পদ্মাসেতুতে ৫৩৭০ কোটি, মেট্রোরেলের বরাদ্দ আরও বেশি
দেশের সর্ববৃহৎ প্রকল্প পদ্মাসেতু এবং মেট্রোরেলের জন্য আগামী অর্থবছরে বড় অংকের বরাদ্দ রাখা হয়েছে। ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে সেতু বিভাগে মোট ৮ হাজার ৫৬৪ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে, যার মধ্যে কেবল পদ্মাসেতুর জন্যই বরাদ্দ থাকছে ৫ হাজার ৩৭০ কোটি টাকা। আর ৭ হাজার ২১২ কোটি টাকা থাকছে মেট্রোরেলের জন্য। যেখানে সড়ক বিভাগের জন্য মোট বরাদ্দ ধার্য হয়েছে ২৯ হাজার ২৭৪ কোটি টাকা।
বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) বিকালে জাতীয় সংসদে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে আয়োজিত বাজেট অধিবেশনে এসব অর্থ বরাদ্দের কথা জানান অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
সংসদে বাজেট উত্থাপনকালে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশে সমন্বিত ও নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ নেটওয়ার্ক স্থাপনে আমরা পদ্মাসেতু, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল এবং হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী পর্যন্ত ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণসহ অনেক বৃহৎ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছি। নিজস্ব অর্থায়নে নির্মাণাধীন পদ্মাসেতুর দুই কিলোমিটার আজ দৃশ্যমান। প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৬৭ শতাংশ।’
মুস্তফা কামাল আরও বলেছিলেন, ‘ঢাকা মহানগরীর অভ্যন্তরীণ সড়ক নেটওয়ার্ক উন্নয়ন, প্রবেশ ও নির্গমন, মহাসড়কের যানজট নিরসন এবং ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার জন্য পরিকল্পিত ও সমন্বিত আধুনিক গণপরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা সংশোধিত পরিবহন পরিকল্পনা বা আরএসটিপি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। এর আওতায় বাংলাদেশে প্রথম মেট্রোরেল, উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। পাশাপাশি হযরত শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে গাজীপুর পর্যন্ত গণপরিবহণ ব্যবস্থা বাস র্যাপিড ট্রানজিট বা বিআরটি বাস্তবায়নের কাজ চলছে।’
এবার ‘সমৃদ্ধ আগামীর পথযাত্রায় বাংলাদেশ : সময় এখন আমাদের, সময় এখন বাংলাদেশের’ স্লোগানকে সামনে রেখে ২০১৯-২০ অর্থবছরের জন্য ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব পেশ করা হয়েছে। যেখানে গৃহায়ন খাতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১ দশমিক ৩ শতাংশ বা প্রায় ৬ হাজার ৮০১ কোটি টাকা।
বাজেট বক্তৃতার এক পর্যায়ে অসুস্থ অর্থমন্ত্রীর পক্ষে সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাজেট বক্তৃতা উপস্থাপন করেন। প্রস্তাবিত বাজেটে মোট রাজস্ব আয় ৩ লাখ ৭৭ হাজার ৮১০ কোটি টাকা ধরা হয়েছে, এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড থেকে আয় ধরা হয়েছে ৩ লাখ ২৫ হাজার ৬শ কোটি টাকা। এছাড়া, এনবিআর বহির্ভূত সূত্র থেকে কর রাজস্ব ধরা হয়েছে ১৪ হাজার ৫শ কোটি টাকা। কর বহির্ভূত খাত থেকে রাজস্ব আয় ধরা হয়েছে ৩৭ হাজার ৭১০ কোটি টাকা।
চলতি বাজেটে পরিচালনসহ অন্যান্য খাতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ লাখ ২০ হাজার ৪৬৯ কোটি টাকা। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে ২ লাখ ২ হাজার ৭২১ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে।
প্রস্তাবিত বাজেটে সার্বিক বাজেট ঘাটতি ১ লাখ ৪৫ হাজার ৩৮০ কোটি টাকা, যা জিডিপির ৫ শতাংশ। এ ঘাটতি অর্থায়নে বৈদেশিক সূত্র থেকে ৬৮ হাজার ১৬ কোটি টাকা, অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ৭৭ হাজার ৩৬৩ কোটি টাকা। অভ্যন্তরীণ উৎসের মধ্যে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ৪৭ হাজার ৩৬৪ কোটি টাকা এবং সঞ্চয়পত্র ও অন্যান্য ব্যাংক বহির্ভূত উৎস থেকে ৩০ হাজার কোটি টাকা সংস্থানের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৮.২ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। এর সঙ্গে প্রস্তাবিত বাজেটে মূল্যস্ফীতি ৫.৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন