পাচার অর্থ ফিরিয়ে আনতে যুক্তরাজ্যের সহায়তা চাইলেন মাহফুজ

পাচারকৃত অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনতে যুক্তরাজ্যের সহায়তা চেয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। বুধবার বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুকের সঙ্গে এক বৈঠকে এ আহ্বান জানান তিনি।

এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।

শেখ হাসিনার গত শাসনামলে দেশের বিভিন্ন খাত থেকে নজিরবিহীন লুটপাট হয়েছে। দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের নেতৃত্বাধীন অর্থনৈতিক পরিস্থিতিবিষয়ক শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি জানিয়েছে, আওয়ামী লীগের শাসনামলে দেশ থেকে ২৩৪ বিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ ২৮ লাখ কোটি টাকা (ডলারের বর্তমান বাজারদর ১২০ টাকা হিসাবে) পাচার হয়েছে।

এছাড়া সম্প্রতি দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল এবং ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম অবজারভারের যৌথ অনুসন্ধানে জানা গেছে, এই সম্পত্তির মোট মূল্য ৪০ কোটি পাউন্ডের (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা) বেশি। এসব সম্পত্তি বাংলাদেশ থেকে পাচার করা অর্থ দিয়ে কেনা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রায় ১৩ বিলিয়ন পাউন্ডের সম্পদের অনুসন্ধান করছে, যার মধ্যে লন্ডনসহ বিশ্বব্যাপী গোপনে কেনা সম্পত্তি রয়েছে।

বুধবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে বলা হয়েছে, দেশ থেকে পাচারকৃত অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনতে এবং অতীতের স্বৈরাচারী শাসনের দ্বারা ভঙ্গুর অবস্থায় পড়ে থাকা অর্থনীতি পরিচালনা করতে যুক্তরাজ্যের সমর্থন চেয়েছেন মাহফুজ আলম।

মাহফুজ বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে পাচার করা বহু অর্থ যুক্তরাজ্যে আছে। অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের জন্য আমরা সেই অর্থ ফেরত চাই’।

মাহফুজ হাইকমিশনারকে নির্বাচন প্রক্রিয়াসহ বিভিন্ন বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য সৃষ্টিতে সরকারের প্রচেষ্টার ব্যাখ্যা দেন।

তিনি বলেন, ‘এটি আমাদের বিপ্লব এবং আমাদের এটি রক্ষা করতে হবে’।

‘জুলাই বিপ্লবের আদর্শ ছিল মূলত মর্যাদার লড়াই। বহু বছর ধরে বাংলাদেশিদের মর্যাদা ছিল না। সুতরাং, এই বিপ্লবের সাথে তাদের এক ধরণের আবেগ রয়েছে’।

তিনি আরো বলেন, ‘সমতা ও ন্যায়বিচারের জন্যও তাদের এই লড়াই।

হাইকমিশনার কুক বাংলাদেশে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের পথ তৈরিতে অন্তর্বর্তী সরকারের কাজকে অন্তর্বর্তী সরকার এবং যুক্তরাজ্যের সমর্থনের সামনে চ্যালেঞ্জ তুলে ধরেন।

মাহফুজ যুক্তরাজ্যের জারি করা নতুন ভ্রমণ সতর্কতার বিষয়টি উত্থাপন করেছেন যা মঙ্গলবার ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

হাইকমিশনার কুক উপদেষ্টা মাহফুজকে আশ্বস্ত করে বলেছেন, পররাষ্ট্র দপ্তর, কমনওয়েলথ ও উন্নয়ন অফিসের তথ্য নিয়ে যুক্তরাজ্য ক্রমাগত প্রতিটি দেশের জন্য ভ্রমণ পরামর্শ পর্যালোচনা করে। এতে ব্রিটিশ নাগরিকদের আসা বা বসবাস করা সবচেয়ে প্রাসঙ্গিক বিষয়গুলোর উপর হালনাগাদ তথ্য এবং পরামর্শ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।