পরীক্ষামূলক ইভিএম ভোটে সাড়া নেই, আঙুলের ছাপ জটিলতা
ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে ভোটারদের পরীক্ষামূলক ভোট দেয়ার কার্যক্রমে সাড়া মেলেনি। ঢাকা-৬ আসনের বিভিন্ন ভোট কেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে ভোটারদের উপস্থিতি ছিল একেবারেই নগণ্য। ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। দেশের ৩০০ আসনের মধ্যে ছয়টিতে ইভিএমে ভোট গ্রহণ হবে। আসনগুলো হলো ঢাকা-৬, ঢাকা-১৩, চট্টগ্রাম-৯, খুলনা-২, রংপুর-৩ ও সাতক্ষীরা-২। খবর জাগো নিউজের।
বৃহস্পতিবার (২৭ ডিসেম্বর) সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত এ ছয়টি আসনে ভোটারদের ইভিএম-এ পরীক্ষামূলক ভোট নেয়া হয়। এর মাধ্যমে ভোটাররা জানতে পারবেন কেন্দ্রে গিয়ে যান্ত্রিক উপায়ে কীভাবে ভোট দেবেন তারা।
বৃহস্পতিবার ঢাকা-৬ আসনের সায়েদাবাদ স্বামীবাগের মিতালী বিদ্যাপীঠ ভোট কেন্দ্রে দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত অবস্থান করে দেখা গেছে ভোটারদের উপস্থিতি নেই। মাঝে মাঝে দুই-একজন আসছেন।
এখানকার কেন্দ্র-১ পুরুষ ভোটারদের জন্য। এখানে মোট ভোটার চার হাজার ২৮৫ জন। কিন্তু দুপুরে দেড়টা পর্যন্ত মাত্র ২০ জন ভোটার ইভিএমের মাধ্যমে ভোট দেয়া অনুশীলন করতে আসেন। এখানে দুটি ইভিএম স্থাপন করে ভোট প্রদান কার্যক্রম শেখানো হচ্ছে।
দায়িত্বরত সহকারী প্রিজাইডিং অফিসাররা জানান, কেন্দ্রে আসা ভোটারদের বেশির ভাগেরই আঙুলের ছাপ মিলছে না। তাই একটি ভোট নিতে অনেক সময় লাগছে। বার বার চেষ্টা করতে হচ্ছে।
এ কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার খন্দকার আবুল ওয়াহেদ বলেন, ‘দুপুর পর্যন্ত ২০ জন ভোটার এসেছেন। তারা জেনেছেন কীভাবে ইভিএমে ভোট দিতে হবে। তবে অনেকের আঙুলের ছাপ না মেলায় সমস্যা হচ্ছে।’
এখানকার ভোট কেন্দ্র-২ মহিলা ভোটারদের জন্য। এ কেন্দ্রে তিন হাজার ৭৯৭ জন ভোটার হলেও দুপুরে দেড়টা পর্যন্ত আসেন মাত্র পাঁচজন।
এ কেন্দ্রের ভোটার স্বামীবাগের বাসিন্দা ছাবিনা জামান এসেছেন ইভিএমে ভোট দেয়া শিখতে। প্রায় আধা ঘণ্টা চেষ্টার পর তার আঙুলের ছাপ মেলে।
ছাবিনা জামান বলেন, ‘জানতে আসছিলাম কীভাবে যন্ত্রের সাহায্যে ভোট দেব। কিন্তু আমার আঙুলের ছাপ মিলছিল না। শেষে অন্য একজন অফিসার এসে কী কী করায় মিলল। শিখলাম কীভাবে ভোট দিতে হবে। তবে অফিসাররা জানিয়েছেন ছবি মিললে আঙুলের ছাপ না মিললেও ভোট নেয়া হবে।’
এ কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার কে এম আতিকুজ্জামান বলেন, ‘আমরা তো অনেক প্রচারণা চালালাম কিন্তু ভোটারদের সাড়া পেলাম না। শীতের দিন এবং মহিলারা কাটাকুটির কাজ বেশি করায় তাদের আঙুলের ছাপ ম্যাচ করা নিয়ে একটু সমস্যা হচ্ছে। আশা করি ভোটের দিন সবাই নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারবেন, কোনো সমস্যা হবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘ভোটের দিন কারো আঙুলের ছাপ না মিললেও যদি পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায় তবে সহকারী প্রিজাইডিং অফিসাররা তাদের আঙুলের ছাপের মাধ্যমে ভোট নেয়ার ব্যবস্থা করে দেবেন।’
যেভাবে ভোট দিতে হবে ইভিএমে
ইভিএমে ভোট দেয়ার প্রক্রিয়া তুলে ধরেন সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার রাম কুমার ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, ভোটার ভোট কেন্দ্রে আসলে প্রথমে ভোটার তালিকার সঙ্গে মেলানো হবে। সেই তালিকায় ভোটার স্বাক্ষর বা টিপসই দেবেন। এরপর ভোটারের স্মার্ট কার্ড বা এনআইডি নম্বর কন্ট্রোল ইউনিটে প্রবেশ করানো হবে এবং তার আঙুলের ছাপ নেয়া হবে। আঙুলের ছাপ ম্যাচ করলে গোপন কক্ষে থাকা ইলেকট্রনিক ব্যালট সক্রিয় হবে। সেখানে গিয়ে ভোট দেবেন ভোটার।
তিনি আরও বলেন, ইলেকট্রনিক ব্যালট ইউনিটে প্রতীক ও প্রার্থীর নাম ভেসে উঠবে। পাশে একটি বাটনও থাকবে। যে প্রতীকে প্রার্থী ভোট দেবেন পাশের সেই বাটনে চাপ দিতে হবে। এরপর সবুজ (কনফার্ম) বাটন চাপলেই স্ক্রিন জুড়ে ভোট দেয়া প্রতীক চলে আসবে। এভাবে ভোট দেয়ার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।
প্রথমে কেউ ভুল প্রতীকের বাটনে চাপ দিলে পরে (ক্যানসেল না চেপে) সঠিক প্রতীকের বাটনে চাপ দিয়ে কনফার্ম বাটন চাপতে হবে বলেও জানান তিনি।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন