভিজিএফ) চাল প্রদানের কথা থাকলেও মেম্বরের অনুসারিরাই কেবল পাচ্ছেন সঠিক ওজনের চাল।

তবে ইউপি নির্বাচনে তার বিরোধিতা করেছেন এমন জেলেরা পাচ্ছেন মাত্র ৪০ কেজি। আর জেলে পেশায় নিয়োজিত নয় এমন শাতাধিক ব্যক্তির মাঝে চাল বিতরণের অভিযোগ থাকলেও মেম্বরের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে পারছেন নিরহ জেলেরা।

এছাড়া ওই ইউপি সদস্যের ফসলী ক্ষেতে ডাল তোলার কাজে নিয়োজিত এমন মানুষকে ঘরে বসেই চালের স্লিপ দিচ্ছেন মেম্বর পত্নী। কারো তোয়াক্কা না করেই দীর্ঘদিন ধরে এই কর্মকান্ড করছেন এই ইউপি সদস্য, এমন শতাধিক অভিযোগ তার বিরুদ্ধে।

পটুয়াখালীর মহিপুর সদর ইউপির ৫ নং ওয়ার্ডর সদস্য মো. সোবাহান। স্থানীয়দের কাছে বানরা সোবাহান নামেই পরিচিত তিনি। তবে জেলে সহায়তা বন্টনে অনিয়ম আর নিজস্ব ভাড়াটিয়াদের মধ্যে তালিকা বিহীন চাল দিয়ে গোটা বন্দরজুড়ে সমালোচনার ঝড় তুলেছেন। শুধু তাই নয়, তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে কথা বলায় জেলে কার্ড নিয়ে যাওয়ার মত গুরুতর অভিযোগ এই মেম্বরের বিরুদ্ধে।

সোমবার অনুসন্ধ্যানে গেলে সরেজমিনে গনমাধ্যম কর্মীদের সামনে ক্যামেরা বন্ধ রেখে ভুক্তভোগীকে চাল দেওয়ার আশ্বাস দেন এই ইউপি সদস্য। স্থানীয় বাসীন্দা ও শতাধিক জেলেদের অভিযোগ, মহিপুর ইউনিয়নে শধুমাত্র এই নজীবপুর ওই মেম্বরের ওয়ার্ডেই প্রতিবার ঘটছে এমন অনিয়মের ঘটনা।

ভুক্তভোগী ইলিশ শিকারি জেলে জালাল ফরাজী বলেন, দীর্ঘ ২৬ বছর সমুদ্রে মাছ শিকারে নির্ভরশীল তিনি। মেম্বর সোবাহান একবার চাল দেওয়ার কথা বলে ৫ বছর আগে তার জেলে কার্ড নিয়ে গেছে। এরপর থেকে তাকে আর কার্ড ফেরত দেয়নি। তার অভিযোগ, তালিকায় নাম থাকলেও তাকে ইচ্ছে করে বি ত করছেন সোবাহান।

এফবি সজীব ট্রলারের মাঝি জাকিরের অভিযোগ, তালিকায় নাম রয়েছে কিন্তু তাকেও চাল দেওয়া হচ্ছে না বহুদিন। এদিকে তালিকাভুক্ত জেলেদের চাল না দিয়ে মেম্বরের ঘরের ১৫শ টাকার ভাড়াটিয়া মাহিনুর বেগমকে চালের স্লিপ দিয়েছেন তিনি। জানতে চাইলে ওই নারী জানান, আমি মেম্বরের বাসায় ভাড়া থাকি। মামানি (মেম্বরের স্ত্রী) এই রকম একটা কইরা স্লিপ আমাগো দেয়। তবে এই নারীকে দেওয়া স্লিপে লেখা রয়েছে সোহেল নামে অন্য এক জেলের নাম।

স্থানীয় সুমনের অভিযোগ, তার নামেও জেলে কার্ড রয়েছে। তবে আর্থিক স্বচ্ছলতা থাকায় অমি কখনো চালের দাবী করিনি। কিন্তু মেম্বর সোবাহান সেই সব মানুষকেই চালের স্লিপ দেয় যারা মসজিদ ছুয়ে তাকে ভোট দেওয়া প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এছাড়া তার জমিতে ডাল তোলে তাদেরকেও দিচ্ছে ভিজিএফ সুবিধা। ফলে প্রকৃত জেলেরা সরকারী এই সুবিধা থেকে বি ত হচ্ছে।

এবিষয়ে সরেজমিনে মেম্বরের কাছে জানতে চাইলে তিনি সদুত্তর না দিয়ে সংবাদ কর্মীদের বসতে বলেন। তবে উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, বিষয়গুলো শুনতে দুঃখ জনক। আমদের তরফ থেকে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রবিউল ইসলাম বলেন, জেলেদের অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। কারন জেলে চাল ভিন্ন খাতে দেওয়ার কোন সুযোগ নেই।