পবিত্র আখিরী চাহার শোম্বা শরীফ সম্পর্কে আলোচনা

আরবী মাস উনার দ্বিতীয় মাস পবিত্র ‘ছফর’ শরীফ। ফযীলত, বুযূর্গী, তাৎপর্য ও মাহাত্ম্যের দিক থেকে এ মাসটি এক বিশেষ স্থান দখল করে আছে। আর পবিত্র ছফর শরীফ মাস উনার মধ্যে মহাগুরুত্বপূর্ণ পবিত্র ‘আখিরী চাহার শোম্বাহ শরীফ’ নামক বিশেষ দিনটি অন্তর্ভুক্ত আছে।আখিরী চাহার শোম্বাহ শরীফ উনার অর্থ: ‘আখিরী চাহার শোম্বাহ’ শব্দগুলো ফার্সী ভাষায় ব্যবহৃত হয়। ফার্সীতে ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)কে বলা হয় ‘চাহার শোম্বাহ’।

অতএব, ‘আখিরী চাহার শোম্বাহ’ অর্থ- শেষ ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)। পারিভাষিক অর্থে পবিত্র ছফর শরীফ মাস উনার শেষ ইয়াওমুল আরবিয়া শরীফ বা বুধবারকে পবিত্র আখিরী চাহার শোম্বাহ বলা হয়। উল্লেখ্য, প্রত্যেক মাস উনার শেষ ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) আছে। কিন্তু উক্ত দিনকে পবিত্র আখিরী চাহার শোম্বাহ শরীফ বলা হয় না। বরং পবিত্র ছফর শরীফ মাস উনার শেষ ইয়াওমুল আরবিয়া বা বুধবারের স্বতন্ত্র মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্যের কারণে একে ‘আখিরী চাহার শোম্বাহ’ শরীফ বলা হয়।

মূলকথা: আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ১১ হিজরী সনের পবিত্র মুহররমুল হারাম শরীফ মাস উনার তৃতীয় সপ্তাহে মারীদ্বি শান মুবারক প্রকাশ করেন। এরপরে ছিহহাতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। অতঃপর পবিত্র ছফর শরীফ মাস উনার তৃতীয় সপ্তাহে আবার মারীদ্বি শান মুবারক প্রকাশ করেন।

এ সম্পর্কে বলা হয়, অধিকাংশ ও প্রসিদ্ধ বর্ণনার দ্বারা প্রমাণিত, পবিত্র ছফর শরীফ মাস উনার ইয়াওমুল আরবিয়া শরীফ বা বুধবার বাদ আছর পুনরায় মারীদ্বি শান মুবারক প্রকাশ করেন এবং তা ১২ দিন পর্যন্ত দীর্ঘায়িত হয়। (আদ-দীন ওয়া তারীখুল হারামাইনশি শারীফাঈন: পৃষ্ঠা ২৮১, ২৮৩) মারীদ্বি শান মুবারক প্রকাশ করার কারণে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা চিন্তিত হয়ে পড়েছিলেন যে, আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কি সত্যিই বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করবেন?

আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি দীর্ঘদিন মারীদ্বি শান মুবারক প্রকাশ করার পর পবিত্র আখিরী চাহার শোম্বাহ শরীফ সকালে ছিহহাতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। অতঃপর গোসল মুবারক করতঃ হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম, হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের নিয়ে আহার মুবারক করেন। অতঃপর হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহুম উনাদের খোঁজ-খবর নেন এবং খুশি মুবারক প্রকাশ করে মসজিদে নববী শরীফ উনার মধ্যে তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করেন।

সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ছিহহাতী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন তা দেখতে পেয়ে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহুম উনারা অত্যন্ত আনন্দিত হন। (সীরাতে ইবনে হিশাম: দ্বিতীয় ভাগ, পৃষ্ঠা ৬৫৩, আদ দ্বীন ওয়াত তারীখুল হারামাইনিশ শারীফাঈন, পৃষ্ঠা ২৮১)শুধু তাই নয়, উনারা মহান আল্লাহ পাক উনার দরবারে শুকরিয়া আদায় করেন এবং এ উপলক্ষে উনাদের সাধ্যমতো নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক খিদমতে হাদিয়া মুবারক পেশ করেন।

এছাড়া গরিব-মিসকিনদেরকেও দান সদকা করেন। সেক্ষেত্রে আফযালুন নাস বা’দাল আম্বিয়া সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি সাত হাজার দিনার, সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি পাঁচ হাজার দিনার, খলীফাতুল মুসলিমীন সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনি দশ হাজার দিনার, আসাদুল্লাহিল গালিব সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি তিন হাজার দিনার এবং মুবাশশারুল জান্নাহ হযরত আব্দুর রহমান ইবনে আউফ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি একশত উট ও একশত ঘোড়া হাদিয়া করতঃ মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার রসূল।

নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মুহব্বত মুবারক লাভ করেন। তবে উক্ত দিনের শেষ প্রান্তে আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পুনরায় মারীদ্বি শান মুবারক প্রকাশ করেন এবং তা নিয়েই পবিত্র ১২ই রবীউল আউওয়াল শরীফ রফীকে আ’লা উনার পরম মুবারক দীদারে মিলিত হন। (আল বাইয়্যিনাত শরীফ: ৭১, ৮১তম সংখ্যা, পৃষ্ঠা ৭০, ১২)গুরুত্ব ও তাৎপর্য: মুসলিম উম্মাহ উনাদের নিকট এ দিনটি মহাগুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যপূর্ণ।

কারণ এর সাথে আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বরকতময় জীবনের বিশেষ স্মৃতিজড়িত এবং তা মা’রিফত-মুহব্বত লাভের মহা উসীলা মুবারক।এজন্য পারস্য ও ভারতীয় উপমহাদেশের মুসলমানগণ যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি পালন করেন। দিল্লির মুঘল (বাংলা পিডিয়া মতে) বাদশাহগণও যথেষ্ট মর্যাদার সাথে দিবসটি পালন করতেন।

বাংলাদেশে এ দিন ঐচ্ছিক ছুটি থাকে। (নাউযুবিল্লাহ)। কিন্তু সাধারণ সরকারি ছুটি হিসেবে এ দিন পালন করা উচিত ছিল। এ দিন মুসলমানগণ নফল নামায, দুরূদ শরীফ পড়েন, দোয়া-কালাম, যিকির-ফিকির করেন, কেউ কেউ দরিদ্রদের মধ্যে খাদ্য ও বস্ত্র বিতরণ করেন। (বাংলা পিডিয়া, প্রথম খ-, পৃষ্ঠা ১২৩) ইসলামী বিশ্বকোষে উল্লেখ আছে, এই দিনে লোকেরা (মুসলমানগণ) গোসল করে, নতুন বস্ত্র পরিধান করে এবং খুশবু লাগায়।

(ইসলামী বিশ্বকোষ: প্রথম খ-: পৃষ্ঠা ১১৩) সুতরাং পবিত্র আখিরী চাহার শোম্বাহ শরীফ উনার গুরুত্ব ও তাৎপর্য যে অপরিসীম তা অতি সহজেই অনুমেয়। অথচ খুব কম সংখ্যক লোকই সে সম্পর্কে অবহিত। (এদের জন্য আফসোস!) বাতিলপন্থীদের বক্তব্য: ওহাবী, সালাফী, লা-মাযহাবী বাতিলপন্থীরা পবিত্র আখিরী চাহার শোম্বাহ শরীফ পালন করাকে নাজায়িয ও বিদয়াত বলে।

কারণ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সেদিন পুনরায় মারীদ্বি শান মুবারক প্রকাশ করেন এবং সে মারীদ্বি শান মুবারকসহই পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। তাদের কেউ কেউ বলে, পবিত্র আখিরী চাহার শোম্বাহ শরীফ উদযাপনের কোনো নির্ভরযোগ্য দ্বীনী ভিত্তি পাওয়া যায় না। নাঊযুবিল্লাহ!

ইসলামী বিশ্বকোষের প্রথম খ- ১১৩ পৃষ্ঠাতেও বাতিলপন্থীদের এ বিভ্রান্তিমূলক বক্তব্য উল্লেখ আছেপবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার ছহীহ ফতওয়া ও বাতিলপন্থীদের বক্তব্যের জাওয়াব: পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার ছহীহ ফতওয়া মুবারক হলো, পবিত্র আখিরী চাহার শোম্বাহ শরীফ পালন করা, এতে খুশি প্রকাশ করা সুন্নত। প্রকৃতপক্ষে বাতিলপন্থীরা পবিত্র দ্বীন ইসলাম ও উনার সঠিক ইতিহাস না জানার কারণেই পবিত্র আখিরী চাহার শোম্বাহ শরীফ পালন করাকে নাজায়িয, বিদয়াত ও ভিত্তিহীন বলে থাকে। নাউযুবিল্লাহ!

কূপম-ক কারো পক্ষে পবিত্র আখিরী চাহার শোম্বাহ শরীফ উনার নির্ভরযোগ্য দ্বীনী ভিত্তি খুঁজে না পাওয়ায় তা না থাকাকে প্রমাণ করে না। যেমন পেঁচার সূর্যকে না দেখা তার স্পষ্ট ও স্বতঃউদ্ভাসিত অস্তিত্ব না থাকাকে প্রমাণ করে না।

আর যেখানে স্বয়ং আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি, হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা, হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা এবং মু’মিনগণ আখিরী চাহার শোম্বাহ শরীফ পালন করেন এবং খুশি প্রকাশ করেন সেখানে আখিরী চাহার শোম্বাহ শরীফ পালন করাকে নাজায়িয, বিদয়াত ও ভিত্তিহীন বলা গুমরাহী ব্যতীত কিছুই নয়। যেমন- মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

(১)“আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তোমাদেরকে যা দেন তা তোমরা গ্রহণ করো আর যা কিছু গ্রহণ করা হতে নিষেধ করেন, তা হতে বিরত থাকো এবং তোমরা মহান আল্লাহ তায়ালা উনাকে ভয় করো। নিঃসন্দেহে মহান আল্লাহ তায়ালা তিনি কঠোর শাস্তি প্রদানকারী।” (পবিত্র সূরা হাশর শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ- ৭);(২)আর তোমরা উনার আনুগত্য করলেই হিদায়েত পাবে।” (পবিত্র সূরা নূর শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৫৪)(৩).আমার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!

আপনি সারা বিশ্বের মানুষ ও জিনদেরকে বলে দিন, তোমরা যদি মহান আল্লাহ পাক উনাকে ভালোবাসতে চাও তাহলে আমাকে অনুসরণ-অনুকরণ করো। তাহলে মহান আল্লাহ পাক তিনি তোমাদেরকে ভালোবাসবেন এবং তোমাদের গুনাহ-খতাগুলো ক্ষমা করে দিবেন। আর মহান আল্লাহ পাক তিনি অত্যন্ত ক্ষমাশীল, বড়ই দয়ালু ও করুণাময়।

আপনি আরো বলে দিন, মহান আল্লাহ পাক উনাকে ও উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অনুসরণ করো, অনন্তর যদি তারা ফিরে যায়, মহান আল্লাহ পাক তিনি নিশ্চয়ই কাফিরদেরকে ভালোবাসেন না।” (পবিত্র সূরা আলে ইমরান শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৩১, ৩২) (৪). হযরত মুহাজির ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম এবং হযরত আনছার ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের মধ্যে (পবিত্র ঈমান গ্রহণের ব্যাপারে) যারা পূর্ববর্তীদের মধ্যে অগ্রগামী এবং উনাদেরকে যাঁরা উত্তম বা যথাযথভাবে অনুসরণকারী, উনাদের প্রতি মহান আল্লাহ পাক তিনি সন্তুষ্ট এবং উনারাও মহান আল্লাহ পাক উনার উপর সন্তুষ্ট।

আর তিনি উনাদের জন্য প্রস্তুত করেছেন জান্নাত, যার নিম্নœদেশে নহরসমূহ প্রবাহিত, সেখানে উনারা চিরস্থায়ী থাকবেন। এটাই মহাসাফল্য। সুবহানাল্লাহ! (পবিত্র সূরা তাওবা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১০০)(৫).হিদায়েত প্রকাশিত হওয়ার পর যারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিরোধিতা করবে এবং মু’মিনদের প্রচলিত পথ রেখে অন্য পথের অনুসরণ করবে, আমি তাদেরকে সেদিকেই ফিরাবো যেদিকে তারা ফিরেছে এবং জাহান্নামে তাদেরকে প্রবেশ করাবো, আর তা কত মন্দ আবাস।”

(পবিত্র সূরা নিসা শরীফ :পবিত্র আয়াত শরীফ ১১৫)
অপরদিকে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে, আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন।(১). “অতি শীঘ্রই আমার উম্মত ৭৩ দলে বিভক্ত হবে, একটি দল ব্যতীত সমস্ত দল জাহান্নামে যাবে। জিজ্ঞাসা করা হলো- ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! যে দলটি (নাজাত পাবে) সেটা কোন্ দল?

তখন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, যে (মুবারক মত ও মুবারক পথ উনার) উপর আমি রয়েছি এবং আমার অনুসরণে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা রয়েছেন, সে মুবারক মত ও পথ উনার উপর যাঁরা দায়িম-ক্বায়িম অর্থাৎ ইস্তিকামত থাকবেন, উনারাই সেই নাজাতপ্রাপ্ত দল।” সুবহানাল্লাহ!

(পবিত্র মিশকাত শরীফ, ৩০ পৃষ্ঠা) (২).“আমার পবিত্র সুন্নত মুবারক এবং হিদায়েতপ্রাপ্ত হযরত খুলাফায়ে রাশিদীন আলাইহিমুস সালাম উনাদের (তথা হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহুম উনাদের) সুন্নত মুবারক পালন করা তোমাদের প্রতি ওয়াজিব। তোমরা তা মজবুতভাবে মাঢ়ির দাঁত দিয়ে আঁকড়ে ধরো।” (মিশকাত শরীফ, ৩০ পৃষ্ঠা)(৩).“আমার হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ উনারা আকাশের নক্ষত্রসম। তোমরা উনাদের যেকোনো একজনকে যেকোনো বিষয় অনুসরণ করবে সুপথপ্রাপ্ত হবে।” সুবাহানাল্লাহ!

(মিশকাত শরীফ, পৃষ্ঠা ৫৫৪) (৪). নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন, “যে ব্যক্তি আমার পবিত্র সুন্নত উনাকে ভালোবাসে সে যেন আমাকেই ভালোবাসে। আর যে আমাকে ভালোবাসে, সে সম্মানিত জান্নাতে আমার সাথে থাকবে।” সুবহানাল্লাহ! (মিশকাত শরীফ, পৃষ্ঠা ৩০)এ সমস্ত দলীল-আদিল্লাহ উনাদের আলোকে অকাট্যভাবে প্রমাণিত হয়, পবিত্র আখিরী চাহার শোম্বাহ শরীফ সম্পূর্ণ পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফসম্মত এবং তা পালন করা আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ও হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের এবং মু’মিনগণ উনাদের পথ।

উপসংহার: অতএব, যার যার সাধ্য-সামর্থ্য অনুযায়ী পবিত্র আখিরী চাহার শোম্বাহ শরীফ উপলক্ষে খুশি প্রকাশ করে তা পালন করার মতো পালন করতে হবে। আর যেটা না বললেই নয়, এ ব্যাপারে সম্পূর্ণ পরিষ্কার ধারণা দিয়েছেন যামানার মহান ইমাম ও মুজতাহিদ, আওলাদে রসূল, আহলে বাইতে রসূল, মুজাদ্দিদে আ’যম,সুলতানুন নাছীর রাজারবাগ শরীফের মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি। আর সেই ছহীহ, সঠিক, নির্ভরযোগ্য অর্থাৎ বিশুদ্ধ ধারণা বুকে পুরে আম জনতা পবিত্র আখিরী চাহার শোম্বাহ শরীফ উনার আমলে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন। তাই উনার কৃতজ্ঞতা বন্ধনে আমরা থাকতে চাই আজীবন।(আল ইহসান;আল বাইয়্যিনাত)।