পাখিপ্রেমী পরিচয়ে চরাঞ্চলে বাড়ি ভাড়া নিয়েছিল জঙ্গিরা

চাঁপাইনবাবগঞ্জের যে বাড়িটিতে র‌্যাব অভিযান চালিয়েছে সেটি মূলত একটি বাথানবাড়ি। গবাদিপশু লালনপালনের কাজেই এই বাড়িটি ব্যবহার করা হতো। জঙ্গিরা পাখিপ্রেমী পরিচয়ে এই বাড়ি ভাড়া নেয়। লোকালয় থেকে দূরে চরের মাঝখানে এই বাড়িতে থেকে বিভিন্ন ধরনের পাখি দেখবে বলে জানিয়েছিল জঙ্গিরা। তারা বাড়ির মালিককে তাদের তোলা পাখির ছবিও দেখিয়েছে। তবে সেখানে জঙ্গি প্রশিক্ষণের কাজ করা হতো। র‌্যাবের মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান এই তথ্য জানিয়েছেন।

র‌্যাব সদস্যরা মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) ভোররাতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার চর আলাতুলীর মধ্যচরে ওই বাড়িতে অভিযান চালায়। র‌্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে জঙ্গিরা হামলা চালায়। আত্মসমর্পণের আহ্বান জানানো হলেও তারা তাতে সারা দেয়নি। র‌্যাবও পাল্টা গুলি চালায়। পরে আস্তানার ভেতরে বিস্ফোরণে তিন জঙ্গি নিহত হয়। নিহতদের পরিচয় জানা যায়নি।

চর আলাতুলীর জঙ্গি আস্তানায় র‌্যাবের মিডিয়া উইং এর প্রধান মুফতি মাহমুদ খান

মুফতি মাহমুদ খান ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদের বলেন, ‘এর আগে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও আশপাশের এলাকায় জঙ্গি আস্তানায় অভিযান চালিয়ে যাদের পাওয়া গেছে তাদের কাছ থেকেই চল আলাতুলীর এই আস্তানার তথ্য পাই আমরা। পরে এই এলাকায় নজর রাখা হয়। স্থানীয়দের কাছ থেকেও কিছু তথ্য পাওয়া যায়। আমাদের ধারণা রাজশাহীর কোনও এলাকায় নাশকতা চালানোর জন্য এখান থেকে প্রশিক্ষণ ও সংগঠিত হওয়ার কাজ করছিল জঙ্গিরা।’ জঙ্গিদের গায়ে লাগানো ভেস্ট থেকেই তাদের মৃত্যু হয়েছে বলে জানান তিনি।

মুফতি মাহমুদ খান বলেন, ‘ওই আস্তানায় দুটি বোমা ও ডেটোনেটর নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে। ফরেনসিক টিম এখনও কাজ করছে। বিস্ফোরণে পুরো বাড়ি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।’

চাঁপাইনবাবগঞ্জের চর আলাতুলীতে জঙ্গি আস্তানায় র‌্যাবের অভিযান

জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বাড়ির মালিক রাশিকুলের স্ত্রী নাজমা বেগম, নাজমার মা-বাবা মিনারা বেগম ও খোরশেদ আলীকে র‌্যাব হেফাজতে নিয়েছে বলেও জানান তিনি। তারা এই আস্তানা থেকে দূরে অন্য একটি বাড়িতে থাকেন।রাশিকুল দীর্ঘদিন ধরে রোগের কারণে বিছানায় পড়ে আছেন।

উল্লেখ্য চর আলাতুলী চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার অন্তর্ভুক্ত একটি চরাঞ্চল। রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলা সদর থেকে এটি দুই কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। পদ্মা নদী পার হয়ে সেখানে যেতে হয়। এলাকাটি ভারতীয় সীমান্তঘেঁষা।