পরকীয়া প্রেমে অন্তঃসত্ত্বা প্রবাসীর স্ত্রী, অতঃপর…
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে পরকীয়া প্রেমে অন্তঃসত্ত্বা প্রবাসীর স্ত্রী, অতঃপর সেই প্রেমের বলি হয়ে জন্মের প্রথম দিনেই প্রাণ গেল এক নবজাতকের। পৃথিবীর আলো-বাতাস এই নবজাতকের জন্য কাল হলো।
স্বামী বিদেশ থাকায় পরকীয়ার কারণে জন্ম নেয়া সন্তানকে হত্যা করা হয়েছে বলে স্বামীর পরিবারের লোকজন অভিযোগ করেছে। জন্মের মাত্র নয় ঘণ্টা পরই মারা যায় ওই শিশু সন্তান। ঘটনাটি এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।
এমন অমানবিক ঘটনাটি ঘটেছে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার তরফপুর ইউনিয়নের টাকিয়া কদমা উত্তরপাড়া গ্রামে। পুলিশ শিশু সন্তানের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে পাঠিয়েছে।
পুলিশ সূত্র জানায়, তরফপুর ইউনিয়নের টাকিয়া কদমা উত্তরপাড়া গ্রামের মানিক মিয়ার সঙ্গে প্রেম করে ৮/৯ বছর আগে একই গ্রামের রিনা বেগম বিয়ে করেন। মানিক দীর্ঘদিন ধরে কাতার প্রবাসী।
মানিক মিয়া গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে ছুটিতে দেশে আসেন এবং তিন মাস ছুটি কাটিয়ে গত ১৪ নভেম্বর ২০১৬ তারিখে কাতার চলে যান। স্বামীর অনুপস্থিতির সুযোগে স্ত্রী রিনা বেগম একই গ্রামের শিপন খান নামে এক যুবকের সঙ্গে পরকীয়া প্রেমে জড়ান। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে দৈহিক সম্পর্ক শুরু হয়। কিছুদিন পর রিনা অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন।
ঘটনা জানাজানি হলে রোববার রিনা বেগম তার বড় ভাই ইয়াকুবের শ্বশুরবাড়ি মির্জাপুর উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের মুশুরিয়াঘোনা গ্রামে আসেন। রাতে অবৈধ গর্ভপাত ঘটানোর জন্য ওষুধ খায়।
পরের দিন সোমবার ওই বাড়ির বাথরুমে সন্তান প্রসব হলে রিনা বেগম ওই নবজতককে গলায় এবং বুকে চেপে ধরে হত্যার চেষ্টা করেন। ওই সময় নবজাতকের কান্না শুরু হয়। বাড়ির লোকজন ঘটনাটি টের পেয়ে এলাকার দায়মা ফতেয়া বেগম ও ওই বাড়ির লোকজন নবজাতককে মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করেন। পরে গ্রামবাসী ওই শিশুকে মির্জাপুর কুমুদিনী হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্ধ্যায় শিশুটি মারা যায়।
খবর পেয়ে পুলিশ রিনা বেগমকে উদ্ধার করে কুমুদিনী হাসপাতালে চিকিৎসা করান। সন্ধ্যার পর পুলিশ শিশুর মরদেহ উদ্ধার করে সোমবার সকালে ময়নাতদন্তেরর জন্য মর্গে পাঠান।
গৃহবধু রিনার শ্বশুর মো. বজলুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, আমার ছেলে মানিক বিদেশ থাকে। পুত্রবধূর যে সন্তান হয়েছে তা অবৈধ। বিষয়টি জানাজানি হবে বিধায় পুত্রবধূ রিনা বেগম সন্তানকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে।
গৃহবধু রিনার সঙ্গে কথা হলে তিনি নিজের সন্তান হত্যার কথা অস্বীকার করে বলেন, বাথরুমে বাচ্চা হওয়ায় তুলতে গিয়ে চাপ লাগতে পারে। তবে পরকীয়া প্রেমে আসক্ত হয়ে অবৈধ সন্তান ধারণের কথা স্বীকার করেন রিনা। রিনা বেগমের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী তার সঙ্গে পরকীয়া প্রেমে জড়িত টাকিয়া কদমা গ্রামের শিপন খানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মির্জাপুর থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আলমগীর কবির বলেন, রিনা বেগমের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী শিপন খান নামে এক যুবককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আাটক করা হয়েছে। এছাড়া অবৈধভাবে গর্ভপাত ঘটানোর জন্য রিনা বেগমকে আসামি করে মামলা হয়েছে। আদালতের মাধ্যমে তাকে জেল হাজতে পাঠানো হবে বলেও জানান এসআই মো. আলমগীর কবির।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন