পাটুরিয়া-দৌলতদিয়ায় পদ্মা পারের অপেক্ষায় শত শত যান ।। ঘন কুয়াশায় ফেরি চলাচল বিঘ্নিত
পাটুরিয়া-দৌলতদিয়ায় পদ্মা পারের অপেক্ষায় শত শত যানবাহন। ঘন কুয়াশায় ফেরি চলাচল বিঘ্নিত হওয়ায় এই জনদুর্ভোগে পড়েছে যাত্রীসহ যানবাহনের শ্রমিকরা। ফলে ফেরি পারের অপেক্ষায় উভয় পাড়ে আটকে আছে শত শত যানবাহন।
রবিবার রাত ১২টা থেকে সোমবার বেলা প্রায় ১১টা পর্যন্ত ফেরি চলাচল বন্ধ ছিল। এরপর ফেরি চলাচল শুরু হলে যানবাহন পদ্মা পার করতে শুরু করে।
যার ফলে পদ্মাপারে আটকা পড়েছে কয়েকশ যানবাহন। ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষায় থেকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে ফেরি পার হতে আসা যাত্রীদের।
হঠাৎ কুয়াশার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় দুর্ঘটনা এড়াতে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌ-রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি)।
পাটুরিয়া ফেরি ঘাট এলাকা থেকে আমাদের প্রতিনিধি মনজুরুজ্জামান ও ইয়াসিন আলী জানান, চরম দূর্ভোগে নাভিশ্বাস উঠেছে পরিবহনের যাত্রীরা। গভীর রাত থেকে সকাল দশটা পর্যন্ত টয়লেট, খাওয়া-দাওয়া ও নিরাপত্তা সহ নানান দূর্ভোগে পড়তে হয় যাত্রীদের। শিশু ও বৃদ্ধ যাত্রীরা চরম কষ্ট ভোগ করেছেন।
যশোরের ঝিকরগাছায় যাবেন এমন এক মহিলা যাত্রী বলেন, তার পিতা মারা যাওয়ায় তিনি রবিবার সন্ধ্যার পরে ঢাকা থেকে গাড়িতে রওনা দিয়েছেন। সোমবার সকাল দশটা নাগাদ তিনি কোনোভাবেই ফেরি ঘাট পার হতে পারেন নাই। পরে সীমিত আকারে ফেরি এবং লঞ্চ চলাচল শুরু হলে তিনি গাড়ির অপেক্ষা না করে বিকল্প ভাবে পার হয়ে চলে যান।
আরেক যাত্রী জানান, তিনি রবিবার সন্ধ্যা ৭ টায় গাড়িতে ঢাকা থেকে রওনা হন। এখন সোমবার বেলা পৌনে দুটো বাজে, এখনো পর্যন্ত ফেরিতে উঠতে পারেন নাই। অপেক্ষা করছেন। সেই সাথে বাড়ছে কষ্ট ও দুর্যোগ।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বেলা বারোটার দিকে ফেরি চলাচল সীমিত আকারে শুরু হলে দুই পাড়ে শত শত যানবাহন লাইনে দাঁড়িয়ে আছে। প্রাথমিকভাবে পণ্যবাহী ট্রাক গুলো পার্কিং করে রেখে যাত্রীবাহী পরিবহন গুলো পার করার ব্যবস্থা করছেন কর্তৃপক্ষ।
বিআইডব্লিউটিসি আরিচা সেক্টরের ডিজিএম জিল্লুর রহমান বলেন, ‘মাঝ পদ্মায় কুয়াশা বেড়ে যাওয়ায় ফেরির মার্কিং বাতির আলো অস্পষ্ট হয়ে আসায় দুর্ঘটনা এড়াতে রাত ১২টা থেকে ফেরি চলাচল বন্ধ রাখেন কর্তৃপক্ষ। যার ফলে ফেরি গুলো লোড নিয়ে ঘাট এলাকাতেই নোঙর করে রাখা হয়। যানজটেরও সৃষ্টি হয়েছে।’
‘কুয়াশার তীব্রতা কমে এলে আবারও ফেরি চলাচল স্বাভাবিক করার চেষ্টা করা হচ্ছে’ বলেও জানান তিনি।
‘কোনো ফেরি মাঝ পদ্মায় যাত্রী কিংবা যানবাহন নিয়ে আটকে পড়েছে কিনা জানতে চাইলে সঠিক তথ্য দিতে পারেননি’ বিআইডব্লিউটিসি আরিচা সেক্টরের ডিজিএম জিল্লুর রহমান।
এদিকে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, মাঝ নদীতে যাত্রী ও যানবাহন নিয়ে নোঙর করে রাখা হয় সাতটি ফেরি। ফেরি পারাপার বন্ধ থাকায় পাটুরিয়া ঘাটে প্রায় পাঁচ শতাধিক যানবাহন পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে। একই চিত্র দোলোদিয়া ঘাটেও।
এ ব্যাপারে বিআইডব্লিউটিসি আরিচা অফিসের ম্যানেজার মহিউদ্দিন রাসেল জানান, রোববার (৬ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত ১০টার পর থেকে থেকে পদ্মা নদী কুয়াশার আবরণে ঢাকতে থাকে। রাত সাড়ে ১২টার দিকে কুয়াশার প্রকোপ আরও বেড়ে যায়। নৌ দূর্ঘটনা এড়াতে ফেরি পারাপার বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়।
মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার বিআইডব্লিউটিসি পাটুরিয়া ঘাট পয়েন্টের বাণিজ্য বিভাগের সহকারী ব্যবস্থাপক মহিউদ্দিন রাসেল বলেন, নদীতে কুয়াশার ঘনত্ব বেড়ে যাওয়ায় দুর্ঘটনা এড়াতে ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হয়।
তবে কুয়াশার ঘনত্ব কমে গেলে পুনরায় ফেরি চলাচল স্বাভাবিক হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
এদিকে,ঘন কুয়াশার কারণে বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌরুটেও ফেরি, স্পিডবোট ও লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে। রবিবার ভোর সাড়ে ৫টা থেকে এ রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ করা হয়। পরে সকাল ৭টা থেকে লঞ্চ চলাচলও বন্ধ করে কর্তৃপক্ষ।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন