পর্যটকদের হাতছানি দিয়ে ডাকছে কুয়াকাটার গঙ্গামতি চর
লাল কাকড়ার অবাধ বিচারণ, আর ভোরবেলা সমুদ্রের বুক চিরে জেগে ওঠা লাল বৃত্তে ঘেরা সুর্যোদয়ের দৃশ্য যেন স্বর্গীয় আবেশ ছড়িয়ে দেয়। বিধাতার আপন হাতেই যেন সাজানো হয়েছে নৈসর্গিক এক প্রকৃতি।
যা সাহিত্যপ্রেমীসহ ভ্রমনপিপাসুদের হৃদয়ে বিমুগ্ধতা ছড়িয়ে মায়বীরুপে আকৃষ্ট করতেই যথেষ্ট। যেন নয়নে নেশার ঘোর না কাটিয়ে মোহময় প্রকৃতি প্রেম জাগিয়ে বার বার হাতছানি দিয়ে ডাকে। তাই দিনে দিনে দর্শণার্থীদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে কুয়াকাটার গঙ্গামতির চর।
কুয়াকাটার সমুদ্র সৈকত থেকে মাত্র ৭ কিলোমিটার পূর্বে দীর্ঘ গঙ্গামতির বেলাভুমি পর্যটকদের কাছে ইতোমধ্যেই দৃষ্টিনন্দন স্পট হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। বিশাল আয়তনের সবুজ বেষ্টনির মাঝখান দিয়ে বয়ে চলা সমুদ্রমিলিত ২টি স্বচ্ছ পানির লেক সৌন্দার্য্য বর্ধনে এই চরকে সাজিয়েছে অলংকার হিসেবে। আর এই লেকের মধ্যেদিয়েই মৎস্য আহরোণকারী নৌকা-ট্রলার যাতায়াতের মনমুগ্ধকর দৃশ্য পর্যটকদের আরো আকৃষ্ট করে তোলে।
এখানে প্রকৃতির কারুকাজে ঢেলে সাজানো এই বেলাভুমিতে দাড়িয়ে স্বচ্ছ জলরাশির সাথে খেলায় মেতে ওঠেন আগন্তুকরা। উপভোগ করেন সমুদ্রের মোহনীয় গর্জন। সমুদ্র তীরে বেড়ে ওঠা সবুজ বনাঞ্চালসহ ঝাউবনে পাখির কলরব প্রকৃতিপ্রেমীদের হৃদয়ে প্রেম জাগিয়ে তোলে। এসব উপভোগ্য দৃশ্য অবলোকন করতেই দুর-দুরান্ত থেকে প্রতি বছর কুয়াকাটায় ছুটে আসেন হাজারো ভ্রমনপিপাসুরা। আর পর্যটকরাও বলছেন, কুয়াকাটায় বেড়াতে এসে গঙ্গামতির চর ঘুরে না এলে বোঝার উপায় নেই যে বিধাতার সৃষ্টি কত সুন্দর।
শুক্রবার (১১ নভেম্বর) সকালে গঙ্গামতির চরে ঘুরতে আসা পর্যটক তাপোসের সাথে কথা হলে তিনি জানান, দীর্ঘ বছর পর স্ত্রী এবং ২ সন্তানকে নিয়ে ঢাকা থেকে কুয়াকাটায় এসেছেন তিনি। গত কয়েকদিনে কুয়াকাটায় রাস মেলা উদযাপনসহ বেশ কিছু দর্শনীয় স্থান ঘুরেছেন তারা। তবে মোটোরসাইকেল ড্রাইভারদের মুখে গঙ্গামতির কথা শুনে এখানে এসছেন। তার ভাষ্যমতে গঙ্গামতি না এলে হয়তো ভ্রমনে অপূর্ণতাই থেকে যেতো। এতো সুন্দর দৃষ্টিনন্দন স্পট রয়েছে এর আগে কখনো জানতেন না তিনি। ফের বন্ধুদের নিয়ে গঙ্গামতির চরে পিকনিকে আসবেন বলেও জানান এই পর্যটনপ্রেমী।
রাজশাহী থেকে আসা পর্যটক সজীব,রাকায়েত মুন্নারা জানান, এর আগেও বহু পর্যটন এলাকায় ভ্রমন করেছেন তারা। কিন্তু কুয়াকাটায় গঙ্গামতি নামে এই চরে এসে তাদের উচ্ছাসটা ছিল অনেক। এখানে সবকিছুই অকৃত্রিম এবং ভাল লাগার মত। তবে এখানে আসার জন্য স্পীডবোট বা হোন্ডা ছাড়া বিকল্প ব্যবস্থা নেই। যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হলে দেশের মধ্যে এই স্থানটি সম্ভাবনা সৃষ্টি করবে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন এই পর্যটকরা।
এদিকে পর্যটনশিল্প নিয়ে কাজ করছেন সংশ্লিষ্ট এমন ব্যক্তিরা বলছেন, সম্ভবনাময় পর্যটন এলাকা থাকলেও সংশ্লিষ্ট দপ্তরের পরিকল্পিত কোন উদ্যোগ নেই। ফলে গঙ্গামতি চর আশানুরুপ বিপ্লব ঘটাতে পারছে না। কুয়াকাটা ট্যুরিষ্ট পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার আবদুল খালেক জানান, প্রতিদিন সকালে গঙ্গামতি পর্যটকদের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। আমরা সব সময়ই পর্যটকদের সেবায় সচেষ্ট আছি। ট্যুরিষ্ট পুলিশের সদস্যরা ওই এলাকায় দায়িত্ব পালন করেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন