পটুয়াখালী ঘুষ না দেওয়ায় পরিক্ষা বঞ্চিত শিক্ষার্থী, আদালতে শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা

অবশেষে পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় শিক্ষকের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন ক্ষতিগ্রস্থ শিক্ষার্থী সোহানের পিতা মো. আনোয়ার মৃধা। নামধারী স্কুল শিক্ষক হাসানকে অতিরিক্ত দশ হাজার টাকা ঘুষ না দেওয়ায় বোর্ড পরীক্ষা থেকে বঞ্চিত হয় কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের (ভোকেশনাল) ৯ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী মো. সোহান আসাদুল মৃধা।
চলতি বছরের বোর্ড পরীক্ষায় উজেলার ধানখালী পাঁচজুনিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভোকেশনাল শাখা থেকে অংগ্রহনের কথা ছিলো এই শিক্ষার্থীর। কিন্তু ওই বিদ্যালয়ের ভোকেশনাল কার্যক্রম পরিচালনাকারী মাদরাসা শিক্ষক হাসানের অর্থবানিজ্যের কবলে পরে পরীক্ষায় অংশ নিতে পারে নি সোহান।
অভিযুক্ত মো. হাসান পার্শ্ববর্তী আমতলী উপজেলার টেপুরা আহম্মাদিয়া দাখিল মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত। তবুও দাপুটে এই ব্যক্তি মাধ্যমিক বিদ্যালয়টির ভোকেশনাল শাখা’র শিক্ষার্থীদের কাছে নিজেকে সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর শিক্ষক হিসেবে জাহির করে প্রতারণা করছিলেন ১৭ বছর ধরে।
ফলে প্রতারণার ফাঁদে পরে শিক্ষার্থী সোহানের জীবন থেকে ঝড়ে গেছে একটি বছর। তাই প্রতিকার চেয়ে বৃহষ্পতিবার (১৩ নভেম্বর) ওই শিক্ষার্থীর পিতা বাদী হয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক হাসানের বিরুদ্ধে কলাপাড়া সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছেন। যাহার মামলা নং সিআর ১০৫৪/২০২৫।
আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে কলাপাড়া উপজেলা মাধ্যমিক একাডেমিক শিক্ষা অফিসারের উপর তদন্তভার প্রদান করেছে।
মামলার বিবরনে জানা যায়, অভিযুক্ত শিক্ষক হাসানের গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার ধানখালী ইউনিয়নে। তিনি আমতলী উপজেলার একটি দাখিল মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক পদে নিযুক্ত আছেন। এর পরেও তিনি অতিরিক্ত অর্থ হাতানোর জন্য ধানখালী পাঁচজুনিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভোকেশনাল শাখা’র শিক্ষক হিসেবে দীর্ঘ বছর ধরে নিজেকে পরিচয় দিয়ে প্রতারণা করে আসছে।
বাদী উল্লেখ করেন, তিনি একজন গ্রামের সহজ সরল কৃষক। ছেলে সোহানকে ধানখালী পাঁচজুনিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভোকেশনাল থেকে পরীক্ষা দেয়ার জন্য সকল ধরনের প্রক্রিয়া শেষ করেন।
কিন্তু নামধারী শিক্ষক হাসানের কথামত বিদ্যালয়ে ভর্তি এবং রেজিষ্ট্রেশনের জন্য সকল টাকা পয়সা জমা দিয়েছেন। আর পরীক্ষার কিছুদিন পূর্বে ফরম পূরণের কথা বলে অভিযুক্ত শিক্ষক হাসান অতিরিক্ত দশ হাজার টাকা দাবী করেন।
তবে শিক্ষকের চাহিদামত অতিরিক্ত টাকা বাদী দিতে অপারগ হলে তার ছেলে কিভাবে পরীক্ষা দেয় সেটা দেখে নিবে বলে ভয়ভীতি ও হুমকী প্রদান করেন হাসান। পরবর্তীতে অভিযুক্ত শিক্ষকের সেই হুমকী বাস্তবে রুপ নেয়। শিক্ষার্থী সোহান পরীক্ষার সকল প্রস্তুতি নিয়ে পরীক্ষা হলে আসলেও অভিযুক্ত শিক্ষক হাসান তাকে প্রবেশ পত্র প্রদান করেননি।
ফলে পরীক্ষা দিতে না পেরে অশ্রুভরা চোখে বাড়ি ফিরতে হয়েছে হতদরিদ্র পিতার সন্তান শিক্ষার্থী সোহানকে। অবশেষে ন্যায় বিচারের দাবীতে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন ভুক্তভোগীর পিতা।
এবিষয়ে কলাপাড়া উপজেলা মাধ্যমিক একাডেমিক শিক্ষা অফিসার মো. মনিরুজ্জামান খাঁন বলেন, মাত্র দশ হাজার টাকার জন্য একজন শিক্ষার্থীর পরীক্ষা দিতে না পারার ঘটনাটি অত্যান্ত দু:জনক। এবিষয়ে তিনি অবগত রয়েছেন। তবে, তার হাতে এখনও মামলার কপি আসেনি। মামলার কপি হাতে পেলে তদন্ত সাপেক্ষে রিপোর্ট প্রদান করবেন
এবিষয়ে অভিযুক্ত ব্যক্তি হাসান বলেন, অতিরিক্ত টাকা বোর্ড থেকে চেয়েছে। আমার কোন দোষ নেই।৷ বোর্ড থেকেই কাগজ দেয়নি টাকার জন্য। এখন মামলা করলে কি করার আছে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন




















