পদত্যাগ করছেন কেজরিওয়াল

ছয়মাস কারাগারে বন্দী থাকার পর জামিনে বের হয়েই বড় ঘোষণা দিলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। স্থানীয় সময় রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে দলীয় সম্মেলনে নিজেই একথা ঘোষণা করেন কেজরিওয়াল।

নির্বাচনে জেতার আগে এই পদে আর ফিরতে চান না তিনি। এছাড়া দিল্লিতে আগাম নির্বাচনেরও দাবি জানিয়েছেন কেজরিওয়াল। খবর এনডিটিভি।

দিল্লিতে একটি দলীয় সম্মেলনে কেজরিওয়াল বলেন, ‘দুই দিন পরে আমি মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করব। জনগণ তাদের রায় ঘোষণা না করা পর্যন্ত আমি আর সেই চেয়ারে বসব না। দিল্লিতে নির্বাচনের মাত্র কয়েক মাস বাকি। আমি আইনি আদালত থেকে ন্যায়বিচার পেয়েছি, এখন আমি জনগণের আদালত থেকে ন্যায়বিচার চাই। শুধু জনগণ চাইলেই আমি মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে বসব।‘

তিনি আরও বলেন, ‘আমি দিল্লির জনগণকে জিজ্ঞাসা করতে চাই, কেজরিওয়াল কি নির্দোষ নাকি দোষী? আমি যদি কাজ করে থাকি তবে আমাকে ভোট দিন।‘

কেজরিওয়াল পদত্যাগ করার পর দিল্লির নতুন মুখ্যমন্ত্রী বাছাই করতে আগামী দুই দিনের মধ্যে আম আদমি পার্টির বিধায়কদের একটি সভা অনুষ্ঠিত হবে৷ সভায় আম আদমি পার্টির কাউকে মুখ্যমন্ত্রী করা হবে। পরবর্তীতে এ বিষয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে সিদ্ধান্ত গৃহীত হবে বলেও জানান তিনি।

এই সময় আগাম নির্বাচনের ঘোষণা দিয়ে কেজরিওয়াল আরও দাবি করেন, ফেব্রুয়ারিতে নির্ধারিত দিল্লির নির্বাচন, মহারাষ্ট্রের নির্বাচনের সঙ্গে নভেম্বরেই অনুষ্ঠিত হবে।

সম্মেলনে দেওয়া ভাষণে কেজরিওয়াল নরেন্দ্র মোদী সরকারকে ব্রিটিশদের চেয়েও স্বৈরাচারী বলে অভিহিত করেন।

তিনি জানান, আমি গণতন্ত্র বাঁচাতে চেয়েছিলাম বলে গ্রেপ্তার হওয়া সত্ত্বেও মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করিনি। তারা (কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী) সিদ্দারামাইয়া, (কেরলের মুখ্যমন্ত্রী) পিনারাই বিজয়ন, (বাংলার মুখ্যমন্ত্রী) মমতা দিদির (ব্যানার্জি) বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে। আমি অ-বিজেপির কাছে আবেদন করতে চাই, তারা যদি আপনার বিরুদ্ধে মামলা নথিভুক্ত করে তাহলে পদত্যাগ করবেন না। এটি তাদের নতুন খেলা।

এদিকে কেজরিওয়ালের পদত্যাগের বিষয়ে বিজেপি প্রশ্ন তোলেন, “৪৮ ঘণ্টা পরে কেন? তার আজই পদত্যাগ করা উচিত। অতীতেও তিনি এমন করেছেন।“

আবগারি দুর্নীতি মামলায় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন কেজরিওয়াল। তবে সেই মামলায় নিম্ন আদালতে জামিন পাওয়ার পর সাথে সাথেই সিবিআইয়ের হাতে গ্রেপ্তার হন কেজরিওয়াল।

অবশেষে ৬ মাস কারাবন্দী থাকার পর গত শুক্রবার ভারতের সুপ্রিম কোর্ট দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী ও আম আদমি পার্টির নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়ালের জামিন মঞ্জুর করেন।