পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় নিস্ক্রিয় আইন প্রয়োগকারী সংস্থা!বাড়ছে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, চুরি-ডাকাতি

পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় বেড়েই চলছে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, চুরি-ডাকাতি, দখল, হামলা সহ প্রান নাশের হুমকীর ঘটনা। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার নিস্ক্রিয়তায় ক্রমশ এমন কর্মকান্ড চলমান রয়েছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। আর থানা পুলিশের কাছে অভিযোগ দেওয়ার পরেও অভিযুক্তরা গ্রেফতার না হওয়ায় জনসাধারনের মাঝে উদ্বেগ, উৎকন্ঠা ছড়িয়ে পড়েছে। এতে আইন শৃংখলা পরিস্থিতির চরম অবনতির আশংকা করছেন সুশীল সমাজ সহ স্থানীয়রা।

গত ৫ আগষ্ট বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর থেকে সমগ্র উপজেলা জুড়ে এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া চি‎হ্নত সন্ত্রাসীদের হাতে থাকা বিভিন্ন সময়ে প্রদর্শিত একটি অবৈধ অস্ত্রও উদ্ধার না হওয়ায় আতংকের যেন শেষ নেই সাধারন মানুষের। তবে উদ্ভুত পরিস্থিতিতে বিএনপি নেতৃবৃন্দ জনাসাধারনের পাশে থাকার অঙ্গীকার ব্যক্ত করছেন। আর ইসলামী আন্দোলনের পক্ষ থেকে লুটতরাজ, চাঁদাবাজি, দখল, জুলুম, সন্ত্রাস বন্ধের আহবান জানানো হচ্ছে জোড়ালো ভাবে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কলাপাড়া পৌর শহরের মদিনাবাগ এলাকায় আইনজীবী নুরুজ্জামানের বাসায় দুর্ধর্ষ চুরি, শামিমা পারভিনের বাসায় দুর্ধর্ষ চুরি, বাদুরতলি এলাকায় মশিউর রহমান লিটুর বাসায় দুর্ধর্ষ চুরি, কুয়াকাটা পৌর এলাকায় হোটেল মালিক মানিক মিয়ার বাসায় অস্ত্রের মুখে ডাকাতি।

জামায়াত নেতা মাওলানা হাবিবের বাসায় দুর্ধর্ষ ডাকাতি সহ গত কয়েক সপ্তাহে উপজেলায় অসংখ্য চুরি ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। প্রতিকার পেতে থানায় অভিযোগও দিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। তবে অদ্যবধি থানা পুলিশ লুন্ঠিত মালামাল উদ্ধার কিংবা কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি।

সূত্রটি আরও জানায়, শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর কলাপাড়ায় সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়েছেন অন্তত: অর্ধশতাধিক মানুষ। বাসা বাড়িতে হামলা, অগ্নি সংযোগের ঘটনাও ঘটেছে। কুপিয়ে জখম করা হয়েছে অনেককে। নিরব চাঁদাবাজি সহ সংখ্যা লঘু নির্যাতনের একাধিক ঘটনা ঘটেছে। সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন অনেক জনপ্রতিনিধি।

মামলা, হামলার ভয়ে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেছেন অনেকে। এমনকি আদালতে এসে জামিন নিয়ে ৫ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবীর শিকার হয়ে সন্ত্রাসী হামলার ভয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত আদালতের মধ্যে সেইভ শেল্টারে থেকেছেন আলম হাওলাদার নামের এক ফরিয়াদী। আদালত কিংবা থানা পুলিশকে জানিয়েও কোন ফল হয়নি তার। অবশেষে এক জ্যেষ্ঠ বিএনপি নেতার হস্তক্ষেপে আদালত চত্বর থেকে রিলিজ হয়ে এলাকা ছাড়েন আলম হাওলাদার।

এদিকে চলমান পরিস্থিতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জ্যেষ্ঠ নেতা মুফতি হাবিবুর রহমানের বক্তব্য ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। মুফতি হাবিবুর রহমান বলেন, ৫ আগষ্টের পর বিএনপি’র কিছু নেতা-কর্মীরা জমি দখল, ঘের দখল, বাড়ি ঘর লুট, বাস কাউন্টার দখল, খেয়া ঘাট দখল, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর, মারা মারি, ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে, যার উপযুক্ত প্রমান আছে বলে দাবী তার।

তবে বিএনপি’র পক্ষ থেকে এসব অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। বিএনপি’র কোন নেতা-কর্মী এসব ঘটনার সাথে জড়িত নয় বলে দাবী করা হয়েছে। এমনকি দলীয় শৃংখলা ভঙ্গের অভিযোগে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা ইলিয়াছ মৃধা, মাসুম বিল্লাহ হৃদয়, যুবদলের মো. হাফিজুর রহমান পিন্টু গাজী, মো. রিয়াজ মৃধা, মো. জহিরুল ইসলাম মৃধা, মো. মাহবুব ফকির এর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।