পাবনায় আ.লীগ নেতা হত্যার রায়: ৯ জনের ফাঁসি, ৫ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

পাবনা পৌর আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য সাইদার রহমান মালিথা হত্যাকাণ্ডে ৯ জনের ফাঁসির রায় দিয়েছেন আদালত। সেইসঙ্গে ৫ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৭ জনকে খালাস দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) রাজশাহীর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মহিদুজ্জামান এই রায় ঘোষণা করেন। রাজশাহী দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এনতাজুল হক বাবু এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, নিরাপত্তার কারণে আদালতে আসামীদের উপস্থিত করা হয়। তারা কারাগারে ছিলেন। বিচারক ভার্চুয়ালী তাদের রায় পড়ে শোনান।

ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, পাবনার হেমায়েতপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি আলাউদ্দিন মালিথা, স্বপন মালিথা, রিপন খান, আশিক মালিথা, রাকিব মালিথা, ইয়াসিন আরাফাত ইস্তি, রঞ্জু মালিথা, জনি মালিথা ও আলিফ মালিথা।

যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামীরা হলেন, দুলাল মালিথা, রুজু মালিথা, আয়নাল মালিথা, সঞ্জু মালিথা ও বেলাল হোসেন উজ্জল। এই মামলায় আরও ৭ জনকে খালাস দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, সাইদার মালিথা ও আলাউদ্দিন মালিথা দুজন ভাই। তাদের একে অপরের সঙ্গে টাকা নিয়ে ঝামেলা হয়। পরে বড় ভাই ছোট ভাইকে একটি থাপ্পড় দেন। এই বিবাদে ছোট ভাই তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।

২০২২ সালের ৯ সেপ্টেম্বর দুপুর ১টার দিকে পাবনা সদর উপজেলার হেমায়েতপুর ইউনিয়নের চর বাঙাবাড়িয়ার নজুর মোড়ে চা খাচ্ছিলেন সাইদার মালিথা (৫০)। এ সময় ৬-৭ জন সন্ত্রাসী তাকে ঘিরে ধরে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা করে। নিহত সাইদার মালিথা হেমায়েতপুরের চর প্রতাপপুর কাবলিপাড়ার মৃত হারান মালিথার ছেলে। তিনি পাবনা পৌর আওয়ামী লীগের কার্যকরী সদস্য ছিলেন।

তিনি জানান, সাইদার মালিথা ও আলাউদ্দিন মালিথার মধ্যে ব্যবসায়িক সম্পর্ক ছিল। সাইদার মালিথা আলাউদ্দিন মালিথার কাছে ৩০ লাখ টাকা পেতেন। এই টাকা নিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। তাই সাইদারকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। ২০২২ সালের ৯ সেপ্টেম্বর দুপুরে পাবনা সদর উপজেলার হেমায়েতপুর ইউনিয়নের চর বাঙাবাড়িয়ার নজুর মোড়ে চা খাচ্ছিলেন সাইদার মালিথা।

এ সময় তাকে গুলি করা হয়। সাইদার বুকে গুলি নিয়ে দৌড়ে পাশের বাঁশঝাড়ের দিকে গিয়ে পড়ে যান। সেখান থেকে তাকে ধরে নজুর মোড়ে এনে শরীরের বিভিন্ন স্থানে ১২টি ছুরিকাঘাত করা হয়। এতে তিনি ঘটনাস্থলেই মারা যান। এরপর হামলাকারীরা লাশ ফেলে রেখে চলে যান। পরে পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করা হয়। তদন্ত শেষে পুলিশ ২১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে।

আইনজীবী এন্তাজুল হক বাবু জানান, মামলার সব আসামীই কারাগারে রয়েছেন। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আদালত যে ৭ জনকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন তাদের দ্রুত সময়ের মধ্যে মুক্তি দেওয়া হবে।