পদ্মা-যমুনার তীরাঞ্চলে বাদামের বাম্পার ফলন, খুশি চাষিরা
পাবনার বেড়া ও সুজানগর উপজেলায় পদ্মা-যমুনার তীরাঞ্চলে এবছর চিনা বাদামের বাম্পার ফলন হয়েছে। বাদাম ঘরে তুলতে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা। ভাল ফলন ও অন্যান্য ফসলের চেয়ে ভাল দাম পেয়ে তারা বেশ খুশি।
খর রৌদ্রের শেষ জ্যৈষ্ঠে বেড়ার যমুনা পাড়ে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, নদীতে বান না ডাকলেও ভরা ফসলের মাঠে কৃষকের হাঁসির বান ডেকেছে। এ সময়ের ফসল বলতে বাদাম। চর কোলচিনাখরা, চর মধুপুর, চর দেউনাই, চর পুকুরপাড়, চর সিংহাসন, চর বোরামারা, চর শাফুল্লা, চর যদুপুর, চর লক্ষীপুর প্রভৃতি চরে হাজার বিঘা জমিতে হয়েছে বাদামের চাষ। চরের পর চর বাদামের ক্ষেত। তাকালে মনে হয় যেন আদিগন্ত বাদামেরই জগৎ।
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সুজানগর উপজেলায় সবচেয়ে বেশি বাদাম চাষাবাদ হয়ে থাকে ভায়না, সাতবাড়িয়া, মানিকহাট, নাজিরগঞ্জ ও সাগরকান্দি ইউনিয়নে। এসব চরাঞ্চলের জমিতে ধান-পাট ও অন্য ফসল তেমন ভাল হয় না, এ কারণে কৃষকরা বেশিরভাগ সময় এ সকল জমিতে ধান-পাট আবাদ করে লোকসানে পড়েন। এ জন্য তারা লোকসান থেকে বাঁচতে এ বছর উপজেলা কৃষি বিভাগের পরার্মশে সকল ইউনিয়নের পদ্মার চরাঞ্চলের বেশিরভাগ জমিতে চিনাবাদম আবাদ করেছেন।
সুজানগর উপজেলার সাতবাড়িয়া ইউনিয়নের তারাবাড়িয়া গ্রামের কৃষক আব্দুল মজিদ এ প্রতিনিধিকে বলেন, গত কয়েক বছরের তুলনায় এবছর জমিতে বাদামের খুব ভাল ফলন হয়েছে। অন্যান্য বছর যেখানে এক বিঘা জমিতে ৭ থেকে ৮ মণ বাদাম পেতাম কিন্তু এ বছর ৯ থেকে ১০ মণ বাদাম আমরা ঘরে তুলতে পারছি।
উপজেলার ফকিৎপুর গ্রামের বাদাম চাষি কোরবান আলী বলেন, এ বছর প্রতি বিঘা জমিতে বাদাম আবাদ করতে সার, বীজ ও শ্রমিকসহ উৎপাদন খরচ হয়েছে ১৪ থেকে ১৫ হাজার টাকা। আর প্রতি বিঘা জমিতে বাদাম উৎপাদন হয়েছে ৭ থেকে ৮ মণ। বর্তমানে হাট-বাজারে প্রতি মণ বাদাম বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ২০০ থেকে ৩ হাজার ৫০০ টাকা। এই হিসাবে প্রতি বিঘা জমিতে উৎপাদিত বাদামের মূল্য ২৪ থেকে ২৮ হাজার টাকা, যা উৎপাদন খরচের চেয়ে অনেক বেশি।
সুজানগর উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এ বছর উপজেলার সাতবাড়ীয়া, ভায়না, নাজিরগঞ্জ ও সাগরকান্দী ইউনিয়নের চরাঞ্চলের ৩৬০ হেক্টর জমিতে চিনা বাদাম আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু আবহাওয়ার অনুকূলে থাকায় আবাদ হয়েছে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৫০ হেক্টর বেশি জমিতে। ইতিমধ্যে জমি থেকে বাদাম ওঠানো শুরু হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রাফিউল ইসলাম বলেন বর্তমানে হাট-বাজারে বাদামের দাম বেশ ভাল। ১ থেকে ২ মাস পর দাম আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন