পাঁচ সিটিতে জটিলতা নেই, যথাসময়েই নির্বাচন

আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই পাঁচ সিটি করপোরেশনে (গাজীপুর, খুলনা, রাজশাহী, বরিশাল ও সিলেট) ভোট করতে কোনো আইনি জটিলতা নেই। স্থানীয় সরকার বিভাগ নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) এ তথ্য জানিয়েছে।

সুতরাং এসব সিটি করপোরেশনে সময় মতো ভোট আয়োজনে কোনো বাধা নেই। আগামী ৩১ মার্চ গাজীপুর ও খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করতে সভা করবে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি। এ দুই সিটিতে ভোটগ্রহণের সম্ভাব্য তারিখ ১০ মে ভাবা হচ্ছে। এছাড়া বাকি তিন সিটিতেও যথাসময়ে নির্বাচন করতে চায় কমিশন। ইসি সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, সংসদ ভোটের আগেই এই পাঁচ সিটিতে ভোটের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। যেহেতু এর আগে ঢাকার দুই সিটি নিয়ে নির্বাচন তফসিল ঘোষণা করার পরও জটিলতা থাকায় বন্ধ করতে হয়েছে। তাই এসব সিটিতে কোনো জটিলতা আছে কি না তা আগে থেকেই জানার জন্য দুই দফায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয় ইসি। ওই চিঠির জবাবে মন্ত্রণালয় বুধবার ইসিকে জানায় এসব নির্বাচনে কোনো জটিলতা নেই।

ইসি কর্মকর্তারা জানান, এর আগে ঢাকার দুই সিটির তফসিল ঘোষণা করার পরও জটিলতা থাকায় হাইকোর্টে রিট করলে তা বন্ধ করে দেয়া হয়। আগামী সংসদ নির্বাচনের আগে কোনো রকম সমালোচনার মুখে পড়তে চায় না কমিশন। আর তাই এ পাঁচ সিটিতে জটিলতা এড়াতে মন্ত্রণালয়কে ওই চিঠি দেয়া হয়েছিল।

সূত্র জানায়, আসছে রমজানের আগে গাজীপুর ও খুলনা সিটি ভোটের পর যথা সময়েই বাকি তিন সিটিতে ভোট আয়োজনের প্রস্তুতি নিয়ে রাখছে ইসি। যদিও এরই মধ্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদা বলেছেন, জুলাইয়ের মধ্যে এসব নির্বাচন সম্পন্ন করতে চায় কমিশন।

চিঠির জবাবের বিষয়ে ইসির অতিরিক্ত সচিব মো. মোখলেছুর রহমান বলেন, স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে চিঠির জবাব আমরা পেয়েছি। জবাবে বলা হয়েছে- পাঁচ সিটিতে নির্বাচন করতে কোনো জটিলতা নেই।

তিনি বলেন, রোজার আগে গাজীপুর ও খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচন করার পরিকল্পনা রয়েছে কমিশনের। তবে কোন দিন ভোটগ্রহণ করা হবে ৩১ মার্চ কমিশন সভায় সেই তারিখ ঠিক করা হবে। আর বাকি তিন সিটিতে যথা সময়েই ভোটগ্রহণ করা হবে।

ইসির সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ৫ বছর মেয়াদ পূর্ণ হবে ৪ সেপ্টেম্বর, সিলেটের ৮ অক্টোবর, খুলনার ২৫ সেপ্টেম্বর, রাজশাহীর ৫ অক্টোবর এবং বরিশালের ২৩ অক্টোবর। স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন অনুযায়ী করপোরেশনের প্রথম বৈঠক থেকে ৫ বছর মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার ১৮০ দিন আগে যে কোনো সময় নির্বাচন করতে হবে।

গাজীপুর সিটির প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয় ২০১৩ সালের ৫ সেপ্টেম্বর। সেই হিসাবে আইন অনুযায়ী গাজীপুর সিটি ৮ মার্চ থেকে নির্বাচনের দিন গণনা শুরু হয়েছে।

এছাড়া খুলনায় ২০১৩ সালের ১৫ জুন প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়। সে হিসাবে এই সিটিতে নির্বাচনের দিন গণনা শুরু হবে ৩০ মার্চ। রাজশাহীতে প্রথম সভা হয় ২০১৩ সালের ৬ অক্টোবর। সে হিসাবে দিন গণনা শুরু হবে ৯ এপ্রিল। সিলেটে প্রথম সভা হয় ২০১৩ সালের ৯ অক্টোবর, সে হিসাবে দিন গণনা শুরু হবে ১১ এপ্রিল এবং বরিশাল সিটিতে প্রথম সভা হয় ২০১৩ সালের ২৪ অক্টোবর, সে হিসাবে ২৭ এপ্রিল থেকে নির্বাচনের দিন গণনা শুরু হবে।

সূত্র জানায়, গাজীপুর, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল ও সিলেট সিটি করপোরেশনের সীমানা, ওয়ার্ড বিভক্তীকরণ, আদালতের আদেশ প্রতিপালন ও প্রাসঙ্গিক বিষয়ে সর্বশেষ অবস্থাসহ মতামত জানাতে স্থানীয় সরকার বিভাগকে দুই দফায় চিঠি দিয়েছিল ইসি। ইসির চিঠির প্রেক্ষিতে ১৫ মার্চ জেলা প্রশাসকদের কাছে তথ্য চেয়ে চিঠি দেয় স্থানীয় সরকার বিভাগ। মাঠপর্যায়ে খোঁজ নেয়ার পর এই পাঁচ সিটি নির্বাচনে কোনো জটিলতা পাওয়া যায়নি বলে ইসিকে জানায় মন্ত্রণালয়।

২০১৩ সালের ১৫ জুন একই দিন সিলেট, খুলনা, রাজশাহী ও বরিশাল এবং একই বছরের ৬ জুলাই গাজীপুর সিটি করপোরেশনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল।