পরকীয়ার পরিবর্তে এখন উধাও ‘সয়াবিন’ তেল ফেরাবে কে?
আমরা যারা সমাজে বাস করি-তারা সবাই জানি এবং দেখেও আসছি। গৃহবধূ হোক আর একজন অবিবাহিতা নারীই হোক-পরকীয়ার জেরে কোনো এক সিঙ্গেল পুরুষ বা বিবাহিত পুরুষের সাথে পালিয়ে যায় উভয়ের সম্মতিতেই।
যখন ঘটনা রটনা হয়ে যায়-ঠিক তখন একটাই শব্দ বের হয় আমাদের মুখে। সেটার কাল্পনিক নামে ‘রহিমের বউ করিমের সাথে উধাও’ এমন কথোপকথন শব্দ পত্রিকাসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমের হেডলাইনেও আমরা প্রায় প্রায়ই দেখি। কিন্তু এখন সেই কথা বাজারঘাটে শোভা পাচ্ছে। আবার শুনে মানুষ একটু অবাকও হচ্ছে বটে!
চলমান পরিস্থিতিতে হঠাৎ করেই বিভিন্ন নিত্যপণ্য উধাও হওয়ার ঘটনা উঠে আসে বিভিন্ন মিডিয়াতে। তবে কথা হচ্ছে, পরকীয়া করে যারা নাগরের হাত ধরে উধাও হয়ে যায়-তাদের সিংহভাগই কিন্তু আর ফিরে আসে না। কিন্তু সয়াবিন উধাও হলেও ফিরে না আসার সাহস নেই। তাকে ফিরে আসতেই হয় চিরচেনা বাজারে।
এদিকে, ব্যবসায়ীরা বাজারে নিত্যপণ্য উধাও হওয়ার ঘটনা ক্রেতাদের প্রায় প্রায়ই ভাবিয়ে তুলছে। যা কোনোভাবে কাম্য নয়। তারা সি-িকেটধারী ব্যবসায়ীরা ন্যায্যমূল্যের চেয়ে বেশি লাভ করার লক্ষ্যেই নিত্যপণ্যের গুরুত্বপূর্ণ জিনিসকেই উধাও করে দিচ্ছে বাজার থেকে। যা ভোক্তা অধিকার ও মানবতাবিরোধী অপরাধ। অথচ এ অপরাধের শেষ হচ্ছে না কোনোকালেই। সরকারের না পেরে ওঠার কারণও বুঝতে পারছে না সাধারণ মানুষ।
তারই অংশ হিসেবে, চুয়াডাঙ্গায় বোতলজাত সয়াবিন তেল সঙ্কট তৈরী করে ভোক্তাদের যেমন চাহিদা থেকে বঞ্চিত করছে, অন্যদিকে খোলা সয়াবিন তেল বেশি দামে কিনতে বাধ্য করছে ব্যবসায়ীরা। এছাড়া সুযোগ পেয়ে বাজারে নি¤œমানের বিভিন্ন কোম্পানীর তেল বেশি দামে কিনতে হচ্ছে ক্রেতাদের। এতে করে বিনিয়োগে সাধারণ মানুষ যেমন অচল হয়ে পড়ছে তেমনী ক্রেতাপর্যায়ে ক্ষোভ বাড়ছে অসাধু ব্যবসায়ীদের ওপর।
এরই অংশ হিসেবে এবারও চুয়াডাঙ্গার বাজার থেকে সয়াবিন তেল উধাও হওয়ার ঘটনা ছড়িয়ে পড়েছে জেলা জুড়ে।
এরা অভিজ্ঞ সি-িকেটধারী ব্যবসায়ী হওয়ায় ঈদকে সামনে রেখে আগে ভাগেই প্রয়োজনীয় জিনিস হিসেবে বোতলজাত সয়াবিন তেলকে উধাও করে ফেলেছে চুয়াডাঙ্গার বড়বাজারসহ বিভিন্ন বাজারের ব্যবসায়ীরা।
এদিকে, সরকার দুই দফায় শুল্ক-কর কমালেও সুফল মেলেনি বরং আরও ৮ টাকা দাম বাড়িয়েছে সরকার। তাতেও সন্তুষ্টি হতে পারেনি ব্যবসায়ীরা। লাভের ওপর লাভ খেতে বাজারে সয়াবিন তেলের কৃত্রিম সঙ্কট করেছে। তারা ঈদকে সামনে রেখে যাতে সরকারের নির্দেশনা উপেক্ষা করতে না হয় সে ব্যবস্থা করে নেচ্ছে আগেভাগে।
এদিকে, ন্যায্যমূল্য অনুযায়ী বোতলজাত সয়াবিন দাম ১৬৭ টাকার তেল বিক্রি করছে ১৭৫ টাকা, খোলা সয়াবিন ১৫০ টাকার পরিবর্তে ৩০ টাকা বাড়িয়ে ১৮০ টাকায় বিক্রি করছে বলে আজ বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) শহরের বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমনটিই দেখা গেছে।
এদিকে সাধারণ ভোক্তাদের অভিযোগ, কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে এ সুযোগে অনেকে আবার বোতলজাত সয়াবিন কেটে খোলা বাজারে বেশি দামে বিক্রি করছে।
তবে ব্যবসায়িরা বলছেন, বোতলজাত তেল কোম্পানি বাজারে সরবরাহ করছে না। কেনো তেল সরবরাহ করছে না তাও পরিস্কারভাবে জানতে পারিনি। পুষ্টি কোম্পানির কিছু তেল সরবরাহ আছে। আর বাকি কোনো কোম্পানির তেল সরবরাহ নেই। খোলা বাজারে সয়াবিন তেল ডিলাররা দাম বাড়াচ্ছে যে কারণে খুচরা ব্যবসায়িরা দাম বাড়িয়েছে। কিন্তু তেল মজুদ নেই। তবে কয়েকদিনের মধ্যে তেলের দাম স্বাভাবিক হতে পারে।
আরিফ নামে এক ক্রেতা বলেন, বাজারে বোতলজাত সয়াবিন তেল পাওয়া যাচ্ছে না। সারা বাজার ঘুরে যা পাওয়া যাচ্ছে তাও প্রতি লিটারের দাম বেশি নেচ্ছে। আবার আগের বোতলের দাম থেকে ১০ থেকে ১২ টাকা পর্যন্ত বাড়তি দামে কিনতে হচ্ছে।
আরেক ক্রেতা রোমানা বলেন, সব ধরনের নিত্যপণ্যের দাম যেমন তেমনি তেলের দামও বেশি। তবে ক্ষণে ক্ষণে তেলের দাম বাড়ানো আমাদের বিপদে ফেলে দেয়। এ বিষয়ে সরকারের কঠোর হস্তক্ষেপ নেয়া উচিত।
এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের বাজার পরিদর্শক সহিদুল ইসলাম বলেন, বাজারে সয়াবিন তেলের সরবরাহ কম। যে কারণে দাম বেশি দেখা যাচ্ছে। এখানে ব্যবসায়িরা কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে তেল মজুদ করে যদি বাজারে দাম বাড়ায় তাহলে, তাহলে বিরুদ্ধে আইনুযায়ি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন