পর্যটক আকৃষ্ট করতে অন অ্যারাইভাল ভিসা দেয়ার উদ্যোগ

বিদেশি পর্যটকদের বাংলাদেশে প্রবেশাধিকার সহজ করতে এবং পর্যটন খাতের উন্নয়নের জন্য ভিসা প্রক্রিয়া আরও সহজীকরণের পরিকল্পনা করেছে সরকার।

বাংলাদেশ পর্যটন বোর্ডের কর্মকর্তারা জানান, পর্যটকদের আরও আকৃষ্ট করতে এবং এ দেশে তাদের ঝালেমামুক্ত আগমন নিশ্চিত করতে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূতসহ বিদেশি নাগরিকদের বিমানবন্দর ও স্থলবন্দরে আগমনী ভিসা (ভিসা অন অ্যারাইভাল) প্রদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

বিমানবন্দর ও স্থলবন্দরের প্রবেশপথে অভিবাসন কর্মকর্তারা পর্যটকদের সব প্রাসঙ্গিক নথি পরীক্ষা করে অনুমোদন দেবেন। খবর ইউএনবির।

বাংলাদেশ পর্যটন বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিখিল রঞ্জল রায় বলেন, ‘পর্যটকদের জন্য ভিসা প্রক্রিয়া সহজতর করতে মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ পর্যটন বোর্ড সর্বদা সচেষ্ট রয়েছে।’

তিনি বলেন, এ ব্যাপারে তারা স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করছেন। ‘আমি আশাবাদী যে সেটি (স্থলবন্দরে আগমনী ভিসা) কার্যকর করা হবে। ভিসার প্রক্রিয়া সহজতর করার এ ব্যাপারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও ইতিবাচক রয়েছে।’

ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (টোয়াব) পরিচালক তৌফিক রহমান বলেন, বিমানবন্দরে বিদেশিরা আগমনী ভিসা পেলেও স্থলবন্দরে পান না।

‘বিমানবন্দরে প্রদেয় এ সুবিধাগুলো ইতিমধ্যে তাদের নথিতে রয়েছে। আমাদের সব স্থলবন্দরেও এ সুবিধা কার্যকর করতে হবে,’ বলেন তিনি।

‘স্থলবন্দরে অভিবাসন কর্মকর্তা আগমনী ভিসা সম্পর্কে ভালোভাবে জানেন না। পর্যটনশিল্পকে উৎসাহিত করার জন্য এর প্রয়োজন রয়েছে,’ বলেন তিনি।

এ ছাড়া ট্যুর অপারেটর, সমুদ্রবন্দরে আগমনী ভিসা চালু করার বিষয়েও পরামর্শ দেন, যাতে সমুদ্রে ভ্রমণকারী জাহাজগুলো (ক্রুজ শিপ)-এর মাধ্যমে বাংলাদেশে তাদের ভ্রমণের সময় বাড়াতে পারে।

এক সরকারি কর্মকর্তা বলেন, বাংলাদেশের ভিসা প্রক্রিয়া পর্যটনদের জন্য বেশ সহায়ক। বিদেশে বাংলাদেশ মিশনগুলো সর্বনিম্ন সম্ভব সময়ে পর্যটকদের কাছে ভিসা প্রদান করে। আগমনী ভিসা আরও সহজতর হলে এটি পর্যটকদের আকর্ষণ করতে পারে বলে জানান তিনি।

এক কূটনৈতিক বলেন, ‘আমরা কয়েকটি দেশে আগমনী ভিসার বিশেষ সুযোগ প্রদান করেছি। আমরা আমাদের পর্যটন খাতের ওপর এর প্রভাব সম্পর্কে জানি না। এখনই এটি খুঁজে বের করার সময়। এটি আমাদের যথাযথ ব্যবস্থা নিতে সাহায্য করবে।’

ট্যুর অপারেটররা বিদেশে বাংলাদেশি মিশনের মাধ্যমে পর্যটনশিল্পে বাংলাদেশের ইতিবাচক পদক্ষেপের ব্যাপক প্রচারের পরামর্শ দেন। সেই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মধ্যে ভালো সমন্বয় করে বিদেশি পর্যটকদের আকর্ষণ করার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান।

সংশ্লিষ্ট তথ্যানুযায়ী, ২০১৬ সালে ছয় লাখ ২০ হাজার বিদেশি পর্যটক বাংলাদেশে ভ্রমণ করেছেন। যদিও সরকারের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১০ লাখ পর্যটক।

২০১৬ সালের পঞ্জিকাবর্ষে পর্যটন খাত থেকে বাংলাদেশ ১৬৩ দশমিক ২১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করেছে। ২০১৫ সালে যা ছিল ১৪৫ দশমিক ৭৪ মিলিয়ন ডলার।