পবিত্র আশুরা উদযাপন উপলক্ষে ডিএমপির নির্দেশনা
শিয়া সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অনুষ্ঠান পবিত্র আশুরা উপলক্ষে তাজিয়া শোক মিছিলে ডিএমপি’র পক্ষ থেকে নেওয়া হচ্ছে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
ডিএমপি হেডকোয়ার্টার্সে বুধবার ডিএমপি কমিশনার আছাদু্জ্জামান মিয়ার সভাপতিত্বে এক সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় ডিএমপি’র ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধি, সরকারের বিভিন্ন সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিসহ শিয়া সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সভা সূত্রে জানা যায়, আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর ৮ মহরম সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় হোসাইনী দালান ইমামবাড়া থেকে শোকমিছিলের মধ্যদিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে পবিত্র আশুরা উদযাপন শুরু হবে। একই দিনে রাজধানীর বড় কাটারা ইমামবাড়া, খোজা শিয়া ইসনুসারী ইমামবাড়া থেকে যথাক্রমে রাত ৮টা ও দুপুর দেড়টায় শোক মিছিল শুরু হবে।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ডিএমপি’র সকল ডিভিশনের সমন্বয়ের মাধ্যমে একটি উৎসবমুখর ও নিরাপদ অনুষ্ঠান সফলভাবে করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। যথাযথ শ্রদ্ধা, সততা ও পেশাদারিত্বের সাথে যার যা দায়িত্ব তা সঠিকভাবে পালন করার জন্য আহবান জানান তিনি।
সমন্বয় সভায় আশুরার শোক মিছিল আয়োজক কর্তৃপক্ষের প্রতি নিন্মোক্ত সুপারিশমালা প্রদান করা হয়।
১. মির্ধারিত রুট ও সময়সীমা মেনে চলা (নির্ধারিত সময়ে শুরু ও শেষ করা)।
২. মিছিলে কোন পাইক অংশগ্রহণ করতে না পারে তা নিশ্চিত করা।
৩. নিশান এর উচ্চতা ১২ ফুট এর বেশী হবে না।
৪. সমবেত স্থানে পর্যাপ্ত সিসি ক্যামেরা স্থাপন ও মনিটরিং করা।
৫. পর্যাপ্ত সংখ্যক সেচ্ছাসেবক নিয়োগ এবং ছবিসহ তালিকা সংশ্লিষ্ট উপ-পুলিশ কমিশনার এর অফিসে প্রেরণ করা।
৬. কোন প্রকার ধারালো অস্ত্র, ধাতব পদার্থ, দাহ্য পদার্থ, ব্যাগ, পোটলাসহ মিছিলে অংশগ্রহণ করা যাবে না। পোশাকের সাথেও ব্যবহার করা যাবে না।
৭. রাস্তার মাঝে বিভিন্ন অলি গলি থেকে মিছিলে প্রবেশ করতে দেয়া যাবে না।
৮. শোক মিছিলে লাঠি, ছোঁড়া, চাকু, তরবারি/তলোয়ার, বর্শা ও আগুনের এবং আতশবাজির ব্যবহার নিষিদ্ধ।
৯. মিছিল শুরুর স্থানে প্রবেশের আগে সকলকে আর্চওয়ে, মেটাল ডিটেক্টর ও হাত দিয়ে দেহ তল্লাশি করে শোক মিছিলে ঢুকতে দেয়া হবে। তল্লাশি ব্যতিত কোন অবস্থায় কাউকে মিছিলে ঢুকতে দেয়া হবে না।
১০. পূজা মণ্ডপের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় কোন প্রকার উস্কানিমূলক শব্দ উচ্চারণ না করে সেদিকে বিশেষ লক্ষ্য রাখতে হবে। সকল ধর্মের প্রতি পারস্পারিক শ্রদ্ধাবোধ ও অসাম্প্রদায়িক মনোভাব রাখতে হবে।
১১. রাত্রিকালীন শোক মিছিলে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা রাখতে হবে।
১২. উচ্চমাত্রার শব্দ তৈরি করার যন্ত্র/বাদ্য যন্ত্র, পিএ সেট ব্যবহার করা যাবে না। একসাথে অনেকগুলো ড্রাম বাজিয়ে বিরক্তিকর পরিবেশ ও শব্দ দূষণ সৃষ্টি করা যাবে না।
১৩. নিরাপত্তার স্বার্থে কিছু আচার অনুষ্ঠান/রীতি/সংস্কৃতি/প্রথা পরিবর্তন করা আবশ্যক বলে আলোচনা করা হয়। প্রথাগুলো হচ্ছে- পাইক প্রথা, সারাদিন বিকট শব্দে ঢাক, ঢোল ও ড্রামসেট বাজানো, আতশবাজি ব্যবহার, মিছিল করে দৌঁড়ে হোসাইনী দালানসহ অন্যান্য সমাবেত স্থলে মূল শোকমিছিলে অংশগ্রহণের জন্য প্রবেশ রোধ করা।
১৪. পোশাকে ধাতব পদার্থ, ছুরি, চাকু, ব্লেড, তলোয়ার প্রভুতি ব্যবহার নিষিদ্ধ করা।
আশুরা ও তাজিয়া শোক মিছিল উপলক্ষে গৃহীত নিরাপত্তা ব্যবস্থায় থাকছে-
১. সাদা পোশাকে ও ইউনিফর্মে পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন থাকবে।
২. শোক মিছিলের পাশেপাশে প্রস্তুত রাখা হবে ফায়ার টেন্ডার ও অ্যাম্বুলেন্স ।
৩. ডগ স্কোয়ার্ড দিয়ে অনুষ্ঠানস্থল সুইপিং করা হবে।
৪. স্বেচ্ছাসেবকদের সহযোগিতায় অপরিচিত ব্যক্তিকে অনুষ্ঠানস্থলে ঢুকতে দেয়া হবে না।
৫. অনুষ্ঠানস্থলে আগতদের ব্যাগ, সুটকেস, ছাতা, টিফিন কেরিয়ার, প্রেসার কুকার জাতীয় সন্দেহজনক প্যাকেট বা বক্সসহ প্রবেশ নিষিদ্ধ।
৬. মহরম উপলক্ষে সকল গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হবে।
৭. আশুরা উদযাপন ও তাজিয়া শোকমিছিল চলাকালীন পুরো দৃশ্য ক্যামেরাবন্দী করা হবে। সূত্র: ডিএমপি নিউজ
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন