পানামা পেপারসে এবার ডোনাল্ড ট্রাম্পের নাম
পানামা পেপারসে এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নাম শোনা যায়নি। তবে এবার তা খুঁজে বের করেছেন দেশটির অনুসন্ধানী প্রতিবেদক জ্যাকি বার্নস্টেইন। তিনি পানামা পেপারস উন্মুক্তকারী প্রতিষ্ঠান আইসিআইজে’র তথ্যভাণ্ডার ঘেঁটে তিন হাজার ৪৫০ বার ডোনাল্ড ট্রাম্পের নাম খুঁজে পান। নিজের অনুসন্ধানের ভিত্তিতে শুক্রবার জ্যাকি বার্নস্টেইন তার ওয়েবসাইটে ট্রাম্পসহ পানামা পেপারসে নাম থাকা বিশ্বের বেশকিছু ধনী ও ক্ষমতাধর ব্যক্তির তথ্য প্রকাশ করেন। শনিবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম নিউজউইক।
প্রায় সাড়ে তিন হাজার বার ট্রাম্পের নাম থাকার বিষয়টি বিস্ময় তৈরি করেছে। নিউজউইক বলছে, এর সবগুলোর সঙ্গে হয়তো ট্রাম্প জড়িত নন। কোনও কোনও ক্ষেত্রে অন্য কেউ তার নাম ব্যবহার করে থাকতে পারে।
পানামা পেপারস প্রকাশ করে অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের আন্তর্জাতিক সহায়তা সংগঠন আইসিআইজে। এতে ট্রাম্প ছাড়াও সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরুন ও আইসল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী সিগমুন্ডারসহ বিশ্বনেতাদের নাম উঠে আসে।
পানামার মোসাক ফনসেকা নামের একটি আইনি প্রতিষ্ঠান নির্দিষ্ট ফি-এর বিনিময়ে মক্কেলদের জন্য বেনামে বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলে। এর মাধ্যমে তারা সম্পদ গোপন এবং কর ফাঁকি দিয়ে ওই অপ্রদর্শিত আয়কে বৈধভাবে ব্যবহারের সুযোগ পান।
জ্যাকি বার্নস্টেইন জানান, ১৯৮৫ সালে নাম উল্লেখ না করে কোনও ব্যক্তি ‘প্রসেস কনসালটেন্স’ নামে একটি ভুয়া কোম্পানি খোলে। কোম্পানিটি ১৯৯১ সালে ট্রাম্প প্যালেসের কিছু ফ্ল্যাট কিনে নেয়। তিন বছর পর ট্রাম্প কর্পোরেশনের একটি চুক্তির আওতায় তাদের কাছেই তা বিক্রি করে দেয়।
বার্নস্টেইন বলেন, ট্রাম্পের বাড়ি বেচা-কেনার ঘটনাই প্রসেস কনসালটেন্সের শেষ কাজ নয়। ২০০৬ সালে মোসাক ফনসেকা ইকুয়েডরের একজন শিল্পপতির সঙ্গে কোম্পানির ব্যাপারে যোগাযোগ করে। বার্নস্টেইনের ধারণা, ‘প্রসেস কনসালটেন্স’-এর ব্যাপারে এসব কথা হয়। দৃশ্যত, প্রতিষ্ঠানটির মালিক এটি বন্ধ করে দিতে চেয়েছিলেন। এজন্য মোসাক ফনসেকা বিষয়টি নিয়ে সুইস আর্থিক প্রতিষ্ঠান ইউবিএসের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারাও দায়িত্ব নিতে অস্বীকার করে।
২০০৮ সালে মোসাক ফনসেকা এক লাখ ৬০ হাজারের বেশি অফশোর লেনদেন করে। এত গোপন কোম্পানির তথ্য বিশেষ করে তথ্যগুলোর ব্যবস্থাপনা তাদের জন্য কঠিন হয়ে পড়েছিল। আর ডোনাল্ড ট্রাম্পসহ সব মক্কেলই লেনদেনের অর্থ পেয়ে যাওয়ায় বিষয়টি নিয়ে মাথা ঘামায়নি।
পানামা পেপারস প্রথম প্রকাশ পায় ২০১৬ সালের মে মাসে। এতে এক কোটি ১৫ লাখ গোপন নথি প্রকাশিত হয়। দুই লাখ ১৪ হাজারের বেশি ভুয়া কোম্পানির নাম পাওয়া যায়। জার্মান দৈনিক জিটডয়েচ সাইতং সর্বপ্রথম নথিগুলো হাতে পায়। পরে তারা জানায়, ফাঁস হওয়া নথির সবগুলো প্রকাশ করা হবে না।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন