পদত্যাগ চেয়ে গণঅভিযোগ পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মানববন্ধন

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার বাংলাবান্ধা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কুদরত-ই-খুদা মিলনের বিরুদ্ধে জমি দখল, চাঁদাবাজি, হামলা, মামলা ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে এই অভিযোগে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

উপজেলার সিপাইপাড়া বাজাওে বাংলাবান্ধা ইউনিয়ন পরিষদের সর্বস্তরের জনগণের আয়োজনে বাংলাবান্ধা ইউনিয়ন পরিষদের সামনে পঞ্চগড়-তেঁতুলিয়া মহাসড়কের পাশে দাঁড়িয়ে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। পরে উপজেলা নির্বাহী কার্যালয়ের সামনে ব্যানারসহ কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে একটি গণঅভিযোগ দাখিল করেন।

মানববন্ধনে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করে বলেন, বাংলাবান্ধা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইউনিয়নে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছেন। অন্যায়ভাবে মানুষের জমি নিজে দাঁড়িয়ে থেকে দখল করেছেন। অনেককে চাকরি দেয়ার নামে ও মানুষের জমি আরেকজনকে দখল করে দেয়ার নামে টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

তার দুর্নীতি চরম আকার ধারণ করেছে। ১৫ বছরের আওয়ামী দু:শাসনের মাধ্যমে স্থানীয় বিএনপি নেতা কর্মী ও সাধারণ মানুষের দোকানপাট ভেঙে দিয়েছেন। তিনি কথা বলতে দিতেন না। ৫ আগষ্টের দ্বিতীয় স্বাধীনতার পর চেয়ারম্যান পালিয়ে বেড়াচ্ছে।

২৫ দিন থেকে তিনি পরিষদে আসেন না। তিনি কয়েকটি ফৌজদারী মামলার আসামি। তারপরেও জামিনে মুক্ত হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তার বিরুদ্ধে কথা বললে মাদক মামলাসহ নানা ধরনের মামলা দিয়ে মানুষজনকে হয়রানি করতো। অনেকে তার রোষানলে পড়ে নিঃস্ব হয়েছেন। অবিলম্বে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়ে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন বক্তারা।

এসময় আব্দুল হামিদ, জফির উদ্দিন, ওবায়দুল, নকিবুল ইসলাম, শফিউল আলম, শাহীনুর আলম প্রমুখ মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন। পরে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে প গড়-তেঁতুলিয়া মহাসড়কে বিক্ষোভ ও জুতা মিছিল করেন স্থানীয়রা।

মানববন্ধনে বাংলাবান্ধা ইউনিয়নের দীঘলগাঁও এলাকার জফির উদ্দীন বলেন, মিলন চেয়ারম্যান তিনি গত ৫ বছর ধরে আমার জমি দখল করে খাচ্ছেন। তিনি দলীয় পরিচয় বহন করে এতদিন লুটতরাজের রাজত্ব কায়েম করেছেন। আমরা তার সর্বোচ্চ শাস্তি চাই।

ওই এলাকায় বৃদ্ধা আনোয়ার বেগম বক্তব্যে বলেন, খাস জমিতে দীর্ঘদিন থেকে বসবাস করে আসছিলাম। মিলন ইউপি চেয়ারম্যান হওয়ার পর আমার বসত ভিটা ভেঙে দখল করে নেয়। ওই খাস জমিতে তিনি মার্কেট নির্মাণ করেন।

আব্দুল হামিদ বক্তব্যে বলেন, একটা সময় ধানের গড় বিক্রি করে চলতো। আজ তিনি কয়েকশো কোটি টাকার মালিক। তিনি আরোও বলেন, আমি স্থলবন্দরে এক একর জমি ক্রয় করি। জমি ক্রয় করাতে চাঁদা হিসেবে ৫ লক্ষ টাকা নিয়েছেন এবং আমার জমিটি ওর নিজস্ব ক্যাডার বাহিনী দ্বারা দখল করে নিয়েছেন। আমাকে বিভিন্ন মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দিয়েছে। আমি একাধিক বার জেলও খেটেছি।

এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বাংলাবান্ধা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কুদরত-ই-খুদা মিলন সাংবাদিকদের বলেন, আমি কখনো কারো জমি দখল করেছি, এমন কোনো প্রমাণ নেই।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার(ইউএনও) ফজলে রাব্বি বলেন, এলাকাবাসীর গণঅভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।