পল্টনের ঘটনায় ৩০ হামলাকারী শনাক্ত : ডিএমপি কমিশনার
রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে পুলিশের ওপর অতর্কিত আক্রমণ ছিল পূর্ব পরিকল্পিত। হামলায় পুলিশের সম্পূর্ণ নতুন দুটি গাড়ি ভস্মীভূত হয়েছে ও ৫ জন কর্মকর্তাসহ আহত হয়েছেন ২৩ জন পুলিশ সদস্য। ওই হামলায় জড়িত ৩০ জনকে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে শনাক্ত করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে অনানুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেছেন ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া।
পুলিশের ওপর হামলার ঘটনাকে অনাকাঙ্ক্ষিত এবং অপ্রত্যাশিত উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, হামলায় পুলিশের নতুন দুটি গাড়ি ভস্মীভূত হয়েছে ও ৫ জন কর্মকর্তাসহ ২৩ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। তারা সবাই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, গত ৭ দিন ধরে বিএনপি নমিনেশন পেপার ক্রয় এবং জমা দেয়ার কাজ সুশৃঙ্খলভাবে ও আনন্দমুখর পরিবেশে হয়েছে। ঘটনার দিন বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীরা বড় বড় মিছিল নিয়ে, শোভাযাত্রা ও বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে পুরো রাস্তা দখল করে। এর ফলে পশ্চিমে কাকরাইল ও পূর্বে ফকিরাপুল পর্যন্ত পুরো রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়।
তিনি বলেন, নির্বাচনী আচরণ বিধিতে বলা হয়েছে রাস্তা অবরোধ করা যাবে না, পদ শোভাযাত্রা করা যাবে না, বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে জনগণের দুর্ভোগ করা তৈরি করা যাবে না। কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যরা, বিএনপি নেতাকর্মীদের অনুরোধ করেছিলেন- পুরো রাস্তাটি যেন বন্ধ না করা হয়।
আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, শহরের কেন্দ্রস্থল ও পাশেই মতিঝিল হওয়ায় মানুষের চরম দুর্ভোগ হচ্ছিল। এই অনুরোধের প্রেক্ষিতে বিএনপির একজন কেন্দ্রীয় নেতা বড় মিছিল নিয়ে এলেন, তখন পুলিশের এই অনুরোধ নিয়ে বাদানুবাদ শুরু হয়। একপর্যায়ে কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই পুলিশের ওপর অতর্কিত আক্রমণ করা হয়।
পুলিশের ওপর আক্রমণে বড় বড় লাঠি ব্যবহার করা হয়েছে উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, আক্রমণে ৪-৫ হাত লম্বা লাঠি ব্যবহার করা হয়েছে। এ লাঠি এখানে কিভাবে এলো? এ ব্যাপারে আমরা সুনিশ্চিত হয়েছি পুলিশের ওপর আক্রমন ছিল সম্পূর্ণভাবে পূর্বপরিকল্পিত। পুলিশকে উত্তেজিত করে, একটি দুর্ঘটনা ঘটিয়ে নির্বাচনী পরিবেশকে ভণ্ডুল করা, অনিশ্চিত পরিবেশ সৃষ্টির অসৎ উদ্দেশ্যে পুলিশের ওপর এ ধরনের হামলা করা হয়েছে।
হামলাকারীরা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মী উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, গড়িতে আগুন লাগিয়ে ও গাড়ির ওপর দাঁড়িয়ে যারা তাণ্ডব চালিয়েছে সেগুলো বিভিন্ন মিডিয়ার মাধ্যমে দেশবাসী দেখতে পেরেছে। ৫ জন কর্মকর্তাসহ ২৩ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। তারা সবাই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তাদেরকে বাঁশ দিয়ে, লাঠি দিয়ে পেটানো হয়েছে। পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট পাটকেল ছোড়া হয়েছে। বিভিন্ন সোর্সের মাধ্যমে তাদের পরিচয় শনাক্ত করাহয়েছে। তারা সকলেই বিএনপি ও দলটির বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মী।
এ ঘটনায় তিনটি মামলা করা হয়েছে জানিয়ে আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, ঘটনা পর্যবেক্ষণ করে ৩টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে ৬০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ৩০ জন হামলাকারীকে এরই মধ্যে শনাক্ত করা হয়েছে। অন্যদের শনাক্ত করার কাজ কাজ অব্যাহত রয়েছে। মামলাটি নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করার জন্য ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগ ও মতিঝিল ক্রাইম বিভাগের চৌকস কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন